Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৬ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

কওমির দাওরায়ে হাদিসকে মাস্টার্সের সমমান দেয়ায় বেফাকের শোকরিয়া মিছিল

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৩:১৫ PM
আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৩:১৫ PM

bdmorning Image Preview
রাজধানীতে বেফাকের শোকরিয়া মিছিল


বিডিমর্নিং ডেস্ক

কওমি মাদরাসার সর্বোচ্চ স্তর দাওরায়ে হাদিস (তাকমিল)-এর সনদকে মাস্টার্স ডিগ্রি (ইসলামিক স্টাডিজ ও এরাবিক)-এর সমমান দিয়ে জাতীয় সংসদে বিল পাশ করায় শোকরিয়া মিছিল করেছে বাংলাদেশ কওমী মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড (বেফাক)।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আন্তরিক অভিনন্দন ও ধন্যবাদ জানিয়ে আজ বৃহস্পতিবার বাদ আসর বায়তুল মোকাররম উত্তর গেইটে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ ও শোকরিয়া মিছিল বের করে বেফাক।

সমাবেশে বেফাক নেতৃবৃন্দ বলেন, গতকালের দিনটি বাংলাদেশের ইসলামপ্রিয় জনতা বিশেষ করে আলেম-উলামা ও কওমি মাদরাসার ছাত্র-শিক্ষকদের জন্য একটি ঐতিহাসিক দিন। ব্রিটিশ সরকার কওমি মাদরাসাকে মূল্যায়ন করেনি। পাকিস্তান সরকার মূল্যায়ন করেনি। বাংলাদেশ হওয়ার পর বিগত সরকারগুলোও আমাদের এই দাবির স্বপক্ষে বাস্তবসম্মত কোন পদক্ষেপ নেয়নি। আমরা বর্তমান সরকারের এই সাহসী ভূমিকার জন্য গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আন্তরিক অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। সেইসাথে জাতীয় সংসদের স্পিকার, শিক্ষামন্ত্রী, মন্ত্রিপরিষদ সদস্যবর্গ, প্রধানমন্ত্রীর সামরিক উপদেষ্টা, সামরিক সচিব, সচিব ও সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তা, কর্মচারিদের ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানাচ্ছি।

কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি বেফাকের সভাপতি শাইখুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফী দা.বা. এবং দেশের শীর্ষ উলামা মাশায়েখের প্রতি, যাঁদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা, সময়োপযোগী পদক্ষেপ ও হেকমতপূর্ণ মেহনতের ফলশ্রুতিতেই এই সাফল্য আজ চূড়ান্ত বাস্তবতার আলো দেখতে পেয়েছে।

বেফাকের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও আল হাইয়্যাতুল উলয়া লিল জামিয়াতিল কাওমিয়্যা বাংলাদেশের কো-চেয়ারম্যান আল্লামা আশরাফ আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বেফাকের মহাসচিব মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস, মহাপরিচালক মাওলানা যোবায়ের আহমদ চৌধুরী, সহ-সভাপতি মুফতী ফয়জুল্লাহ, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক, মজলিসে আমেলার সদস্য মাওলানা আবুল হাসানাত আমিনী, মাওলানা নুরুল আমীন, মাওলানা মুসলেহউদ্দিন রাজু, মাওলানা আবুল কাশেম, মাওলানা আলতাফ হোসাইন প্রমুখ।    

সভাপতির বক্তব্যে আল্লামা আশরাফ আলী বলেন, কওমি মাদরাসা দেশ ও জাতির কল্যাণে নিয়োজিত। এই মাদরাসা থেকে চোর, ডাকাত, জঙ্গি ও দুর্নীতিবাজ তৈরি হয়না। আদর্শবান, দেশপ্রেমিক মানুষ তৈরি হয়। তারাই দুর্নীতির বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখে। সনদের স্বীকৃতির মাধ্যমে এখন তারা দেশ গঠনে আগের তুলনায় অধিকতর ভূমিকা রাখতে পারবে।

বেফাকের মহাসচিব মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস বলেন, আন্দোলন অনেক হয়েছে। কিন্তু মূল্যায়ন হয়নি। ব্রিটিশ সরকার কওমি মাদরাসাকে মূল্যায়ন করেনি। পাকিস্তান সরকার মূল্যায়ন করেনি। বাংলাদেশ হওয়ার পর বিগত সরকারগুলোও আমাদের এই দাবির স্বপক্ষে বাস্তবসম্মত কোন পদক্ষেপ নেয়নি। আমরা বর্তমান সরকারের এই সাহসী ভূমিকার জন্য গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রীকে আন্তরিক অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।

 সহ-সভাপতি মুফতী ফয়জুল্লাহ বলেন, বাংলাদেশের উলামায়ে কেরামের রাহবার আল্লামা শাহ আহমদ শফী দা.বা.-এর একটি আবেগের কথা আমি বলতে চাই। গত রমজানে মারাত্মক অসুস্থতার কারণে একটি হাসপাতালের আইসিওতে শুয়ে তিনি বলেছিলেন, আমি কওমি সনদের জন্য আন্দোলন করেছি। কথা বলেছি। ২০১৭ সালে একটি একটি গেজেটও প্রকাশ হয়েছে। কিন্তু তা এখনো তা আইনে পরিণত হয়নি। আমি কি জীবদ্দশায় তা দেখে যেতে পারব না? আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটি চিঠি লিখব। কওমি সনদের স্বীকৃতি লাভের মধ্য দিয়ে সেই চিঠির আবেদন আজ বাস্তবতার মুখ দেখেছে। আমি প্রধানমন্ত্রীকে তার আন্তরিকতাপূর্ণ অনবদ্য অবদানের জন্য অভিনন্দন জানাই। স্পষ্ট ভাষাই বলতে চাই, এই জন্য যদি প্রধানমন্ত্রীকে কোন ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হয়, সারা বাংলাদেশের ইসলামপ্রিয় জনতা তার পাশে থাকবে।

মজলিসে আমেলার সদস্য মাওলানা আবুল হাসানাত আমিনী বলেন, যাদেরকে আমরা বন্ধু মনে করতাম তারা আমাদের সাথে প্রতারণা করেছে। আমাদের বক্তব্য স্পষ্ট যাদের দ্বারা উলামায়ে কেরামের, কওমি মাদরাসার এবং ইসলামের উপকার হবে। যে যাই ভাবুক আমরা তাদের পক্ষে থাকবো, তাদের সমর্থন দিয়ে যাবো।

সমাবেশ শেষে হাজার হাজার জনতার এক বিশাল শোকরিয়া মিছিল উত্তর গেইট থেকে শুরু হয়ে পল্টন মোড়, তোপখানা রোড হয়ে প্রেসক্লাবের সামনে গিয়ে মুনাজাতের মাধ্যমে কর্মসূচি সমাপ্ত হয়।  

Bootstrap Image Preview