জিও পলিটিক্স (ভূ-রাজনীতি) নিয়ে বক্তব্য দেয়াতেই ধর্মীয় বক্তা আবু ত্বহা মুহাম্মদ আদনানের কাল হলো কি না এমন শঙ্কা প্রকাশ করেছেন নিখোঁজ ত্বহার স্ত্রী সাবিকুন্নাহার।
ত্বহা মুহাম্মদ আদনানের সন্ধান চেয়ে সংবাদ সম্মেলনে এমন শঙ্কার কথা তুলে ধরেন তার স্ত্রী সাবিকুন্নাহার। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটের সাগর-রুনি মিলনায়তনে বুধবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে স্বামীকে ফিরিয়ে দেয়ার আবেদনও জানান তিনি।
৮ জুলাই থেকে ত্বহাসহ চারজন নিখোঁজ রয়েছেন। কোথা থেকে কীভাবে নিখোঁজ হয়েছেন এমন তথ্য দিতে পারছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও।
খুতবা ও বক্তব্যে জিও পলিটিক্স নিয়ে কথা বলতেন আবু ত্বহা মুহাম্মদ আদনান। ফিলিস্তিন-ইসরায়েল ইস্যুতে কথা বলতেন ত্বহা।
সাবিকুন্নাহার বলেন, কারো প্রতি কোনো ধরনের আমাদের অভিযোগ নেই। অনেক সময় তার প্রতি বিরুপ মন্তব্য করতেন, অনেক রকমের কথা বলতেন। এ জন্য কোনো প্রেসার এলো কিনা তা বলতে পারছি না। আবার কখনও মনে হয় তিনি জিও পলিটিক্স, পলিটিক্যাল সায়েন্স নিয়ে আলোচনা করতেন। আন্তর্জাতিক কোনো গোয়েন্দা সংস্থার কাজ কিনা তা বুঝতে পারছি না।
ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের বিষয় নিয়ে ত্বহার আলোচনার বিষয় সম্পর্কে তার স্ত্রী বলেন, আমরা সবাই মুসলিম। আর মুসলিম বলতেই সবাই আল আকসাকে ভালোবাসি। আল আকসার ব্যাপারে যাদেরই রক্তচক্ষু থাকবে তাদের প্রতি আমাদের দিল থেকে একটা ঘৃণা থাকবেই।
ত্বহার স্ত্রী সাবিকুন্নাহার বলেন, ‘যদি সত্যিকার অর্থে তিনি কোনো অপরাধে যুক্ত থাকেন, তাহলে রাষ্ট্রীয় আইনে তার বিচার হোক। আমি কিছু বলব না।’
ত্বহা কোনো দল বা সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত নন বলে দাবি করেন সাবিকুন্নাহার।
তিনি বলেন, ‘সে কোনো দলের সঙ্গে যুক্ত নন। আমি আর কিছু যুবক ছাড়া তার পাশে কেউ নেই।’
৮ জুলাই রাতে রংপুর থেকে ফেরার পথে গাবতলী এলাকা থেকে ত্বহা, তার দুই সফরসঙ্গী ও গাড়ির চালক গাড়িসহ নিখোঁজ হন।
নিখোঁজ ব্যক্তিরা হলেন, আফসানুল আদনান ওরফে আবু ত্বহা আদনান, আমির উদ্দিন, ফিরোজ আলম ও আব্দুল মুহিত আনছারী।
চারজন মানুষকে গাড়িসহ নিয়ে যাওয়া কোনো প্রাইভেট কাজ নয় বলে জানান ত্বহার স্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘রংপুর থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হওয়ার পথে বিকেল ৪টার দিকে ফোনে কথা হয়। দুটি মোটরসাইকেল তাদের অনুসরণ করছিল। তিনি (ত্বহা) বলছিলেন, দোয়া করো যেন কিছু না হয়। এর ২০-২৪ মিনিট পর ফোন করে জানান বাইকগুলো চলে গেছে।’
পড়াশোনার বিষয়ে ত্ব-হার স্ত্রী বলেন, তিনি ফিলোসফিতে (দর্শন) মাস্টার্স করেছেন এবং সালাফি মাদরাসা থেকে আরবিতে অনেক শিক্ষকের কাছে থেকে শিক্ষা গ্রহণ করেন। কিন্তু সানাফি, হাম্বলি, কওমি, দেহবন্দি কিংবা আহালে হাদিসের সঙ্গে তার কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না। তিনি সংকীর্ণ মনের ছিলেন না। হকটা (সত্য) সব জায়গা থেকে গ্রহণ করতেন এবং প্রচুর পড়াশোনা করতেন। বিশেষ করে ত্বকী উস্মানীর বইগুলো বেশি পড়তেন। এছাড়াও বিদেশি লেখকদের বইও তিনি পড়তেন। তার লেখাপড়ার ব্যাকগ্রাউন্ড ছিল জেনারেল (স্কুল-কলেজ)।’