Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৭ শনিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তাণ্ডব চালাচ্ছে হেফাজত, নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৬

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৮ মার্চ ২০২১, ০১:৫৭ PM
আপডেট: ২৮ মার্চ ২০২১, ০১:৫৭ PM

bdmorning Image Preview


হেফাজত ইসলামের ডাকা হরতালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও ব্যাংকসহ বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। রবিবার সকালে ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগ করে হেফাজতের নেতা-কর্মীরা। হেফাজতের তাণ্ডবে এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

বিক্ষুব্ধ হরতালকারীরা জেলা পরিষদ, পৌরসভা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পুলিশ লাইন, ইন্ডাস্ট্রিয়াল স্কুল, দি আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গন ও ভূমি অফিসসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর করে। ট্রেনে ইট-পাটকেল নিক্ষেপের পর ঢাকার সঙ্গে চট্টগ্রাম ও সিলেটের রেল যোগাযোগ বন্ধ রাখা হয়েছে।এসময় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বিশ্বরোড মোড়ে ব্যাপক ভাংচুর করে এবং রাস্তায় ব্যারিকেড ও অগ্নিসংযোগ করে হেফাজতের নেতা-কর্মীরা।

এছাড়াও বড়তলা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব ভাঙচুরের সময় প্রেসক্লাব সভাপতি রিয়াদ উদ্দীন জামিরের ওপর হামলা করলে তিনি আহত হন। আহত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

এদিকে হেফাজত ইসলামের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির মাওলানা সাজিদুর রহমানের নেতৃত্বে কান্দিপাড়া এলাকার জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া মাদ্রাসা প্রাঙ্গণ থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের হয়। হরতালের সমর্থনে শহরের প্রধান সড়ক টিএ রোড প্রদক্ষিণ শেষে তারা প্রেসক্লাবের সামনে এসে সমাবেশ করেন।

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন হেফাজত ইসলামের জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ও জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মুফতি মোবারক উল্লাহ, শিক্ষাসচিব মাওলানা শামসুল হক, জেলা ক্বওমী ছাত্র পরিষদের আহবায়ক মাওলানা এরশাদ প্রমূখ।

মিছিল শেষে মাওলানা সাজিদুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘গত শনিবার বিকেলে স্থানীয় সংসদ সদস্য র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী ছাত্রলীগ ও যুবলীগ ক্যাডারদের সঙ্গে নিয়ে মাদ্রাসার ছাত্রদের ওপর হামলা করেন। একজন দায়িত্বশীল নেতা হয়ে তিনি যে নিন্দনীয় কাজ করছেন আমরা এর বিচার চাই।

স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, হরতালের কারণে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের দোকানপাটসহ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এছাড়া মহাসড়ক ও আঞ্চলিক সড়কে ছোট-বড় ও দুরপাল্লার যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। ঢাকা-সিলেট ও কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়া অংশের কমপক্ষে ৪০টি স্পটে টায়ার জ্বালিয়ে সড়কে অবরোধ করেছে হেফাজতে ইসলামের কর্মী-সমর্থকরা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, শহরের টিএ রোড, ফকিরাপুল, মঠের গোড়া, কুমারশীল মোড় এলাকাসহ বিভিন্নস্থানে বৈদ্যুতিক খুঁটি ফেলে ও টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে ব্যারিকেড সৃষ্টি করা হয়েছে। তবে শহরের কুমারশীল মোড় ও পুলিশ সুপারের বাসভবন সংলগ্ন এলাকা ছাড়া আর কোথাও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দেখা যায়নি।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের প্রতিবাদে গত শনিবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সংঘর্ষ হয়। কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়ক সংলগ্ন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার নন্দনপুর গ্রামে হেফাজতে ইসলামের মিছিলে বিজিবি ও পুলিশের গুলিতে অন্তত চার জন নিহত ও ১৬ জন আহত হন।

সোনার বাংলা এক্সপ্রেস ট্রেনে হামলা: প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দক্ষিণ পৈরতলা এলাকায় ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রামগামী সোনার বাংলা এক্সপ্রেস ট্রেনে হামলা ও ভাঙচুর করেছে হেফাজতে ইসলামের কর্মী সমর্থকরা।

তারা আরও জানিয়েছেন, হামলাকারীরা ট্রেনটির চারটি বগিতে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। তারা জানালার কাঁচে ঢিল দেয়। মোটা কাঁচের ফিক্সড জানালা হওয়ায় যাত্রীরা আহত হয়নি। ট্রেনটি এখন উল্টোদিকে ব্যাক করে আশুগঞ্জের তালশহর রেল স্টেশনে আছে।

 

Bootstrap Image Preview