বিএনপিতে অনেক পার্টটাইম রাজনীতিবাদ আছেন বলে মন্তব্য করেছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
বিএনপির প্রয়াত মহাসচিব খন্দকার দেলোয়ার হোসেনকে নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে তিনি বলেন, খন্দকার দেলোয়ার হোসেন ছিলেন ফুলটাইম রাজনীতিবিদ। আমাদের অনেকই আছেন পার্টটাইম রাজনীতিবিদ, পার্টটাইম ব্যবসায়ী। কিন্তু তিনি ছিলেন ফুলটাইম রাজনীতিবিদ।
বুধবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচে এক দোয়া মাহফিলে তিনি এ মন্তব্য করেন। ভাষাসৈনিক ও বিএনপির সাবেক মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের ১০তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে এ মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
দেলোয়ারের প্রশংসা করে তিনি বলেন, নেতাকর্মী ও জনগণের সঙ্গে একটা সংযোগ তৈরি হওয়ার ব্যক্তিত্ব হলেন খোন্দকার দেলোয়ার। এমনিতে মনে হবে একরোখা, নিজের নীতির প্রশ্নে অটল, আপস করে না। আবার তার সঙ্গে মিশলে মনে হবে একবারে তুলতুলে নরম মানুষ। এক-এগারোরতে দুজন সেনা অফিসার তার বাসায় গিয়ে পরিবারসহ হত্যার হুমকি দেন। তিনি ঠাণ্ডা মাথায় হজম করেন। পর দিন খালেদা জিয়াকে বাদ দিয়ে বিএনপি গঠন করা হবে, সেখানে খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনকে স্বাক্ষর করতে হবে। খোন্দকার দেলোয়ার হাসপাতালে ভর্তি হলেন, হাসপাতাল থেকে তিনি উধাও হয়ে গেলেন। এই যে অসাধারণ কৌশল একজন রাজনীতিবিদের। খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন ছিলেন এ ধরনের ধ্রুপদি চরিত্রের একজন মানুষ।
বিএনপির এই নেতা বলেন, আমরা প্রতিদিন এ ধরনের গুণী রাজনীতিবিদদের হারাচ্ছি। খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনকে হারালাম, ব্রিগেডিয়ার হান্নান শাহকে হারিয়েছি, সর্বশেষ গতকাল হারালাম ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদকে। এ ধরনের মানুষ হারিয়ে আমরা কাদেরকে পাচ্ছি? আমরা পাচ্ছি পাপুলকে, খালেদকে, সম্রাটকে। এরা রাজনীতিবিদ? এই যে রাজনীতির অধঃপতন, এটি সরকার সৃষ্টি করেছে।
রিজভী বলেন, গুণী মানুষের কদর নেই। মুক্তিযোদ্ধারা আজ লাঞ্ছিত হচ্ছেন সরকারের কাছে। ১৭ মার্চ থেকে ২৬ মার্চ স্বাধীনতার দিবস পর্যন্ত কোনো মিছিল-মিটিং করতে দেবে না। এই গোটা সময়টাতে মানুষ র্যালি করবেন, কেউ আলোচনাসভা করবেন। কিন্তু তারা সব বন্ধ করে দিলেন। আওয়ামী লীগ যে চেতনার কথা বলে, তার সঙ্গে স্বাধীনতার কোনো সম্পর্ক নেই। সম্পর্ক নেই বলেই তো ১৭ মার্চ থেকে ২৬ মার্চ সব সভা-সমাবেশ বন্ধ করে দিয়েছে। এটিই তো মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থি কাজ। স্বাধীনতার মূল কথা হচ্ছে—মানুষের অধিকার সংরক্ষণ করা। মানুষ তা কথা বলবে নির্ভীকচিত্তে, এই নিশ্চিয়তা দেওয়া।