Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৭ শনিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

বিলুপ্ত হচ্ছে খেজুর গাছ, শীত উৎসবে নেই খেজুরের রস

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৫ ডিসেম্বর ২০১৯, ০৪:৫২ PM
আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০১৯, ০৪:৫২ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত ছবি


দিনে দিনে হারিয়ে যাচ্ছে খেজুর গাছ। রস সংগ্রহেও নেই তেমন ব্যস্ততা। শীতের শুরুতে হাতে গোনা কয়েকটি এলাকায় খেজুর গাছের রস সংগ্রহ করতে দেখা যায় গাছিদের। এক সময় গ্রামীণ জনপদের ঘরে ঘরে এই রস দিয়ে তৈরি হতো নানা ধরনের পিঠা ও পায়েস। কিন্তু ধীরে ধীরে গ্রামাঞ্চলের এসব সুস্বাদু খাবারের তালিকা থেকে ক্রমেই হারিয়ে যাচ্ছে খেজুর রস দিয়ে তৈরি খাবার।

কুড়িগ্রামের উলিপুর অঞ্চলে সুস্বাদু এই খেজুরের রস আগুনে জ্বাল দিয়ে বানানো হতো বিভিন্ন রকমের গুড়ের পাটালি ও নালি গুড়। গাছিরা প্রতিদিন বিকেলে খেজুর গাছের সাদা অংশ পরিষ্কার করে ছোট-বড় কলসি (মাটির পাত্র) রসের জন্য বেঁধে রেখে, পরদিন সকালে কাঁচা রস সংগ্রহ করে মাটির হাড়িতে নিয়ে এসে হাট-বাজারে বিক্রি করতো। সেই সময় দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে লোকজন এসে খেজুর গাছ বর্গা নিয়ে রস সংগ্রহ করে গুড় তৈরি করতো। ফলে সেসময় খেজুর গাছের কদরও ছিল বেশি।

গৌরব আর ঐতিহ্যের প্রতীক মধু বৃক্ষ এই খেজুর গাছ। গ্রামীণ জীবনের শীতের উৎসব শুরু হতো খেজুর গাছের রস দিয়ে। শীতের শুরুতেই অযন্ত আর অবহেলায় বেড়ে ওঠা খেজুর গাছের কদর বেড়ে যেত। খেজুর গাছের সুমিষ্টি রসের মৌ-মৌ ঘ্রাণে ভরে উঠতো গ্রামাঞ্চল। পুরো শীত মৌসুম চলতো সু-স্বাদু পিঠা, পায়েস আর পুলিসহ নানান রকমের পিঠা খাওয়ার আয়োজন। বাড়িতে-বাড়িতে জামাই, মেয়ে, নাতি-নাতনীদের নিয়ে চলতো শীত উৎসব। তৈরি করা হতো নানান প্রকারের পিঠা। সেসব এখন অনেকটাই স্মৃতি।

আজ বুধবার সকালে কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর উপজেলার ধামশ্রেণি ইউনিয়নের কুড়ারপাড় গ্রামের গিয়ে দেখা যায়, এক গাছি খেজুর গাছের ছাল পরিস্কার করে তাতে মাটির হাড়ি বেঁধে দিচ্ছেন।

এ সময় কথা হলে গাছি ছকিয়ত আলী (৬০) জানান, আগে আমার কদর ছিল, এখন আর কেউ ডাকে না। খেজুর গাছও তেমন নেই। আর লোকজনও তেমন খেজুর গাছের রস সংগ্রহ করতে চায় না।

তিনি আরো জানান, আগে সকাল বেলা খেজুরের রস সংগ্রহ করে বাজারে বিক্রি করতাম। আয়ও হতো ভালো। গ্রামে-গ্রামে খেজুর গাছের মাথায় মাটির হাড়ি বেঁধে রাখা দেখে মন জুড়িয়ে যেত। খেজুর গাছ দিন দিন হারিয়ে গেলে এক সময় খেজুর রসের ঐতিহ্য হারিয়ে যাবে। এজন্য সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে বেশি বেশি খেজুর গাছ রোপণ করার দাবি জানান তিনি।

 

Bootstrap Image Preview