নড়াইলের লোহাগড়ার মধুমতী নদীর কালনাঘাটে তিনটি ফেরির মধ্যে দুটি বিকল হয়ে পড়ায় নদী পারাপারে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রী। ঘাটে মাত্র ১টি ফেরি সচল থাকায় প্রতিদিন ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফেরিঘাটে আটকা পড়ছে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের খুলনা বিভাগের নড়াইল, যশোর, সাতক্ষীরা, মাগুরা ও ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলার বাস-ট্রাকসহ শত শত যানবাহন।
এতে চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন বাস যাত্রীরা, নষ্ট হচ্ছে পণ্যবাহী ট্রাকের কাঁচামাল। এমন দুর্ভোগের চিত্র কালনা ফেরিঘাটে দেখা গেলেও কর্তৃপক্ষ বিকল ফেরিগুলোর মেরামতের কার্যকর উদ্যোগ নেয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, এ ঘাটে সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) তিনটি ফেরি আছে। একটি ইউটিলিটি টাইপ-১-এর ১৬ নন্বর ফেরি। এটি ছোট, এতে ৭-৮টি গাড়ি পারাপার করা যায়। অন্যটি ইউটিলিটি টাইপ-১-এর ৪ নন্বর ফেরি। এটি বড়, এতে ১৬-১৭টি যানবাহন পারাপার করা যায়।
এ ফেরিটি ১৫ দিন ধরে বিকল হয়ে পড়ে আছে। আরেকটি ইউটিলিটি টাইপ-১-এর ৫ নন্বর ফেরি। সেটি প্রায় এক বছর আগে মেরামতের জন্য ঢাকায় নেয়া হয়েছে। এখনও তা ফিরে আসেনি। এ ঘাটের ছোট ১৬ নন্বর ফেরিটি শুধু সচল রয়েছে।
এটির তলদেশে অসংখ্য ছিদ্র। সে ছিদ্র দিয়ে পানি ওঠে। এ ফেরিতে ৭-৮টি যানবাহন পারাপার করা যায়। গত ১৫ দিন ধরে ওই ঘাটে চলাচল করছে জরাজীর্ণ এ ফেরিটি। পুরানো মেয়াদোত্তীর্ণ ইঞ্জিন জোড়াতালি দিয়ে কোনোরকমে টিকিয়ে রাখা হচ্ছে ফেরি সার্ভিস।
ফেরি সংকটের কারণে যথা সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছে না যানবাহন। তাই প্রতিদিন অসংখ্য যাত্রবাহী গাড়ি, মালবোঝাই ট্রাক, কাভার্ডভ্যান ও অন্যান্য যানবাহন উভয়পাড়ে আটকা পড়ছে। চার নম্বর ফেরিটি ঝালাই করে মেরামতের কাজ চলছে এ ঘাটেই। তবে এর পাটাতন পুরোটাই জোড়াতালি দেয়া।
এসব মেয়াদোত্তীর্ণ ফেরিতে পারাপারের সময়ে আতঙ্কে থাকেন গাড়ির যাত্রী ও ব্যবসায়ীরা। ২০১৪ সালের ১৮ জুন গভীর রাতে এ ধরনের জরাজীর্ণ একটি ফেরি পানিতে ডুবে যায়।
পরিবহন সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়,এ ফেরিঘাট দিয়ে চলাচলে ঢাকার সঙ্গে দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর বেনাপোল, যশোর, মাগুরা, নড়াইল, সাতক্ষীরা, ঝিনাইদহ এবং শিল্প ও বাণিজ্যিক শহর নওয়াপাড়াসহ এ এলাকার দূরত্ব অনেক কম।
ফেরিতে ওঠার অপেক্ষায় থাকা ট্রাকচালক হাসমত শেখ বলেন, বেনাপোল থেকে এসে ঢাকায় যেতে ৩/৪ ঘণ্টা ধরে ফেরিঘাটে অপেক্ষা করছি। কিন্তু ছোট ফেরি হওয়ার কারণে পার হতে পারছি না। এতে করে ট্রাকে থাকা কাঁচামাল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বড় ফেরিটি সচল থাকলে এমন দুর্ভোগে পড়তে হতো না।
অপেক্ষমান একটি বাসের যাত্রীরা বলেন, নদীর দুপাড়ে যানবাহনের দীর্ঘ লাইন। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষায় থেকে ফেরি সংকটের কারণে ভোগান্তিতে পড়ে থাকতে হয়। দ্রুত বিকল ফেরিটি মেরামত করলে শান্তি ফিরবে।