চা বাগান অধ্যুষিত এলাকা মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল। পৌষের মাঝামাঝি থেকেই শীতের প্রকোপ বাড়তে শুরু করেছে। দিনের বেলা সূর্যের তাপে তেমন শীত অনুভূত না হলেও সন্ধ্যা নামার সাথে সাথেই ঠাণ্ডার তীব্রতা বাড়তে শুরু করে। রাত যতই গভীর হয় ঠাণ্ডা ততই বাড়তে থাকে।
এ অবস্থা চলে পরের দিন সূর্যোদয় পর্যন্ত। এ অবস্থায় রাতে গরম কাপড়ের অভাবে শীত কষ্টে ভুগছে ছিন্নমূল মানুষেরা। বিশেষ করে রাতের বেলা দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বৃদ্ধ ও শিশুদের। শ্রীমঙ্গলে তাপমাত্রা দিন দিন কমে আসছে। বিশেষ করে চা জনপদের মানুষ তীব্র শীতের কবলে। ফলে হাড় কাঁপানো শীতে জবুথবু হয়ে পড়েছে মানুষজন।
বিশেষ করে ছিন্নমূল ও খেটে খাওয়া মানুষেরা দুর্ভোগে পড়েছেন। যতই দিন যাচ্ছে তাপমাত্রার পারদ ততই নিচের দিকে নামছে। পৌষের শেষে এসে যেন হামলে পড়েছে শীত। ভোরে ঘন কুয়াশা আর কনকনে ঠান্ডায় কাবু হয়ে পড়েছেন ছিন্নমূল মানুষগুলো। তীব্র শীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে উপজেলার মানুষ। বিশেষ করে চা বাগান অধ্যুষিত উপজেলার চা বাগানগুলোতে এবং গ্রামগুলোতে শীতের কাঁপুনি বেশি।
গত ৩১ ডিসেম্বর শ্রীমঙ্গলে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৭ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শ্রীমঙ্গলের একদিকে বাইক্কাবিল, হাইল হাওর আর অন্যদিকে চা বাগান ও পাহাড়। সবমিলিয়ে এখানকার নিম্ন আয়ের নৃ-তাত্ত্বিক গোষ্ঠীর সদস্য, চা শ্রমিক ও হাওর পাড়ের জেলেরা শীতে কাবু হয়ে গেছেন। শীতের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় জনদুর্ভোগ বাড়তে শুরু করেছে।
টাকা-পয়সার অভাবে শীতবস্ত্র কিনতে পারছেন না বাগানের অসহায় চা বাগানের শ্রমিকরা। শীতবস্ত্রের অভাবে প্রাত্যহিক ভোরে শীতের তীব্রতার জন্য কাজে যেতে অনেক কষ্ট পোহাতে হচ্ছে তাদের। চা বাগান এলাকার চা শ্রমিকেরা সকালের দিকে গাছের পাতা, লাকড়ি কুড়িয়ে আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন।
এদিকে ঋতু পরিবর্তনের এ সময়টাতে শ্রীমঙ্গলে রোগব্যাধির প্রকোপ দেখা যাচ্ছে। রোগব্যাধিতে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধবয়সী পর্যন্ত সবাই। সর্দি-কাশিসহ ঠান্ডাজনিত রোগ দেখা যাচ্ছে। তাপমাত্রা পরিবর্তনের কারণেই এসময়টাতে সর্দি-কাশির প্রকোপ বেশি দেখা যাচ্ছে। দিন দিন এখন শীতের তীব্রতা বাড়ছে। সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসার সাথেই বাড়ছে মাঝারি ধরনের শৈত প্রবাহ। ফলে সন্ধ্যা নামতেই শহর ছেড়ে ঘরে ফিরছেন লোকজন।
আগামী সপ্তাহে তাপমাত্রা আরও কমে গিয়ে শীতের তীব্রতা আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন, আবহাওয়া অধিদফতর।
শ্রীমঙ্গল আবহাওয়া অধিদফতরের আবহাওয়া সহকারী মো: জাহেদুল ইসলাম মাসুম বলেন, দিন দিন শ্রীমঙ্গলের তাপমাত্রা কমে যাচ্ছে। মাঝারি ধরনের শৈতপ্রবাহ পড়ছে এই অঞ্চলে। আগামী সপ্তাহ থেকে শীতের তীব্রতা আরও বাড়বে এবং শৈতপ্রবাহ হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে।
ছিন্নমূল মানুষ ও চা শ্রমিকসহ হতদরিদ্রদের শীতবস্ত্র বিতরণের কোন উদ্যোগ এখনও জোড়ালভাবে নেয়া হয়নি। দিন দিন শীত বাড়তে শুরু করেছে। শ্রীঘ্রই তাদের শীত নিবারণের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নিলে শিশু ও বৃদ্ধরা ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুও হতে পারে। তাই শীতার্থ মানুষের পাশে দাড়াঁনোর সংশ্লিষ্টদের প্রতি সকলের আহ্বান জানান।