Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৭ শনিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

নারী সাংবাদিকদের সুরক্ষায় সাংবাদিকতার প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ প্রয়োজন

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২৩ নভেম্বর ২০১৮, ০৩:৫২ PM
আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০১৮, ০৩:৫২ PM

bdmorning Image Preview
ছবিঃ বিডিমর্নিং


‘কর্মক্ষেত্রে বিদ্যমান বৈষম্য নিরসনের পাশাপাশি নারী সাংবাদিকদের সুরক্ষা, পেশাগত দক্ষতার উন্নয়নের জন্য গণমাধ্যম ও সাংবাদিকতার প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ ও শিল্পে রূপ দেয়া প্রয়োজন। এজন্য গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান, সাংবাদিক সংগঠন, বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা ও রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ও কার্যকর ভূমিকা রাখা জরুরি।’ 

গতকাল বৃহস্পতিবার (২২ নভেম্বর) ঢাকায় মত প্রকাশের স্বাধীনতা বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংগঠন  ‘আর্টিকেল  নাইনটিন’ আয়োজিত  ‘নারী সাংবাদিকদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা বিষয়ে পরামর্শ সভায়’ গণমাধ্যমের সম্পাদকরা এমন মন্তব্য করেন। 

বিভিন্ন গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানে নারীর নিরাপত্তা ও সুরক্ষার তুলনামূলক পরিস্থিতির চিত্র তুলে আনতে আর্টিকেল নাইনটিন  দেশের মূলধারার ছয়টি গণমাধ্যম সরেজমিন পরিদর্শন, প্রতিষ্ঠানের নীতি-নির্ধারকদের সঙ্গে মতবিনিময় এবং নিজেদের প্রতিষ্ঠানের কর্মপরিবেশ, সুযোগ-সুবিধা, প্রতিবন্ধকতা প্রভৃতি বিষয়ে কর্মরত ৪৬ জন নারী সাংবাদিকদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করে। অনুষ্ঠানে আর্টিকেল নাইনটিন এর প্রোগ্রাম অফিসার  মরিয়ম শেলি এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন। 

আর্টিকেল নাইনটিন, দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক ফারুখ ফয়সলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ইত্তেফাক সম্পাদক তাসমিমা হোসেন, প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব হাসান, কালের কণ্ঠ’র প্রধান প্রতিবেদক আজিজুল পারভেজ, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রধান প্রতিবেদক আবদুর রহিম হারমাছি, একুশে টেলিভিশনের প্রধান বার্তা সম্পাদক শেখ জাহিদুর রহমান, ঢাকা ট্রিবিউনের জ্যেষ্ঠ সহ-সম্পাদক ইশা অরোরা, নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক পারভীন সুলতানা ঝুমা এবং  বাংলাদেশ এনজিও নেটওয়ার্ক ফর রেডিও এ্যান্ড কমিউনিকেশনের (বিএনএনআরসি) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এএইচএম বজলুর রহমান।

ইত্তেফাক সম্পাদক তাসমিমা হোসেন বলেন, ‘সাংবাদিকদের স্বার্থ সুরক্ষায় দেশে অনেক আইন রয়েছে। তবে সেগুলোর যথাযথ বাস্তবায়ন হচ্ছে কি না তা ফলো আপ করা হয় না। অনেক ক্ষেত্রে পুরুষ সহকর্মীদের জেন্ডার সংবেদনশীলতার অভাব রয়েছে’।

প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব হাসান বলেন,  ‘ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রসারের নারীদের কাজের সুযোগ বেড়েছে। তবে পেশাগত মৌলিক নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়ায় নারীরা বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। এ অবস্থ নিরসনে গণমাধ্যম ব্যবস্থাপনায় শুদ্ধি অভিযান এবং প্রেসক্লাবসহ সাংবাদিক সংগঠনগুলোকে ভূমিকা রাখতে হবে’। 

এএইচএম বজলুর রহমান বলেন, ‘নারী সাংবাদিকদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে সাংবাদিকতা পেশার সামগ্রিক মানোন্নয়ন করা জরুরী’। #মি টু আন্দোলনের উদাহরণ টেনে আবদুর রহিম হারমাছি বলেন, ‘বৈষম্যহীন কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে নারীদের আরও সাহসী ভূমিকা পালন করতে হবে’।

শেখ জাহিদুর রহমান বলেন, ‘পেশা হিসেবে সাংবাদিকতা নারী-পুরুষ সবার জন্য সমান ঝুঁকিপূর্ণ। তাই সামগ্রিকভাবে সবার জন্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে’। এজন্য জাতীয় পর্যায়ে সাংবাদিকদেও জন্য প্রভিডেন্ড ফান্ড গঠনের দাবি জানান তিনি। 

আজিজুল পারভেজ বলেন, নারী সাংবাদিকদের সমস্যা সাংবাদিকতার সামগ্রিক সমস্যা থেকে বিচ্ছিন্ন নয়। সাংবাদিকতা প্রতিষ্ঠানিকতা পেলে এবং পেশাদারিত্ব গড়ে উঠলে অনেক সমস্যাই সমাধান হবে। এ জন্য চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার প্রস্তুতি নিতে হবে। এশা অরোরা বলেন, ‘বৈষম্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার পাশাপাশি নিজেদের পেশাগত দক্ষতা বাড়ানোর দিকেও নারীদের মনোযোগী হতে হবে’।

পারভীন সুলতানা ঝুমা বলেন, ‘সব গণমাধ্যমে নারীদের কমপক্ষে ৩০ শতাংশ অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। এজন্য ওয়েজবোডের্র সুনির্দিষ্ট বাস্তবায়নের দাবি জানান’।

আলোকচিত্রী শহিদুল আলমের জামিনে মুক্তিকে স্বাগত জানিয়ে ফারুখ ফয়সল বলেন, ‘নাগরিক হিসেবে যে কারও স্বাধীন মতপ্রকাশের  অধিকার রয়েছে। সে হিসেবে শহিদুল আলমকে গ্রেফতার করাই মত প্রকাশের স্বাধীনতার উপর আঘাত’। 

তিনি আরও বলেন, ‘আর্টিকেল ১৯ প্রাথমিকভাবে ছয়টি গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানে নারী সাংবাদিকদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা বিষয়ক এই কার্যক্রম পরিচালনা করেছে’। ভবিষ্যতে এই ধরনের কার্যক্রম  আরও ব্যাপকভাবে পরিচালনায় গণমাধ্যমের নীতি-নির্ধারকদের সুনির্দিষ্ট পরামর্শ প্রত্যাশা করেন। চলমান #মি টু আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে ফারুখ ফয়সল বলেন, ‘এ আন্দোলনের কারনে কর্মক্ষেত্রে নারীদের যৌন হয়রানি কমে আসবে’।

Bootstrap Image Preview