Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৬ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

চট্টগ্রামে আমনের বাম্পার ফলন

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৭ অক্টোবর ২০১৮, ০১:৪৮ PM
আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০১৮, ০১:৪৮ PM

bdmorning Image Preview


বশির আল মামুন, চট্টগ্রাম প্রতিনিধি:

অতীতের রেকর্ড ভেঙে চট্টগ্রামে এবার আমনের বাম্পান ফলন হয়েছে। এতে কৃষক পরিবারে বইছে আনন্দের বন্যা। গ্রামের ঘরে ঘরে চলছে নবান্ন উৎসবের আমেজ। 

জেলার ১৪ উপজেলার বিস্তীর্ণ জমির মাঠে মাঠে এখন পাঁকা সোনালি ধান। দিগন্ত বিস্তৃৃত মাঠের যে দিকে চোখ যায় সে দিকে শুধু ধান আর ধান। প্রতিটি উপজেলার ইউনিয়নে ব্লক সমুহের অধিকাংশ মাঠে মাঠে কাঁচা আধাপাঁকা ধান দোলা দিচ্ছে। এসময়ে কৃষকরা ব্যস্ত হয়ে পড়েছে পাঁকা ধান কেটে ঘরে তুলবেন। 

চলতি মাসের ২০ তারিখের পর শুরু হয় ধান কাটা উৎসব। ইতিমধ্যে ধান কেটে ঘরে তুলছে জেলার কৃষকরা। প্রাকৃতিক পরিবেশ অনুকুলে থাকায় মাঠের ধান ঘরে তুলতে ও সুবিধা হচ্ছে কৃষদের। এবার ধানের ফলনও আশানুরুপ। 
কৃষকদের মতে, সময়ে বৃষ্টিপাত হওয়ায় রোপা আমন ফলন খুব ভাল হয়েছে। তদুপরি এবারে তেমন বন্যা না হওয়ায় বড় ধরনের ক্ষতি হয়নি আমন ধানের। তাছাড়া উপজেলা কৃষি বিভাগের নিবিড় পরিচর্যা, সঠিক পরামর্শ কৃষকরা কাজে লাগিয়েছে। যথা সময়ে মাঠ উপযোগী করে চারা লাগানো, সার দেয়া, কিটনাশক ছিটানো, পোঁকামাকড় দমন, ক্ষেতে পাচিং পদ্ধতি প্রয়োগসহ নানা কারণেও এবার আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে বলে স্থানীয়দের অভিমত। এসব কারণে এক বছরের ব্যবধানে এখানে আমন আবাদ বেড়েছে ১৯ হাজার হেক্টরেরও বেশি জমিতে। 

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্যমতে, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ফেনী, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুরে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে আমন ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ৫ লাখ ৩৫ হাজার ৫৪৭ হেক্টর নির্ধারণ করা হয়। তবে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আবাদ হয়েছে ৫ লাখ ৫৪ হাজার ৫০০ হেক্টর, যা গত বছরের চেয়ে ১৯ হাজার ৩৭১ হেক্টর বেশি। চট্টগ্রাম অঞ্চলে এবার ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ১৩ লাখ ৬৮ হাজার ৫৯৮ টন ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছেন কৃষি কর্মকর্তারা।

কৃষি কর্মকর্তারা জানান, চট্টগ্রাম জেলায় এবছর আবাদ হয়েছে পাঁচটি উচ্চ ফলনশীল জাতের ধান। স্থানীয় জাতের মধ্যে রয়েছে কালিজিরা, বিন্নি, বালাম, রাজাশাইল, কাজলশাইল, কালামোটা, চাক্কল, গিউস এবং উফশী জাতের ধান।
জেলার মিরসরাইয়ে ও বাঁশখালীতে এখন চলছে ধান কাটার উৎসব। উপজেলা কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, এবার পুরো উপজেলায় ৭ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়েছে। প্রকৃতি অনুকূলে থাকায় ফলন ভালো হয়েছে। সীতাকুন্ডে চলতি বছরে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৭ হাজার হেক্টর। ফলন হয়েছে সাত হাজার ৩শ হেক্টর জমিতে।

অন্যদিকে, বাঁশখালীতে ১৪ ইউনিয়ন ও পৌরসভায় ৬৫০ হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়েছে। উপকূলীয় ইউনিয়নের কৃষকরা ব্রি-৪৭ ও ব্রি-৩৯ ধান চাষে সফলতা পেয়েছেন। প্রতিবছর জুলাই-আগস্ট মাসে আমন ধান চাষাবাদ শুরু হলেও আবহাওয়া তারতম্যের কারণে জুন মাসেই দুই জাতের ধান চাষে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। বোয়ালখালীতে গত পাঁচ বছর ধরে আমন ধানের ভালো ফলন পাওয়া যাচ্ছে। 

স্থানীয় কৃষকরা জানান, বোরো চাষে সেচ ও সারসহ খরচ বেশি হয়। কিন্তু আমন চাষাবাদে সেই ঝুঁকি নেই।
পটিয়া উপজেলা কৃষি বিভাগ জানায়, কৃষকরা এখন আমন চাষাবাদে আগ্রহী হয়েছেন। কয়েক বছর ধরে জিংকসমৃদ্ধ জাতের ধানে ভালো ফলন হচ্ছে। অতিবৃষ্টি ও বন্যায় আউশ রোপণ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যায়। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ ও অনুকূল পরিবেশের কারণে আমন উৎপাদনে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাচ্ছে।

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মনিটরিং ও মূল্যায়ন কর্মকর্তা শামিম আহমেদ হেলাল জানান, প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় সরকারের পক্ষ থেকে কৃষকদের ৮২৭ কোটি ১৭ লাখ টাকা দেয়া হয়েছে। আমন চাষাবাদে কৃষকদের জন্য বীজ, সার ও কৃষি উপকরণ সহজে পাওয়া যাচ্ছে। এক বছরের ব্যবধানে প্রায় ২০ হাজার হেক্টর জমিতে আমনের আবাদ বেড়েছে।
 

Bootstrap Image Preview