প্রাণীজগতের বহু দ্বারই এখনও বন্ধ রয়েছে মানুষের জন্য। এই পৃথিবীতে রয়েছে এমন সব আশ্চর্য প্রাণী, যাদের অস্তিত্ব না জানা পর্যন্ত অবিশ্বাস্য মনে হতো। সেই তালিকায় সাম্প্রতিক সংযোজন এক অদ্ভুত মাছ। আপাতত তার নাম রাখা হয়েছে 'আটাকামা স্নেইল ফিশ'। এ এমন এক মাছ যার শরীর অদ্ভুত স্বচ্ছ। শরীরে কাঁটার সংখ্যাও নগণ্য। হাতে নিলেই নাকি গলে যায়!
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম 'কোয়ার্টজ' তাদের একটি প্রতিবেদনে জানিয়েছে, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ২৬ হাজার ফুট নীচে বসবাস করা আটাকামা স্নেইল ফিশ দেখতে স্বচ্ছ। এটি খুবই নরম মাছ, যা বেঁচে থাকে নিজের দাঁত আর কানের ভিতরে থাকা হাড়ের মাধ্যমে দেহের ভারসাম্য রক্ষা করে।
নিউ ক্যাসল ইউনিভার্সিটি আয়োজিত ২০১৮ চ্যালেঞ্জার কনফারেন্সে বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক থমাস লিনলে জানিয়েছেন, আটাকামা স্নেইল ফিশ নীল, গোলাপি ও পার্পল রঙের হয়ে থাকে। পৃথিবীর গভীর তলদেশের পানি উপরিভাগের চেয়ে ঠাণ্ডা থাকায় সেখানে মাছগুলো সাধারণভাবে চলাফেরা করতে পারে। তবে সমুদ্রের উপরিভাগের পানি নিম্নভাগের তুলনায় গরম হওয়ায় মাছগুলোকে সমুদ্রপৃষ্ঠে আনা হলে সেখানকার তাপমাত্রায় গলে যায়।
থমাস লিনলে বলেছেন, ‘মাছগুলোর প্রতিবন্ধকতার কারণ এদের শরীর। এরা এত বেশি নরম ও স্বচ্ছ, মানুষের হাতের তাপমাত্রায় এরা গলে যেতে পারে।’
নিউ ক্যাসল ইউনিভার্সিটির ওই কনফারেন্সে আরও জানানো হয়েছে, সারা পৃথিবীতে ৪শ'রও বেশি স্নেইল ফিশের প্রজাতি রয়েছে। কিন্তু এই আটাকামা স্নেইল ফিশ অন্যান্যগুলোর থেকে আলাদা। এদের শরীরের কাঁটার সংখ্যাও কম। এরা স্বল্প সময় বেঁচে থাকতে পারে। মরে যাওয়ার পর যখন এদের শরীর গলে যায়, তখন শরীরের অংশগুলো দেখা যায় না।
শুধু তাই নয় একই গোত্রের মেরিয়ানাস স্নেইল ফিশ নামে আরেক ধরনের মাছ আছে যাদের বাস ২৬,৬০০ ফুট নিচে। এদের শরীরের প্রকৃতিও প্রায় একই রকম। তবে গবেষকরা এই মাছটির ব্যাপারে তেমন কোনো তথ্য দেননি।
আপাতত বিজ্ঞানীরা একটি মাছকে আলাদা করে সংরক্ষণ করেছেন। সেটিকে বাঁচানো না গেলেও, তার শরীরকে গলে যাওয়া থেকে আটকানো সম্ভব হয়েছে। মাছটিকে নিয়ে এখন পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছেন গবেষকরা। যাতে এর শারিরীক গঠন সম্পর্কে আরও চমকপ্রদ কোনো তথ্য পাওয়া যায়।