এম আর ফারজানা
এম আর ফারজানা নিউ জার্সি (যুক্তরাষ্ট্র) থেকে-
বাবা তুমি কোথায় যাও? এইত বাবা, একটু হাসপাতালে। চলে আসবো দুইদিন পর। তুমি কিন্তু মায়ের কথা শুনবে। দুষ্টুমি করবে না। অবুঝ বাচ্চাটি অভিমান নিয়ে বাবার দিকে তাকিয়ে বলে, তুমি না বলেছিলে আমাকে খেলনা কিনে দেবে। কই দিলে নাতো? আচ্ছা আমি ফিরে এলেই অবশ্যই অবশ্যই কিনে দেবো। বাবার আর ফিরে আসা হয়নি হাসপাতাল থেকে। করোনাভাইরাস তাকে নিয়ে গেছে ওপারে। যেখান থেকে মানুষ আর ফেরে না। বাচ্চাটি, আর কখনোই বাবার হাত ধরে বাইরে যাবে না,বাবার সাথে খেলবে না ধাঁধার খেলা। বাবার ও আর খেলায় ইচ্ছে করে হেরে যাওয়া হবে না। বাচ্চটির কাছে। এগুলো এখন শুধুই স্মৃতি হয়ে থাকবে। বাচ্চাটি বড় হবে একরাশ অভিমান নিয়ে, বাবা প্রতিশ্রুতি দিয়ে কেনো ফিরে এলো না। তার জানা হবে না বাবার হিসেব করা চলা আর্থিক সামর্থ্যের কথা। এমন শত শত পরিবার থেকে বাবারা প্রতিদিন হারিয়ে যাচ্ছে করোনাভাইরাসের কারণে।
কিছুদিন আগে, নিউ ইয়র্কে তৃষা তার তিন বাচ্চাকে ফেলে চলে গেছে পৃথিবীর ওপারে। ছোট বাচ্চাটার বয়স মাত্র ১৪ মাস। সে যাকে দেখে তার মাঝেই মাকে খোঁজে। এই বাচ্চাগুলো কোন দিন আর মায়ের কাছে অবদার করে বলবে না, আমাকে এটা কিনে দাও। মায়ের আঁচল ধরে বলবে না ,আজ আর স্কুলে যাবো না। মা ধমকের সুরে বলবে না, না বাবা স্কুলে যেতেই হবে। ফিরে এলে পার্কে নিয়ে যাবো, বার্গার কিং এ নিয়ে যাবো। এমন কত মা হারিয়ে যাচ্ছে এই ভাইরাসের কারনে। ভাবলেই মনে হয় জীবন কত তুচ্ছ।