ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি করপোরেশনে ১৮টি ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র শনাক্ত করেছে নির্বাচন কমিশন। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে এসব কেন্দ্রে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বুধবার (২২ জানুয়ারি) বিকালে নির্বাচন কমিশনের আইন-শৃঙ্খলা বিষয়ক সভা শেষে এ তথ্য জানান নির্বাচন কমিশনের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. আলমগীর।
ইসি সচিব বলেন, দুই সিটিতে বিভিন্ন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ৪০ হাজার সদস্য নিরাপত্তা দেবেন। সাধারণ কেন্দ্রে ১৬ জন ও গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ১৮ জন সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন।
আলমগীর জানান, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর প্রস্তাব মেনে নির্বাচনের দিন কেউ ব্যক্তিগত গাড়ি চালাতে পারবে না।
ইসি সচিব বলেন, লেমিনেটেড পোস্টার নতুন করে কোনওভাবেই ব্যবহার করা যাবে না। আদালতের নির্দেশনা মেনে ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
নিরাপত্তা প্রসঙ্গে পুলিশ মহাপরিদর্শক ড. জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, এখন পর্যন্ত কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাচ্ছে ভোটার এবং প্রার্থীদের আস্থা অর্জনের জন্য। শেষ পর্যন্ত এ পরিস্থিতি বজায় থাকবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা বলেন, কোনও রকম কিছুতেই অনিয়ম বরদাশত করা হবে না। এমনকি আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীকেও ছাড় দেয়া হবে না।
আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের এরই মধ্যো সতর্ক করে দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে কোনও প্রকার অবহেলা সহ্য করা হবে না।
আগামী ১ ফেব্রুয়ারি (শনিবার) অনুষ্ঠিতব্য ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বৈঠকে সিইসি এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।
আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং ভোটের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের দিকে ইঙ্গিত করে সিইসি বলেন, ইসি কোনও অনিয়ম ও অবহেলা নিয়ে কোনও অভিযোগ শুনতে চায় না।
তিনি জানান, নির্বাচনি এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় ভোটের দুই দিন আগে থেকে মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স মোতায়েন থাকবে।
দেশ ডিজিটাল হলেও নির্বাচনি প্রচারণায় ব্যবহার হচ্ছে সেই পুরোনো পদ্ধতি। তাই কাগুজে পোস্টারে সয়লাব গোটা শহর। মাইকিংয়ের উচ্চশব্দে অতিষ্ঠ জনজীবন। আর এর সঙ্গে মারাত্মক পরিবেশ দূষণের ঝুঁকি তৈরি করছে পলিথিনে মোড়া পোস্টার।
ঢাকার আকাশ এখন পোস্টারে ঢাকা। অলিগলি থেকে প্রধান সড়ক নির্বাচনি পোস্টারে সয়লাব।
সিটি করপোরেশন ঘিরে এখন কতো লাখ কিংবা কতো কোটি পোস্টার ঝুলছে, তার হিসাব করা কঠিন। তবে সহজেই অনুমান করা যায়, অগোছালো এই শহটারটাকে আরো কতটা কুৎসিত করে তুলেছে পুরোনো এই প্রচার পদ্ধতি।
নগরবাসী বলছে, যখন ফেসবুক, ইউটিউব তথা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম পৌঁছে গেছে প্রত্যন্ত অঞ্চলেও, তখন নগরের নির্বাচনি প্রচারণায় কাগুজে পোস্টারের ব্যবহার অর্থহীন।
বৃষ্টি ও কুয়াশা থেকে রক্ষা করতে এবার পোস্টারগুলো পলিথিন দিয়ে মুড়িয়ে দিয়েছেন প্রার্থীরা। কেউ আবার লেমিনেটিংও করেছেন। পরিবেশবাদীরা বলছেন, নির্বাচনের পর পলিথিনের পোস্টারগুলো হয়ে উঠবে নগরীর জলাবদ্ধতা ও পরিবেশ দূষণের মারাত্মক কারণ।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকের মতে, মান্ধাতা আমলের যে প্রচারণা পদ্ধতি, তা আদতে ভোটারদের সমর্থন আদায়ে ব্যর্থ হচ্ছে। তাই, সময় এসেছে এই ব্যবস্থাকে বদলে ফেলার। এসব ক্ষতিকর সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে এসে, নির্বাচনি প্রচার ব্যবস্থাকে ডিজিটাল করতে হবে।
কেবল অপসারণই যথেষ্ট নয়, পরিবেশবান্ধব উপায়ে পলিথিনের পোস্টারগুলোকে রিসাইকেল করার পরামর্শ পরিবেশবাদীদের।
এই প্রসঙ্গে ইসি সচিব জানান, লেমিনেটেড পোস্টার নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এখন থেকে নতুন করে কেউ কোনওভাবেই লেমিনেটেড পোস্টার ব্যবহার করতে পারবেন না। আদালতের নির্দেশনা মেনে ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।