রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানা হেফাজতে আবু বক্কর সিদ্দিক বাবু (৪৫) নামে চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনের (এফডিসি) এক ফ্লোর ইনচার্জের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (১৮ জানুয়ারি) দিবাগত রাত ৪টায় তার মৃত্যু হয় বলে নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সহকারী কমিশনার (তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল) মইনুল ইসলাম।
সোমবার দুপুরে মৃতের ডিভোর্সপ্রাপ্ত স্ত্রী আলেয়া ফেরদৌসী ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এসে লাশ সনাক্ত করেন। নিহতের বাড়ি নোয়াখালী জেলার সেনবাগ উপজেলার বালিয়াকান্দি গ্রামে। বর্তমানে তিনি রাজধানীর মোহাম্মদপুরের চাঁদ উদ্যান এলাকায় দুই সন্তান নিয়ে বসবাস করতেন।
এর আগে শনিবার সন্ধ্যার পর পুলিশ তাকে আটক করে নিয়ে যায়। পুলিশ জানায়,ক নারী আবু বক্করের বিরুদ্ধে তথ্য প্রযুক্তি আইনে থানায় অভিযোগ করায় তাকে আটক করা হয়। পরে তিনি আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। থানার পরিদর্শক ইফতেখার ইসলাম অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের শ্বশুর আব্দুল আলী বলেন, "যে নারী এই মামলার বাদি ওই তার সাথে বাবুর অবৈধ সম্পর্ক ছিল। এমনকি, তাকে ৫ লাখ টাকা ধারও দিয়েছিল। এই টাকা ফেরত চাওয়াতেই বাবুকে ফাঁসিয়েছেন ওই নারী। এই কারণেই আমার মেয়ের সাথে বাবুর ডিভোর্স হয়।"
তিনি আরও জানান, "বাবুকে এফডিসি'র চাকরিটাও আমিই পাইয়ে দিয়েছিলাম। চলচ্চিত্রাভিনেতা ওয়াসিমুল বারী রাজীব এফডিসি'র দায়িত্বে থাকাকালীন এই চাকরিটা পেয়েছিল সে। শুধুমাত্র আমাদের নাতিদের জন্য বাবুর সাথে এখনও সম্পর্ক রেখেছিলাম।"
এদিকে, পুলিশি নির্যাতনের কারণেই বাবু আত্মহত্যা করেছেন বলে দাবি করেছেন বাবুর সাবেক স্ত্রী আলেয়া ফেরদৌসী। তিনি বলেন, "ওনার (বাবু) শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। পুলিশ যদি অত্যাচার না করে তাহলে উনি শুধু শুধু আত্মহত্যা করবেন কেন? পুলিশের অত্যাচার সইতে না পেরেই তিনি আত্মহত্যা করেছেন।"
তবে, পুলিশি নির্যাতনের কথা অস্বীকার করে সহকারী কমিশনার মইনুল ইসলাম বলেন, "নিহত বাবু এক নারীকে ফেসবুকে হত্যার হুমকি দিয়েছেন। এমনকি তার শ্লীলতাহানীর চেষ্টাও করেছেন। এসব ঘটনায় ওই নারী তথ্য প্রযুক্তি আইনে একটি মামলা করেন। এই মামলায় বাবুকে শনিবার গ্রেফতার করা হয়। পরে রাতে সে আত্মহত্যা করে। সিসিটিভি ফুটেজে বাবুর আত্মহত্যার চিত্রও রয়েছে। পুলিশের নির্যাতনের বিষয়টি মিথ্যা।"