Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৭ শনিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

কোরবানির ঈদ সামনে রেখে ঊর্ধ্বমুখী মসলার বাজার

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২ জুলাই ২০১৯, ১০:৪১ AM
আপডেট: ১২ জুলাই ২০১৯, ১০:৪৩ AM

bdmorning Image Preview


কোরবানির ঈদ এলেই মসলার কদর বাড়ে। এই ফাঁকে অসাধু ব্যবসায়ীরা কারসাজি করে আগে থেকেই বাড়িয়ে দিয়েছে পেঁয়াজ, আদা, রসুন ও এলাচসহ বিভিন্ন ধরনের মসলার দাম।

বিষয়টি টের পেয়ে ঈদের প্রায় এক মাস আগেই মাঠে সক্রিয় হয়ে উঠছে সরকারের পাঁচটি সংস্থা। মূল্য যাতে নাগালের বাইরে যেতে না পেরে সে জন্য সংস্থার সদস্যরা বাজার মনিটরিং আরও জোরদার করতে যাচ্ছে। টিমের সদস্যরা দেশের মোকাম, পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে তদারকি করবে। অনিয়ম পেলেই দায়ী ব্যক্তিদের কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হবে।

বৃহস্পতিবার সরকারি সংস্থা ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)-এর দৈনিক বাজারমূল্য পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, এক মাস আগে দেশি পেঁয়াজের দাম ২৮-৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও বৃহস্পতিবার বিক্রি হয়েছে ৪৫-৫০ টাকা। আমদানি করা পেঁয়াজ এক মাস আগে ৩০-৩৫ টাকা বিক্রি হলেও বৃহস্পতিবার বিক্রি হয়েছে ৪০-৪৫ টাকা কেজি। আদার দাম এক মাস আগে ১৪০-১৮০ টাকা বিক্রি হলেও বৃহস্পতিবার বিক্রি হয়েছে ১৪০-২০০ টাকা। দেশি রসুন বিক্রি হয়েছে ১১০-১২০ টাকা কেজি, এক মাস আগে ছিল ৭০-১০০ টাকা। আমদানি করা রসুন বিক্রি হয়েছে ১৪০-১৬০ টাকা, এক মাস অগে ছিল ১২০-১৩০ টাকা। এলাচের দাম উঠেছে ২৮০০ টাকা কেজি, এক মাস আগে ছিল ২৬০০ টাকা।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের উপপরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার বলেন, অন্য বছরের মতো এবার যাতে কোনোভাবেই পণ্যের দাম না বাড়ে, সেদিকে লক্ষ রাখতে মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে। তাই অধিদফতরের পক্ষ থেকে ঈদ ঘিরে বিশেষভাবে মনিটরিং সেল নামানো হবে। যাতে অসাধু ব্যবসায়ীরা পণ্যের দাম বাড়াতে না পারে। এ ছাড়া দেশের কোরবানির হাটে বিশেষ নজরদারি করা হবে। ভোক্তা যাতে প্রতারিত না হন, এ জন্য সার্বিক বিষয়টি দেখা হবে। যারা অনৈতিক কাজ করবে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আর্থিক জরিমানাসহ প্রয়োজনে প্রতিষ্ঠান সিলগালা করে দেয়া হবে। র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম যুগান্তরকে বলেন, আমরা অভিযান শুরু করেছি। আগামীতে জোরদার করা হবে। কোরবানির ঈদ ঘিরেও বিশেষ অভিযান চলবে। এ ছাড়া ঈদকে ঘিরে চাহিদা বাড়ার সুযোগে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী মেয়াদোত্তীর্ণ ও ভেজাল খাবার বিক্রি করে। ভেজাল খাবার পেলেই কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

কনজুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, কোরবানির ঈদ আসার আগেই মসলাসহ সব ধরনের খাদ্যপণ্যের বাড়তি চাহিদা সৃষ্টি হয়। এ সুযোগে অসাধু ব্যবসায়ীরা পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়। তবে এবার দেশে পণ্যের পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকায় দাম বৃদ্ধির সুযোগ নেই। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে হবে। এ ছাড়া খাদ্যপণ্য ও কোরবানির পশু বাজারে আনতে ব্যবসায়ীরা যেন চাঁদাবাজির শিকার না হন, সেদিকে নজর বাড়াতে হবে। রাখতে হবে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থাও।

এদিকে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর সূত্র জানায়, কোরবানির ঈদে পণ্যমূল্য স্থিতিশীল রাখতে অধিদফতরের পক্ষ থেকে বড় পাইকারি বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে অভিযান চালানোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এরই মধ্যে অধিদফতরের বিভাগীয় কার্যালয়ের বাজার মনিটরিং টিমের সদস্যরা কাজও শুরু করেছে। দু-এক দিনের মধ্যে রাজধানীর পাইকারি বাজারে অভিযান শুরু হবে।

এ বিষয়ে মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার বলেন, অধিদফতরের পক্ষ থেকে বাজারে অভিযান চালানো হচ্ছে। ঈদের আগ পর্যন্ত চলবে। সঙ্গে থাকবেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

এ ছাড়া নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার তৈরি করলে বা ভেজাল দিলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। জানতে চাইলে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন বলেন, বাজারে একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী রয়েছেন। যারা শুধু ফাঁকফোকর খুঁজে বেড়ায়। বিভিন্ন অজুহাতে তারা অতি মুনাফা করতে মরিয়া হয়ে ওঠে।

এসব অসাধু ব্যবসায়ীর দায়িত্ব আমরা কখনোই নেব না। রাজধানীর কারওয়ান বাজারে নিত্যপণ্য কিনতে আসা মো. জাহাঙ্গীর আলম যুগান্তরকে বলেন, কোরবানির ঈদ আসার এক মাস আগেই যে যেভাবে পারছে মসলার দাম বাড়িয়ে দিয়েছে।

Bootstrap Image Preview