Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৭ শনিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

বাংলাদেশ যেন এক মৃত্যুঘাটি

সুলতান মাহমুদ আরিফ
প্রকাশিত: ০৫ এপ্রিল ২০১৯, ০২:৪৪ PM
আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০১৯, ০২:৪৪ PM

bdmorning Image Preview


বাংলাদেশে এখন অস্বাভাবিক মৃত্যু যেন স্বাভাবিক এক বিষয়। বাংলাদেশের মানুষ অস্বাভাবিক মৃত্যুর খবর শুনতে এখন আর আঁৎকে উঠে না। পত্রিকার পাতা যেন এখন রক্তের সমারোহ। পত্রিকার পাতা উল্টালেই চোখে পড়ে ভয়াবহ অস্বাভাবিক মৃত্যুর সংবাদ।

বাংলাদেশে অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘটার প্রধান কারণ হিসাবে দেখা যায় ‘সড়ক’। বাংলাদেশে অস্বাভাবিক মৃত্যুর ৭১ শতাংশ সংঘটিত হয় সড়ক দুর্ঘটনায়। অর্থ্যাৎ ১০০ লোকের অস্বাভাবিক মৃত্যু হওয়ার পিছনে প্রাই ৭১ জন মারা যায় সড়ক দুর্ঘনায়।

দ্বিতীয় পর্যায়ে আছে ‘নৌপথ’। একটা জরিপে দেখা যায় ২০১৮ সালের সাতটি দুর্ঘটনার প্রাই ১৮ শতাংশ ই মারা গিয়েছে ‘নৌপথে।

তৃতীয় পর্যায়ে আছে ’আগুন’। ২০১৮ সালের জরিপে দেখা যায়, শতকরা ২ জন আগুনে পুড়ে মারা যায়।  ফেব্রুয়ারি মাসে চুড়িহাট্টায় ৭১ জন। সম্প্রতি বনানী এফআর টাওয়ারের অগ্রিদুর্ঘটনায় মারা যান আরো ২৫ জন। ২০১৯ সালের প্রথম তিন মাসেই আগুনে পুড়ে মারা যান ৯৬ জন লোক।

ফায়ার সার্ভিস এবং সিভিল ডিফেন্স এর তথ্যমথে ২০১৮ সালেই ভিবিন্ন দুর্ঘটনায় মারা যান, ২ হাজার ৩৫০ জন। বেসরকারি তথ্যমতে এর হার কয়েকগুণ বেশি।

ফায়ার সার্ভিস এবং সিভিল ডিফেন্স এর তথ্যমতে ২০১৮ সালে শুধু সড়কেই মারা গেছে ১ হাজার ৬৯ জন। ২০১৭ সালে এর হার ছিল ২ হাজার ২১৭ জন। সাম্প্রতিক আলোচিত ’শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট’ এর সেই সড়ক দুর্ঘটনায় ছাত্রদের ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ আন্দোলনের তোপরে মুখে সরকার অনেকগুলো আইন করতে বাধ্য হয়। কিন্তু তা শুধু আইনের খাতায় বন্দি হয়ে আছে বলেই আবরারের মত মেধাবী ছাত্ররা অকাতরে হারিয়ে যাচ্ছে মৃত্যু নামক ভয়ংকর বাস চাপায়।সরকার কর্তৃক সড়ক আইনগুলো আজ আদালতের খাতা থেকে বের করে সড়কে কার্যকর সবার একান্ত দাবি।

নৌপথ: গত চার বছরে নৌপথেই মারা যায় ১ হাজার ৯৫৯ জন। ২০১৮ সালে এর সংখ্যা ছিলো ৪২৬ জন। ২০১৭ সালে ছিল ৬৪৪ জন। ২০১৬ সালে এই মৃত্যুর সংখ্যা ছিলো ৪১০ জন। ২০১৫ি তে মারা যায় ৪৭৯ জন।আর ইহার সংখ্যা অগ্নির তুলনায় কয়েকগুণ বেশ।

অগ্নিদুর্ঘটনা: অগ্নি যেন বর্তমানে বাংলাদেশে এক জান্নামময় অবস্থা। ২০১৮ সালে অগ্নি দুর্ঘটনায় মারা যান ১৩০ জন।২০১৭ সালে এই মৃত্যুর সংখ্য ছিলো ৪৫ জন। ২০১৬ সালে ছিলো ৫২ জন এবং ২০১৫ তে ৬৮ জন। গত দশ বছরে এর সংখ্যা ১৫৯০ জন।

এছাড়াও পাহাড়ধ্বসসহ বিভিন্ন অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘটেই যাচ্ছে বাংলাদেশে। প্রাকৃতিক দুর্যেোগ মোকাবেলা করা হয়তো সম্ভভ না। তবে এর ক্ষয়-ক্ষতি থেকে বাঁচানোর কৃত্তিমতা গড়ে তোলা সম্ভব বলে আমি মনে করি। এই লেখাটি যখন আমি কম্পিউটারের বাটন টিপে টিপে লেখতেছি; চোখ যখন লেখার বানানের দিকে মন তখন বার বার ছুড়ে যাচ্ছে বনানীর সেই এফআর টাওয়ারের লাফিয়ে পড়া মানুষগুলোের ‍দিকে।বার বার মনে পড়ছে সেই ভয়াবহ দুর্ঘটনার কথা। বড়ই আফসোস বাংলাদেশে আজ পর্যন্ত আগুন নিবানো কিংবা ২২ তলা থেকে জীবন্ত কোন ব্যক্তিকে উদ্ধার করার ডিজিটাল মেশিন আবিষ্কার করতে পারল না। অথচ বাংলাদেশন ডিজিটাল হওয়ার দিক দিয়ে আজ বিশ্ব প্রতিযোগিতায় এগিয়ে যাচ্ছ।

১ লাখ ৪৭ হাজার ৫৭০ বর্গ কিলোমিটার মাটি যদি শূণ্য পড়ে থাকে; তাহলে এই শূন্য মাটি নিয়ে দেশ ডিজিটাল করার কি স্বাধ আস্বাধন করা যাবে আমার বুজে আসে না। মানুষের জীবন বাঁচানোর জন্য আজ ডিজিটাল পদ্ধতি আবিষ্কার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রাথমিক এবং প্রধান দাবি। মানুষের দুর্ঘটনায় মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচানোর কৌশল হোক ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রথম প্রত্যয়।

লেখক: শিক্ষার্থী, সরকারি ‍তিতুমীর কলেজ, ঢাকা।

Bootstrap Image Preview