Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৭ শনিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

চলে গেলেন স্বাধীনতা যুদ্ধের বীরপ্রতীক তারামন বিবি

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০১ ডিসেম্বর ২০১৮, ১০:১২ AM
আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০১৮, ১০:২৩ AM

bdmorning Image Preview


বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের বীরপ্রতীক নারী মুক্তিযোদ্ধা তারামন বিবি আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)।মৃত্যুকালে তার বয়স ছিল ৬২ বছর।

শুক্রবার (৩০ নভেম্বর) দিবাগত রাত দেড়টার দিকে কুড়িগ্রামে নিজ বাড়িতে ইন্তেকাল করেন তিনি। মৃত্যুকালে তিনি স্বামী, এক ছেলে ও এক মেয়ে রেখে যান।

তারামন বিবি দীর্ঘদিন ধরে ফুসফুস, ডায়েবেটিস আর শ্বাসকষ্ট রোগে ভুগছিলেন। গত কয়েকদিন ধরে তিনি নিজে নিজে হাঁটা চলা ভালোভাবে করতে পারছিলেন না বলে জানান স্বজনরা।

আজ দুপুর ২টায় তাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় রাজিবপুর উপজেলার কাচারীপাড়া তালতলা কবরস্থানে দাফন করা হবে। গার্ড অফ অর্নারে অংশ নেবেন কুড়িগ্রামের জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীন, পুলিশ সুপার মেহেদুল করিমসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক-পেশাজীবী ও রাজনৈতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

গত বছর নভেম্বরে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে, তাকে ঢাকা সিএমএইচে ভর্তি করা হয়। অবশ্য কদিন পরেই তিনি ফিরে যান নিজ বাড়িতে।

বীর প্রতীক তারামন বিবি কুড়িগ্রাম জেলার চর রাজিবপুর উপজেলার শংকর মাধবপুর গ্রামে ১৯৫৭ সালে জন্মগ্রহন করেন। বাবার নাম আবদুস সোহবান এবং মায়ের নাম কুলসুম বিবি। তার স্বামীর নাম আবদুল মজিদ। তাদের এক ছেলে এক মেয়ে।

১৯৭১ সালে তারামন বিবি ১১নং সেক্টরে যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা করেন। তখন ১১নং সেক্টরের নেতৃত্বে ছিলেন সেক্টর কমান্ডার আবু তাহের। মুহিব হাবিলদার নামে এক মুক্তিযোদ্ধা তারামন বিবিকে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়ার জন্য উৎসাহিত করেন।

তিনি তারামনকে ক্যাম্পে রান্নাবান্নার জন্য নিয়ে আসেন। তখন তারামনের বয়স ছিল মাত্র ১৩ কিংবা ১৪ বছর। কিন্তু পরবর্তীতে তারামনের সাহস ও শক্তির পরিচয় পেয়ে মুহিব হাবিলদার তাকে অস্ত্র চালনা শেখান।

একদিন দুপুরে খাবারের সময় তারামন ও তার সহযোদ্ধারা জানতে পারেন পাকবাহিনীর একটি গানবোট নিয়ে তাদের দিকে আসছে। তারামন তার সহযোদ্ধাদের সঙ্গে যুদ্ধে অংশ নেন এবং শত্রুদের পরাস্ত করতে সক্ষম হন।

এরপর তারামন অনেক সম্মুখ যুদ্ধে পুরুষ মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে অংশ নেন। অনেকবার তাদের ক্যাম্প পাকবাহিনী আক্রমণ করেছে, তবে ভাগ্যের জোরে তিনি প্রতিবার বেঁচে যান।

যুদ্ধ শেষে ১৯৭৩ সালে তৎকালিন সরকার মুক্তিযুদ্ধে তারামন বিবিকে তার সাহসিকতা ও বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য “বীর প্রতীক” উপাধিতে ভূষিত করেন। কিন্তু ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত তাকে খুঁজে বের করা সম্ভব হয়নি।

পরে একই সালে ময়মনসিংহের একজন গবেষক প্রথম তাকে খুঁজে বের করেন। নারী সংগঠনগুলো তাকে ঢাকায় নিয়ে আসেন। সেই সময় তাকে নিয়ে পত্রিকায় প্রচুর লেখালেখি হয়।

অবশেষে ১৯৯৫ সালের ১৯শে ডিসেম্বর তৎকালিন সরকার এক অনাড়ম্বর পরিবেশে আনুষ্ঠানিকভাবে তারামন বিবির হাতে বীরত্বের পুরস্কার তুলে দেন।

Bootstrap Image Preview