Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৬ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

সালথায় ১০ বছরে মৎস্য খাতে ব্যাপক উন্নয়ন

আবু নাসের হুসাইন, সালথা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ১৯ নভেম্বর ২০১৮, ০৪:৩৬ PM
আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০১৮, ০৪:৩৬ PM

bdmorning Image Preview


স্বাধীনতার ৪৬ বছর পরে বাংলাদেশ আজ মাছ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ। আওয়ামী লীগ সরকারের ১০ বছরে ফরিদপুরের সালথায় মৎস্য সেক্টরে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। উপজেলা মৎস্যসম্পদ উন্নয়নে অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা পালন করছে। উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে মাছ উৎপাদনে আশানুরুপ উন্নয়ন ঘটেছে।

উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, আ.লীগ সরকারের ১০ বছরে ২০০৯ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত বৃহত্তর ফরিদপুর জেলায় মৎস্য উন্নয়ন প্রকল্পের অধীনে এই উপজেলায় ১০০ জন দরিদ্র জেলের মাঝে বিনামূল্যে ছাগল বিতরণ করা হয়েছে। বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও সেচ প্রকল্প এলাকায় ও অন্যান্য জলাশয়ে সমন্বিত মৎস্য ও প্রানিসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্প ৪র্থ পর্যায়ের অধীনে ৪ জন সুফলভোগীকে ছাগল (কিস্তিতে পরিশোধযোগ্য) প্রদান করা হয়েছে।

এ ছাড়া মৎস্য উন্নয়ন প্রকল্পের অধীনে ভাওয়াল ত্রিমোহনী হতে সালথা হাটব্রিজ পর্যন্ত খাল পুনঃখনন করা হয়েছে। জেলায় মৎস্য উন্নয়ন প্রকল্পের অধীনে বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও সেচ প্রকল্প এলাকায় ও অন্যান্য জলাশয়ে সমন্বিত মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্প ৪র্থ পর্যায়ে ৪টি পুকুর পুনঃখনন করা হয়েছে।

এ ছাড়া রাজস্ব খাতের অধীনে সালথা উপজেলার বিভিন্ন খাল ও বিলে এ পর্যন্ত মোট ৫৩২০.৭০ কেজি (২,৪২,৫৪০টি) পোনামাছ অবমুক্ত করা হয়েছে। প্রকল্প খাতের অধীনে সালথা উপজেলার বিভিন্ন খাল ও বিলে এ পর্যন্ত মোট ৮০৯৪.৮৪ কেজি (৫,২৯,১৫০টি) পোনামাছ অবমুক্ত করা হয়েছে। জেলা মৎস্য উন্নয়ন প্রকল্পের অধীনে ১৪টি বিল নার্সারী কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হয়েছে। জেলা মৎস্য উন্নয়ন প্রকল্পের অধীনে ৪টি পেনকালচার প্রদর্শনী স্থাপন করা হয়েছে। মৎস্য উন্নয়ন প্রকল্পের অধীনে ৪ টি মৎস্য অভয়াশ্রম স্থাপন করা হয়েছে।

রাজস্ব খাতের অধীনে মোট ৩৬০ জন (পুরুষ ২৯৫ জন, মহিলা ৬৫ জন) মৎস্যচাষী/মৎস্যজীবী/মৎস্যব্যবসায়ীকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। প্রকল্প খাতের অধীনে মোট ১০৮৭ জন (পুরুষ ৮২৪ জন, মহিলা ১৮৩ জন) মৎস্যচাষী/মৎস্যজীবী/মৎস্যব্যবসায়ীকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। ইউনিয়ন পর্যায়ে মৎস্য চাষ প্রযুক্তিসেবা সম্প্রসারণ প্রকল্প (২য় পর্যায়) এর আওতায় ২৪টি প্রদর্শনী খামার বাস্তবায়ন করা হয়েছে।

মৎস্য ও মৎস্যজাত পণ্যে ফরমালিনবিরোধী অভিযানে ৭০ কেজি ফরমালিনযুক্ত মাছ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের উপস্থিতিতে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়েছে। অবৈধ জাল আটক অভিযানে ৮,৫০০ মিটার অবৈধ কারেন্ট জাল জব্দ করে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের উপস্থিতিতে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়েছে। জেলেদের নিবন্ধন ও পরিচয়পত্র প্রদান প্রকল্পের অধীনে ৮১৪ জন নিবন্ধিত জেলেকে আইডি কার্ড প্রদান করা হয়েছে।

সালথা উপজেলায় মাছের উৎপাদন আরও বৃদ্ধির লক্ষ্যে আধুনিক পদ্ধতিতে পরিকল্পিত উপায়ে মাছ ও চিংড়ি চাষ, মাছের বিভিন্ন রোগ-বালাই ও তার প্রতিকার, মাছ ও চিংড়ি চাষের নতুন প্রযুক্তি সম্পর্কে মৎস্যচাষি ও জেলেদের নিয়মিত পরামর্শসেবা প্রদান করা হচ্ছে।

এ ছাড়াও মৎস্যচাষ বিষয়ে জনসাধারণকে আরও আগ্রহী ও উৎসাহিত করতে প্রতি মাসের ২য় বৃহস্পতিবার মৎস্য পরামর্শ দিবস ঘোষণা করে জনসাধারণকে পরামর্শসেবা প্রদান করা হচ্ছে।

উপজেলা মৎস্য অফিসার সৈকত মল্লিক বলেন, স্বাধীনতার ৪৬ বছর পরে বাংলাদেশ আজ মাছ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ। এরই ধারাবাহিকতায় সালথা উপজেলা মৎস্য সম্পদ উন্নয়নে অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা পালন করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের দৃষ্টিতে মৎস্য সেক্টরের উন্নয়ন বিশ্ববাসীর সামনে দৃষ্টান্ত স্থাপন করছে।

সারা বিশ্বের মধ্যে মাছ উৎপাদনে ৪র্থ, প্রাকৃতিক মাছ উৎপাদনে ৩য় অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। সালথা উপজেলায় অভয়আশ্রম স্থাপন, বিল নার্সারী স্থাপন, পোনা অবমুক্তকরণ কর্মসূচি, মৎস্য আইন বাস্তবায়ন ও জেলেদের মাঝে আইডি কার্ড বিতরণের মতো সফল কর্মসূচির মাধ্যমে মৎস্য সম্পদ সংরক্ষণ, উৎপাদন বৃদ্ধি এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে অন্যান্য ভূমিকা রয়েছে। ভবিষ্যতে সালথা উপজেলা মৎস্য সেক্টরের উন্নয়ন আরো বেগবান হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

সালথা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মাকছুদুল ইসলাম বলেন, আমাদের সালথা উপজেলায় বেশ কিছু জলাশয় মৎস্য অভয়াশ্রম ঘোষণা করা হয়েছে। তম্মধ্যে ভাওয়াল মৎস্য অভয়াশ্রম উল্লেখযোগ্য। সালথা উপজেলা দেশীয় মাছের জাত সংরক্ষণে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। নিজস্ব চাহিদা মিটিয়ে জাতীয় চাহিদা পূরণে যথেষ্ট ভূমিকা রাখছে। মৎস্যজীবীদের এ অবদান সালথাবাসীর জন্য অত্যন্ত গৌরবের। ভবিষ্যতে উপজেলা প্রশাসন মৎস্যজীবীদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এ ধারা অব্যাহত থাকবে।

Bootstrap Image Preview