নগরীর বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে মোটরবাইকধারী ছিনতাইতকারী চক্র ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছে। প্রতিনিয়ত ছিনতাইকারীদের কবলে পড়ে সর্বস্ব হারাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে রিক্সা ও ইজিবাইকে চলাচলরত যাত্রীরা এ সকল ছিনতাইকারীদের খপ্পরে পড়ছেন।
ছিনতাইকারীরা চলতি পথেই যাত্রীদের মোবাইল, কানের দুল, গলার চেইন, ব্যানিটি ব্যাগসহ প্রয়োজনীয় জিনিস নিয়ে চোখের পলকে পালিয়ে যাচ্ছে। এ সকল ঘটনায় গত কয়েক দিনে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ (কেএমপি)’র কয়েকটি থানায় সাধারণ ডায়েরী করেছেন ভুক্তভোগিরা। তবে শেষ পর্যন্ত এ ছিনতাই চক্রের কোন সদস্য সনাক্ত বা গ্রেফতার হয়নি।
ভুক্তভোগীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, সন্ধ্যার পর থেকে সংঘবদ্ধ এ ছিনতাইকারীরা মোটরসাইকেল নিয়ে নগরীর বিভিন্ন রাস্তায় ঘুরে বেড়ান। যে সকল রাস্তায় গাড়ি চলাচল একটু কমে আসে মূলতঃ সে সকল স্থানেই এরা টার্গেট করে। রিক্সা অথবা ইজিবাইকের যাত্রীরা এ ছিনতাইকারীদের প্রধান টার্গেট।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নগরীর সদর থানাধীন সার্কিট হাউজ রোড, খুলনা রেল স্টেশন রোড, আহসান আহমেদ রোড, শের এ বাংলা রোডের ময়লাপোতা থেকে নিরালা, গগণ বাবু রোড, খানজাহান আলী রোডের ফেরিঘাট মোড় থেকে শান্তিধাম পর্যন্ত, সোনাডাঙ্গা থানাধীন ডালমিল মোড় থেকে শিববাড়ী মোড়, এমএ বারী সড়কের বাইশতলা ডেল্টাভবন থেকে গল্লামারী পর্যন্ত, বাইপাস সড়কের খোড়াবস্তির মোড় থেকে বয়রা বাজার মোড় পর্যন্ত, বয়রা মেইন রোডের প্রান্তিক মার্কেটের মোড় থেকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পেছনের গেট পর্যন্ত, খুলনা-যশোর রোডের শিববাড়ী মোড়স্থ কৃষি ব্যাংকের সামনে থেকে জোড়াগেট পর্যন্ত। খালিশপুর থানাধীন পুরাতন যশোর রোডের কেসিসি’র গরুর হাটের সামনে থেকে কদম তলা মোড়, আলমনগর মোড় থেকে নিউজপ্রিন্ট মিল মোড় পর্যন্ত, বয়রা মহিলা কলেজ মোড় থেকে গোয়ালখালী মোড় পর্যন্ত, বয়রা বাজার মোড় থেকে আবু নাসের বিষেশায়িত হাসপাতাল মোড় পর্যন্ত, হরিণটানা থানাধীন নতুন বাইপাস সড়কের ময়ূর ব্রিজ থেকে জয়বাংলার মোড় পর্যন্ত, মোহাম্মদ নগর মোড় থেকে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের রোড হয়ে জিরোপয়েন্ট পর্যন্ত, লবণচরা থানাধীন রূপসা ব্রিজ থেকে দারোগার ভিটা মোড় পর্যন্ত, ছাচিবুনিয়া মোড় এলাকা, মোহাম্মদ নগর থেকে ছাচিবুনিয়া মোড় পর্যন্ত, দৌলতপুর থানাধীন রেল স্টেশন ও রেলিগেট এলাকা, খানজাহান আলী থানাধীন ফুলবাড়ীগেট বাজার মোড় থেকে ডায়রীয়া ও বক্ষব্যাধি হাসপাতাল রোড, যশোর-খুলনা মহাসড়কের মানিকতলার মোড় থেকে পথেরবাজার চেকপোস্ট পযন্ত, আড়ংঘাটা থানাধীন মহসিন মোড় থেকে আড়ংঘাটা বাজার হয়ে বাইপাস সড়ক পর্যন্ত, বাইপাস সড়কের মোস্তর মোড় এলাকা উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও নগরীর বিভিন্ন অলি-গলিতে ছিনতাইকারীরা মোটরবাইক নিয়ে ওৎ পেতে বসে থাকেন বলে ভুক্তভোগিদের অভিযোগের সূত্রে জানা গেছে।
এ বিষয়ে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) মোঃ এহসান শাহ বলেন, কোন সাধারণ মানুষ ছিনতাইয়ের কবলে পড়লে অবশ্যই নিকটস্থ থানায় লিখিতভাবে অবগত করতে হবে। তাহলে পুলিশ তদন্ত করে ওই সকল ছিনতাইকারী চক্রকে সনাক্ত ও গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে পারবে। তাছাড়া পুলিশের টহল জোরদার করা হয়েছে। সকল নাগরিকের উচিত স্থানীয় থানা টেলিফোন ও মোবাইল নম্বর সংগ্রহে রাখা। যেকোন অপরাধ সংঘটিত হওয়ার সাথে সাথে পুলিশকে জানাতে পারলে অপরাধীদের পালিয়ে যাওয়ার চান্স কম থাকে। এছাড়া অহেতুক রাস্তায় ঘুরে বেড়ানো মোটরবাইকগুলোর ওপরে নজরদারি বাড়ানো হবে বলেও জানান তিনি।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর) মোল্লা জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ছিনতাইয়ের ঘটনা যে রাস্তায় হোক থানাকে অবগত না করলে অপরাধীরা পার পেয়ে যায়। তাছাড়া চিহ্নিত ছিনতাইকারী চক্রের অনেক সদস্য ইতোমধ্যে আইনের আওতায় এসেছে। আমরা এ বিষয়টি নিয়ে জোরালো ভাবে মাঠে কাজ শুরু করছি।