একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থীদের নির্বাচন বিধিমালার বাইরে গিয়ে তিন দিন আগে থেকেই প্রচারের সুযোগ দিচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নির্বাচনী আচরণবিধি (১২) অনুযায়ী, ভোটগ্রহণের দিনের তিন সপ্তাহের (২১ দিন) আগে কোনো নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের প্রার্থী বা স্বতন্ত্র প্রার্থী নির্বাচনী প্রচার শুরু করতে পারবেন না। তবে ইসি বলছে, ব্যবধান যা-ই থাকুক, প্রতীক বরাদ্দ পেলে প্রচারে কোনো বাধা থাকবে না।
তফসিল অনুযায়ী, প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার ২৯ নভেম্বর ও ভোটগ্রহণ ২৩ ডিসেম্বর। তবে প্রতীক বরাদ্দের বিষয়ে কিছু বলা হয়নি। ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ অবশ্য জানিয়েছেন, ৩০ নভেম্বর প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে।
পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ২৩ ডিসেম্বর ভোটগ্রহণ। তার তিন সপ্তাহ আগের দিনটি ৩ ডিসেম্বর। প্রতীক বরাদ্দ ৩০ নভেম্বর। ফলে ৩ সপ্তাহের আইনি বাধ্যবাধকতা মানতে হলে প্রতীক পেলেও প্রচারের জন্য তিন দিন অপেক্ষা করতে হবে। তবে খোদ ইসিই বলছে, প্রতীক পেলে প্রচারে অংশ নিতে পারবেন প্রার্থীরা। আর এতে নিজেদের বিধানের বাইরে গিয়ে তিন দিন আগেই প্রচারের সুযোগ করে দিচ্ছে ইসি। এ বিষয়ে ইসি সচিব বলেন, ‘কমিশনের ক্ষমতা অগাধ। কমিশন যেভাবে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন, সেভাবেই হবে।’
তবে সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘২১ দিনের বেশি সময় যদি দিতেই হয়, সে ক্ষেত্রে ইসি বিধি সংশোধন করে নিতে পারে। এ বিষয়ে তাদের ক্ষমতা নিরঙ্কুশ। তার আগে ২৩ দিন দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।’ তিনি আরও বলেন, ‘এ সংক্রান্ত আইনকে ভিন্নভাবে ব্যাখ্যার সুযোগ নেই। ইসিকে অবশ্যই আইন ও বিধি মেনে কাজ করতে হবে। কিন্তু আইন-বিধি বাদ দিয়ে ইসি যদি তাদের নিজস্ব মতে চলে, সে ক্ষেত্রে আমার কিছু বলার নেই। তবে এটা করতে গেলে তা আদালতে চ্যালেঞ্জ হতে পারে।’
ইসি কর্মকর্তারা জানান, আইনে রয়েছে ভোটগ্রহণের দিনের তিন সপ্তাহ পূর্বে কোনো প্রচার চালানো যাবে না। সেই হিসাবে এবার ৩ ডিসেম্বরের আগে প্রচারে অংশ নেওয়া যাবে না। তবে ইসির হাতে ক্ষমতা আছে। এখন কমিশন হয়তো কোনো প্রজ্ঞাপন জারি করে এটা করতে পারবে।