Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৭ শনিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

মাদরাসার ১ জন অফিস সহকারী নিয়োগে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ!

বিডিমর্নিং ডেস্ক-
প্রকাশিত: ০৬ নভেম্বর ২০১৮, ০১:৫৪ PM
আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০১৮, ০১:৫৪ PM

bdmorning Image Preview


কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার বড়াইকান্দি দারুচ্ছুন্নাহ দাখিল মাদরাসার অফিস সহকারীর একটি পদের জন্য আবেদনকারি ৫ প্রার্থীর কাছ থেকে ৪০ লাখ টাকার বেশি ঘুষ গ্রহণ করার অভিযোগ ওঠেছে। এই পদে নিয়োগে অনিয়ম আর ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ মাদরাসার সুপার আর পরিচালনা কমিটির সভাপতি দুজনের বিরুদ্ধে। নিয়োগ পরীক্ষা গ্রহণের ১০ দিনেও ফলাফল ঘোষণা না করায় প্রার্থী ও এলাকাবাসী বিক্ষুদ্ধ হয়ে উঠছে।

মাদরাসা সূত্রে জানা গেছে, প্রায় দেড় বছর আগে প্রতিষ্ঠানের অফিস সহকারী সহিবর রহমান মারা যায়। এরপর ওই শূন্যপদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি আহ্বান করা হয়। এতে ১৪ জন প্রার্থী আবেদন দাখিল করেন। নিয়োগ দেওয়ার কথা বলে মাদরাসার সুপার মাওলানা আবুল কালাম ও পরিচালনা কমিটির সভাপতি জাবেদ আলী দুজনে পৃথকভাবে পাঁচজন প্রার্থীর কাছ থেকে ৪০ লাখ টাকার বেশি ঘুষ গ্রহণ করেন। ঘুষ গ্রহণের পর কাকে নিয়োগ দেওয়া হবে এ নিয়ে সুপার আর সভাপতির মাঝে টানাপড়েনের সৃষ্টি এবং নিয়োগকার্যক্রম বিলম্বিত হতে থাকে। এর মধ্যে নিয়োগ বোর্ড গঠন করে গত ২৪ অক্টোবর নিয়োগ পরীক্ষা নেওয়ার কার্যক্রম শুরু করা হয় কুড়িগ্রাম জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ে।

অভিযোগ করা হয়েছে ওই দিন দুপুর ২টায় পরীক্ষা নেওয়ার কথা থাকলেও পরীক্ষা গ্রহণ করা হয় রাত ৯টার দিকে। সরকারি নিয়ম অনুসারে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ পরীক্ষা নিতে হবে। কিন্তু এখানে তা মানা হয়নি।

রাতের অন্ধকারে প্রশ্ন ফাঁস করে নিয়োগ পরীক্ষা প্রসঙ্গে কুড়িগ্রাম জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তী শামসুল আলম বলেন, এলাকায় নিয়োগ পরীক্ষা সমস্যা হতে পারে এ কারণে আমার দপ্তরে নিয়োগ পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। দিনের বেলায় একটু ঝামেলা ছিল তাই রাতে নেওয়া হয়েছে। আর প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা আমার জানা নেই।

একাধিক প্রার্থী অভিযোগ করেন, সুপার আর সভাপতি তাদের পছন্দের প্রার্থীকে প্রশ্নপত্র ফাঁস করে দেয়। এ নিয়ে হট্টগোলের সৃষ্টি হলে পরীক্ষা শেষে সুপার আর সভাপতি দ্রুত পালিয়ে যায়। নিয়োগ পরীক্ষার ফলাফল পরের দিন ঘোষণা করার কথা থাকলেও আজ পর্যন্ত ফলাফল ঘোষণা করা হয়নি। এ নিয়ে প্রার্থীরা অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে। বিশেষ করে যেসব প্রার্থী ঘুষ প্রদান করেছেন তারা এখন বিক্ষুদ্ধ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক প্রার্থীর কাছ থেকে জানা গেছে, মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি ৩ প্রার্থীর কাছ থেকে ২৪ লাখ এবং সুপার ২ প্রার্থীর কাছ থেকে ১৬ লাখ টাকা ঘুষ নিয়েছেন। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত সভাপতি ও সুপার। নিয়োগ পরীক্ষা নেওয়ার পরও ফলাফল প্রকাশ করা হচ্ছে না কেন- এমন বিষয়ে ওই মাদরাসার এক শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, নিয়োগ পাবে তো একজন। সেখানে টাকা নেওয়ার কথা শোনা যাচ্ছে পাঁচজনের কাছ থেকে। ফলাফল প্রকাশ করলে তো বাকি চারজনের টাকা ফেরত দিতে হবে। এ কারণে সুপার আর সভাপতি ফলাফল প্রকাশ না করে চুপ করে বসে আছেন।

অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মাদরাসা সুপার মাওলানা আবুল কালাম বলেন, আমি কোনো প্রার্থীর কাছ থেকে ঘুষ নিইনি। পরিচালনা কমিটির সভাপতি একাধিক প্রার্থীর কাছ থেকে ঘুষ নিয়েছেন। অফিস সহকারী হবে মাদরাসার আর টাকা নিয়ে যাবেন সভাপতি তা তো হবে না। এ কারণে ফলাফল ঘোষণা করা হচ্ছে না।

অপরদিকে মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি জাবেদ আলী বলেন, না, আমি কারো কাছে কোনো টাকা নিইনি। উল্টো সরকারি দলের নেতারা আমার ওপর চাপ সৃষ্টি করছে তাদের প্রার্থীকে নেওয়ার জন্য। এ নিয়ে আমি ভীষণ বিপদে আছি। স্থানীয় চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতিকে নিয়ে মাদরাসায় আমরা মীমাংশা বৈঠক করব। তারপর ফলাফল ঘোষণা করা হবে।

Bootstrap Image Preview