মধুর হাজারো গুণ’’ এই মধু আজ বিলীনের পথে। এক সময় ফরিদপুরের সালথা উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের মেঠো পথের আশ-পাশে ঝোপ-ঝাড়ে, বাগান-বাড়ি আঙ্গিনার গাছের ডালে ও বড় বড় বিল্ডিংয়ে দেখা যেত মৌ’মাছির চাক। বিভিন্ন কলাকৌশলের মাধ্যমে মৌমাছির চাক থেকে মধু সংগ্রহ করে মধু ব্যবসায়ীরা তাদের সংসার চালাতেন। বর্তমানে সেই মৌচাক আর দেখা যায় না। হরেক রকমের ফসলের আবাদ কমে যাওয়ায় গ্রামগঞ্জ থেকে দিন দিন মৌচাক বিলীণ হয়ে যাচ্ছে।
৮৩ বছরের বৃদ্ধ হালিম শেখ এ প্রতিনিধিকে বলেন, আমরা কুটি কালে বাড়ির পাশে বাগানের আমগাছ, গাফগাছ, তেতুলগাছ এবং শেওড়া গাছ থেকে মৌ-মাছির চাক কেটে মধু বের করতাম। তারপর বাড়ির সবাই মিলে দৈনিক ভোরে মধু দিয়ে রুটি খাইতাম। মধু খাওয়ার জন্য সহজে আমাদের অসুক-বিসুক হইতো না। যদি কেউ মৌছাক কাটতে বাধা দিতো’ তাতেও আমরা থামতাম না। চুরি করে মৌচাকের ভিতরে পাটখড়ির এক মাথা ঢুকিয়ে দিয়ে অন্য পাশ মুখে নিয়ে মধু খাইতাম। এখন মধু পাইন্যা, তাই খাইন্যা।
আব্দুল মালেক নামে এক মধু সংগ্রহকারী বলেন, দীর্ঘদিন ধরে মৌচাক থেকে মধু সংগ্রহ করে তা বাজারে বিক্রি করে আমাদের সংসার চালাই। আগে গ্রাম-গঞ্জে অনেক মৌচাক পাওয়া যেত। যার কারণে অল্প দামে মধু বিক্রি করে সংসার চালাতেন অনেকেই। বর্তমানে মধুর দাম বেশি থাকলেও মৌচাক পাওয়া যায় না। যাও পাই তাতে সংসার চালাতে কষ্ট হয়। সেজন্য মধু সংগ্রহ করা অনেকেই ছেড়ে দিয়ে অন্য কাজ করে সংসার চালায়।
উপজেলা কৃষি অফিসার মোহাম্মাদ বিন ইয়ামিন বলেন, আগে এই অঞ্চলে হরেক রকমের ফসলের হতো। সব সৃজনে কোন না কোন ফসলের ফুল থাকতো। তাই মৌ-মাছিও বেশি ছিলো। সেজন্য প্রায় জায়গায় মৌচাক দেখা যেত। আর বর্তমানে পাট ও পিয়াজের আবাদ চারিদিকে। হরেক রকমের ফসলের আবাদ একেবারেই সিমিত থাকার কারণে মৌ-মাছি কমে গেছে। মধু সংগ্রহের জন্য আমরা সরিষার সৃজনে আধুণিক পদ্ধতিতে মৌ-মাছির আবাদ করবো।