রাজশাহী কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের (টিটিসি) অধ্যক্ষ প্রকৌশলী মাহবুবুর রশীদ তালুকদারের অপসারণ দাবি করেছেন ৪৮ জন শিক্ষক-কর্মচারী। অর্থ আত্মসাৎ, স্বজনপ্রীতিসহ দুর্নীতির অভিযোগে তুলে অপসারণের দাবি করা হয়।
এ দাবিতে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রীর কাছে লিখিত আবেদন জানিয়েছেন তারা।
শিক্ষক-কর্মচারী স্বাক্ষরিত আবেদনের অনুলিপি মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর মহাপরিচালকের কাছেও পাঠানো হয়েছে।
আবেদনপত্রে উল্লেখ করা হয়, অধ্যক্ষ মাহবুবুর রশীদ তালুকদার প্রতিষ্ঠানটিতে সাত বছর ধরে কর্মরত আছেন। তিনি বিভিন্ন ধরনের আর্থিক অনিয়ম, স্বজনপ্রীতি ও অর্থ আত্মসাতের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে শিক্ষক-কর্মচারীদের সঙ্গে অসদাচরণ করছেন। তিনি স্ব-অর্থায়ন কোর্সের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় করেন।
পারিবারিক কাজে ব্যবহার করছেন সরকারি গাড়ি। অভিযোগে বলা হয়, প্রশিক্ষণার্থীদের কাছ থেকে কম্পিউটার কোর্সে নির্ধারিত কোর্স ফি দুই হাজারের স্থলে দুই হাজার আটশ’, গ্রাফিক্স ডিজাইনে দুই হাজার দুইশ’র স্থলে তিন হাজার সাড়ে তিনশ’, ইলেকট্রিক্যালে তিন হাজারের স্থলে পাঁচ হাজার ছয়শ’ টাকা নিচ্ছেন। এভাবে সব কোর্সে নির্ধারিত ফি’র চেয়ে বেশি টাকা নিয়ে গত কয়েক বছরে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন অধ্যক্ষ।
কম্পিউটার কোর্সের শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, এ কোর্সের নির্ধারিত ফি’র চেয়ে বেশি টাকা নেয়া হচ্ছে। ইন্টারনেট কানেকশনের অতিরিক্তি দেড়শ’ টাকা নেয়া হয়। কিন্তু শিক্ষার্থীদের ইন্টারনেট ব্যবহার করতে দেয়া হয় না। এছাড়া স্টেপ কোর্স এবং সেপ কোর্সের ভর্তি ফি নেয়ার বিধান নেই। তারপরেও ০১৭৬২৬২৩১৯৫ বিকাশ নম্বরের মাধ্যমে প্রতি আবেদনকারীর কাছ থেকে ৪১ টাকা করে নেয়া হচ্ছে। কয়েক বছরে এর মাধ্যমে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন অধ্যক্ষ এবং তার সহযোগীরা।
মোটর ড্রাইভিং কোর্সের শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ফিটনেসবিহীন গাড়ি দিয়ে তাদের প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। এ কারণে বন্ধ হয়ে যায় স্টার্ট। একপর্যায়ে সময় শেষ হয়ে গেলে প্রশিক্ষণ না নিয়েই তারা ফিরে যেতে বাধ্য হন।
অভিযোগ অস্বীকার করে অধ্যক্ষ প্রকৌশলী মাহবুবুর রশীদ তালুকদার বলেন, যেসব অভিযোগ করা হচ্ছে তা মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। আমি অর্থ আত্মসাৎ বা কোনো অনিয়মের সঙ্গে সম্পৃক্ত না। বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে শিক্ষক-কর্মচারীদের হাজিরা নেয়ার ব্যবস্থা করায় অনেকেই ক্ষুব্ধ হয়েছেন। এছাড়া কর্তব্যে অবহেলা করায় কয়েকজন শিক্ষককে শোকজ নোটিশ দেয়া হয়েছে। এ কারণে কয়েকজন শিক্ষক-কর্মচারী আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ করেছেন এবং অপপ্রচার চালাচ্ছেন বলে দাবি করেন তিনি।