নানা কারণে নদীপারের জায়গা দখল হয়ে যায়। আবার সরকারি হস্তক্ষেপে সে জায়গা উদ্ধার করা হয়। নদী হত্যাকারী ও দখলকারিরা এ যুগের ‘রাজাকার’। নদী রক্ষায় সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি সমাজের সকল স্তরের মানুষের সহযোগিতা প্রয়োজন।
আজ ঢাকায় জাতীয় যাদুঘরে ‘নদ-নদী রক্ষায় আইনের প্রয়োগ এবং উন্নয়ন বাস্তবতা’ শীর্ষক সেমিনারে নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান এসব কথা বলেন।
জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন বিশ্ব নদী দিবসের প্রেক্ষাপটে এ সেমিনারের আয়োজন করে। কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মুজিবুর রহমান সেমিনারের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
মন্ত্রী আরও বলনে, নদী রক্ষায় সরকার খুবই আন্তরিক। নদীর সীমানা চিহ্নিতকরণ, নদী তীরের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ এবং উচ্ছেদকৃত জায়গা যাতে পুন:দখল হয়ে না যায় সেলক্ষ্যে সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা , তুরাগ ও বালু নদীর সীমানা চিহ্নিত করার লক্ষ্যে সাড়ে নয় হাজার সীমানা পিলার স্থাপন করা হয়েছে, আরো ১০ হাজার সীমানা পিলার স্থাপন করা হবে। উক্ত নদীগুলোর তীরে প্রায় দশ হাজার অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে ৫০০ একর জমি উদ্ধার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ঢাকার চারপাশে বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা, তুরাগ ও বালু নদীর তীরে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদকৃত জায়গা যাতে পুনরায় দখল হয়ে না যায় সেজন্য ২০ কিলোমিটার ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। আরো ৫০ কিলোমিটার ওয়াকওয়ে নির্মাণ কাজ অক্টোবর শুরু হবে। পর্যায়ক্রমে উক্ত নদীগুলোর উভয় তীরে ২২০ কিলোমিটার ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা হবে।
নদী তীরে বনায়ন ও সুন্দর পরিবেশের জন্য ঢাকার শ্যামপুর ও নারায়ণগঞ্জে দু’টি ইকোপার্ক নির্মাণ করা হয়েছে। আশুলিয়া, সিন্নিরটেক ও টঙ্গিতে আরো তিনটি ইকোপার্ক নির্মাণ করা হবে।
শাজাহান খান বলেন, বাংলাদেশে ২৪০০ কিলোমিটার নৌপথ ছিল। ৭৫ পরবর্তি সরকারগুলোর অযতœ অবেহেলায় ২০,৪০০ কিলোমিটার নৌপথ হারিয়ে গেছে। নদী খননের জন্য ড্রেজার প্রয়োজন। বঙ্গবন্ধু বিআইডব্লিউটি্’র জন্য ৭টি এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের জন্য ১৬টি ড্রেজার সংগ্রহ করেছিলেন।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নদী খননের ওপর জোর দিয়ে (২০০৯-১৩) মেয়াদে বিআইডব্লিউটিএর জন্য ১৪টি ড্রেজার সংগ্রহ করেন। (২০১৪-২০১৯) মেয়াদে ২০টি ড্রেজার সগ্রহের কাজ চলমান রয়েছে।
কমিশনের চেয়ারম্যানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম, ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোঃ আব্দুল জলিল, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ আবদুস সামাদ, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব আব্দুল্লাহ আল মোহসীন চৌধুরী, পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের চেয়ারম্যান আবু নাসের খান এবং নদী বাঁচাও আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন।