Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৭ শনিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

পরকীয়া জেনে ফেলাতেই ৩ জনকে হত্যা

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৯ ডিসেম্বর ২০১৯, ০২:০৩ PM
আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০১৯, ০২:০৩ PM

bdmorning Image Preview


কুয়েত প্রবাসীর বাড়িতে ৩ জন হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তার স্ত্রী মিশরাত জাহান মিশুকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত রবিবার গভীর রাতে তাকে গ্রেফতার করার কথা নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বরিশালের বানারীপাড়ার থানার ওসি শিশির কুমার পাল।

এর আগে রবিবার সন্ধ্যা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ওই ৩জন হত্যার দায় স্বীকার করে বরিশালের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয় ওই মামলায় গ্রেফতারকৃত ২ আসামি মিশুর পরকীয়া প্রেমিক জাকির হোসেন ও তার সহযোগী জুয়েল হাওলাদার। বিচারক মো. এনায়েত উল্লাহ তাদের জবানবন্দি গ্রহণ করে ওই রাতেই কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন। বানারীপাড়া থানার ওসি শিশির কুমার পাল এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

এর আগে গত শুক্রবার রাতে ওই লোমহর্ষক হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পরদিন শনিবার দুপুরে মিশুর পরকীয়া প্রেমিক নির্মাণ শ্রমিক জাকিরকে পুলিশ এবং ওইদিন রাতেই জাকিরের সহযোগী জুয়েল হাওলাদারকে আটক করে র‌্যাব-৮। ওই ঘটনায় শনিবার রাতে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে প্রবাসী হাফেজ আব্দুর রবের ভাই সুলতান মাহমুদের দায়ের করা হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে রবিবার বিকেলে আদালতে সোপর্দ করলে তারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। 

পুলিশ জানায়, প্রায় ৩ বছর আগে জাকির ওই বাড়ির নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করার সময় কুয়েত প্রবাসী হাফেজ আব্দুর রবের স্ত্রী মিশরাত জাহান মিশুর সাথে পরিচয়ের সূত্র ধরে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। তাদের অনৈতিক সম্পর্কের বিষয়টি জেনে যায় প্রবাসী আব্দুর রবের মা মরিয়ম বেগম এবং খালাত ভাই মো. ইউসুফ। এ কারণে তাদের হত্যার পরিকল্পনা করে জাকির ও মিশরাত। সে অনুযায়ী গত শুক্রবার রাতে বাসার অন্যান্যরা ঘুমিয়ে পড়লে ঘরের প্রধান দরজা খুলে রাখে মিশরাত।

ওইদিন রাত ১১টার পর জাকির ও তার সহযোগী জুয়েল ওই বাসায় ঢুকে প্রথমে ইউসুফের পা বেঁধে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পরে তারা পাশের কক্ষে ঘুমিয়ে থাকা মরিয়ম বেগমকেও একইভাবে শ্বাসরোধে হত্যা করে। দুই হত্যাকাণ্ডের পর ইউসুফের লাশ বাড়ির সামনে পুকুরের পানিতে ভাসিয়ে দেয় এবং মরিয়মের লাশ কক্ষ থেকে বেলকুনিতে নিয়ে রাখে।

মিশন শেষ করে তারা মিশরাতের কক্ষে গিয়ে মিশরাতের বিবস্ত্র ছবি তোলে। হত্যার ঘটনা ফাঁস করলে ওই ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখানো হয় মিশরাতকে। এ সময় পাশের কক্ষে ঘুমিয়ে থাকা প্রবাসীর ভগ্নিপতি শফিকুল আলম ঘুমের মধ্যে কাশি দেয়। শফিকুল দুই হত্যার বিষয়টি পের পেতে পারে সন্দেহে তাকেও শ্বাসরোধ করে হত্যা করে তারা। 

শনিবার ভোরে ফজরের নামাজের সময় মরিয়মের কক্ষে ঘুমিয়ে থাকা প্রবাসীর রবের ভাতিজি আছিয়া ঘুম থেকে জেগে দাদিকে খুঁজতে গিয়ে বেলকুনিতে লাশ পড়ে থাকতে দেখে ডাক চিৎকার দেয়। প্রতিবেশীরা এসে ওই বাড়ি থেকে আরও দুটি লাশ আবিষ্কার করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ৩টি লাশ উদ্ধার করে বরিশাল মর্গে পাঠায়। ময়নাতদন্ত শেষে গত রবিবার তাদের মরদেহ নিজ নিজ বাড়িতে দাফন করা হয়।

Bootstrap Image Preview