Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৭ শনিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে ঢাকার দুই সিটির ভোট

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৬ ডিসেম্বর ২০১৯, ১২:৪১ PM
আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০১৯, ১২:৪১ PM

bdmorning Image Preview


জানুয়ারির মাঝামাঝিতে ঢাকার দুই (উত্তর-দক্ষিণ) সিটির ভোটের পরিকল্পনা থাকলেও শেষ মুহূর্তে এসে সময় পিছিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে ভোটের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি। চলতি মাসের তৃতীয় সপ্তাহের প্রথমদিকে তফসিল ঘোষণা করা হবে। যদিও আগামী ১১ ডিসেম্বর আহবান করা কমিশন সভায় দুই সিটির তফসিলের বিষয়টি এজেন্ডাভুক্ত করা হয়নি।

দুই সিটির নির্বাচনের বিষয়ে ইসির সিনিয়র সচিব মো. আলমগীর বলেন, জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে দুই সিটির ভোট করার ব্যাপারে কমিশনের সিদ্ধান্ত আছে। তবে এখনো তারিখ চূড়ান্ত করা হয়নি। কমিশন বসে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে। ১১ ডিসেম্বর কমিশন সভার পরবর্তী সভায় দুই সিটির তফসিল চূড়ান্ত হতে পারে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

ভোটের সময় পেছানোর বিষয়ে ইসির সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মুলত সেনাবাহিনীর শীতকালীন মহড়ার জন্য ভোটের সময় কিছুটা পেছানো হয়। কেননা ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) পরিচালনায় সহায়তা করবে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে গঠিত টেকনিক্যাল টিমের সদস্যরা। শীতকালীন মহড়া চলাকালীন সেনাবাহিনীর সহায়তা পাওয়া যাবে না। মহড়া শেষ হবে জানুয়ারির শেষদিকে।

দুই সিটিতে ভোটকেন্দ্র রয়েছে ২ হাজার ৬০০টির মতো। এক্ষেত্রে প্রতি কেন্দ্রে ১জন করে ইভিএম পরিচালনা টিমের সদস্য কাজ করলেও প্রয়োজন ২ হাজার ৬০০ লোকবল। নির্বাচন কমিশনের এই লোকবল নেই। সশস্ত্র বাহিনীও এই লোকবল মহড়া চলাকালীন দেবে না। এ অবস্থায় জানুয়ারির শেষ সময় ছাড়া ভাবার উপায় নেই কমিশনের। অন্যথায় মার্চের দিকে যেতে হবে।

সম্প্রতি দুই সিটির সম্প্রসারিত ১৮টি করে মোট ৩৬টি ওয়ার্ডের সংরক্ষিতসহ ৪৮ জন কাউন্সিলর জানুয়ারিতে নির্বাচন না করতে কমিশনে আবেদন করেছিল। এটি নিয়ে ভাবা হয়েছিল। তবে এটা করলে নির্বাচন নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। এ বিষয়ে সিনিয়র সচিব বলেন, নির্বাচন নিয়ে আইনী কোন ধরণের জটিলতা নেই। তাদের আবেদন কমিশনে উপস্থাপন করেছিলাম।

কমিশন জানিয়েছে, পরিষদ ভেঙ্গে গেলে নির্বাচিতদের মেয়াদও শেষ হয়ে যাবে। পরিষদের মেয়াদ শেষের ১৮০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করার আইনী বাধ্যবকতা রয়েছে।

ইতোমধ্যে ঢাকার দুই সিটির ভোটের ক্ষণ গণনা শুরু হয়েছে। গত ১৪ নভেম্বর নির্বাচন উপযোগি হয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন। আর ১৮ নভেম্বর নির্বাচন ক্ষণ গণনা শুরু হয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে। স্থানীয় সরকার থেকে চিঠি পাওয়ায় ভোট গ্রহণের প্রস্তুতি শুরু করে কমিশন।

প্রথমত কমিশন চিন্তা ছিল ডিসেম্বরের শুরুতে আনুষ্ঠানিক বৈঠক করে ঢাকার দুই সিটির তফসিল ঘোষণার। মধ্য জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচন শেষ করার। কিন্তু নানান দিক বিবেচনা করে এখন ২৩, ২৬ ও ৩০ জানুয়ারি ভোট গ্রহণের সম্ভাব্য তারিখ ধরে নির্বাচনী প্রস্তুতি নিচ্ছে। এক্ষেত্রে ৪০ থেকে ৪৫ দিন হাতে রেখে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবে কমিশন। বিদ্যমান ভোটার তালিকা দিয়েই ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটিতে ভোট করা হবে।

খসড়া ভোটকেন্দ্র প্রস্তুত : ইসির কর্মকর্তারা বলেছেন, ইতোমধ্যে দুই সিটির ভোটকেন্দ্রের খসড়া প্রস্তুত করা হয়েছে। প্রস্তুত রয়েছে ভোটার তালিকাও। আর ইসি সচিবালয় দুই সিটিতে সব কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিতেও সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তারা বলেছেন, দুই সিটিতে প্রায় আড়াই হাজার ভোট কেন্দ্র রয়েছে। ভোটকক্ষ রয়েছে প্রায় সাড়ে ১৩ হাজার।

ইভিএমের বিষয়ে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের (এনআইডি) মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম বলেন, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি ভোটের জন্য প্রায় ৩০ হাজারের মত ইভিএম প্রস্তুত রাখা হচ্ছে। সেই সঙ্গে নির্বাচনী এলাকার ওয়ার্ডভিত্তিক ভোটার তালিকার সিডিও প্রস্তুত থাকছে।

ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্যানেল তৈরির কাজ শুরু: ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচন সামনে রেখে অর্ধ লাখ ভোটগ্রহণ কর্মকর্তার প্রাথমিক তালিকা করার কাজে হাত দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। প্রিজাইডিং, সহকারী প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসারদের এই প্রাথমিক প্যানেল তৈরির জন্য গত মঙ্গলবার ইসির নির্বাচন পরিচালনা শাখার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ঢাকার সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও থানা নির্বাচন কর্মকর্তাদের চিঠি পাঠিয়েছেন।

২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল একসঙ্গে ঢাকা উত্তর, দক্ষিণ ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নির্বাচন হয়। নির্বাচনের পর ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রথম সভা হয় ওই বছরের ১৪ মে, দক্ষিণ সিটিতে ১৭ মে ও চট্টগ্রাম সিটিতে প্রথম সভা হয় একই বছরের ৬ আগস্ট। এই হিসাবে ঢাকা উত্তরের মেয়াদ শেষ হবে ২০২০ সালের ১৩ মে, আর দক্ষিণে একই বছরের ১৬ মে। এছাড়া চট্টগ্রাম সিটির মেয়াদ শেষ হবে ২০২০ সালের ৫ আগস্ট। স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন ২০০৯ অনুযায়ী, মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের ১৮০ দিনের মধ্যে ভোটগ্রহণ করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

আগামী বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ক্ষণ গণনা শুরু হবে। তবে চট্টগ্রাম সিটির ভোট নিয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। ঢাকা উত্তর সিটিতে ভোটার সংখ্যা ৩০ লাখ ৩৫ হাজার ৬২১ জন। সাধারণ ওয়ার্ড ৫৪টি এবং সংরক্ষিত ওয়ার্ড ১৮টি। সম্ভাব্য ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ১ হাজার ৩৪৯টি এবং ভোটকক্ষ ৭ হাজার ৫১৬টি। আর দক্ষিণ সিটিতে ভোটার রয়েছেন ২৩ লাখ ৬৭ হাজার ৪৮৮ জন। সাধারণ ওয়ার্ড ৭৫টি এবং সংরক্ষিত ওয়ার্ড ২৫টি। সম্ভাব্য ভোট কেন্দ্র ১ হাজার ১২৪ এবং ভোটকক্ষ ৫ হাজার ৯৯৮টা।

Bootstrap Image Preview