Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৬ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

চাকরির প্রলোভনে অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন শিক্ষক

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৬ অক্টোবর ২০১৯, ০৭:৩৮ PM
আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০১৯, ০৭:৩৮ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত ছবি


সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে চাকরির লোভ দেখিয়ে এবং ভুয়া নিয়োগপত্র তৈরি করে পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে বিপুল কুমার রায় (৪৩) নামে এক স্কুলশিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আত্মীয় স্বজন ও স্থানীয়দের কাছে চাকরির নাম করে অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন এই স্কুল শিক্ষক। 

এ বিষয়ে থানায় তার বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা হয়েছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছেও লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, দেবীগঞ্জ উপজেলার বম্মোত্তর সুন্দরদিঘী সরকারপাড়া গ্রামের হরিশ চন্দ্র রায়ের ছেলে বিপুল কুমার রায়। তিনি নীলফামারী জেলার ডোমার উপজেলার সোনারায় ফার্মেরহাট নিম্ম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (হিন্দু ধর্ম শিক্ষা)।

পেশায় স্কুলশিক্ষক হলেও এলাকায় তার বেশ প্রভাব রয়েছে। বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে তার লোকজন রয়েছে বলে তিনি এলাকায় প্রচার করে চাকরি প্রার্থীদের প্রলোভন দেখান। আত্মীয় স্বজন থেকে শুরু করে স্থানীয় যুবকদের অনেকেই তার হাতে চাহিদা মতো টাকা তুলে দেয়।

বিপুল চাকরির ভুয়া সার্কুলার দেখিয়ে এবং ভুয়া নিয়োগপত্র তৈরি করে চাকরি হয়েছে মর্মে প্রার্থীর বাড়িতে ইমেইলেও পাঠাতেন। কিন্তু আস্তে আস্তে তার প্রতারণা ধরা পড়ে যায়। এরপর টাকা ফেরতের জন্য প্রার্থীরা চাপ দিতে থাকলে টালবাহানা শুরু করেন তিনি। চাকরি পাওয়ার আশায় বিপুলের হাতে টাকা দিয়ে অনেক দরিদ্র যুবক এখন দিশেহারা।

বিশ্বনাথ রায় নামের এক ভুক্তভোগী জানান, বিপুল কুমার রায় আমার স্ত্রীর বোনের ছেলে। তিনি আমার ছোট ছেলেকে সমাজসেবা অধিদপ্তরে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখিয়ে বলেন, আপনার ছেলেকে সমাজসেবা অধিদফতরে চাকরি নিয়ে দেব। এক পর্যায়ে আমরা তার কথা মত ছেলের চাকরির জন্য ২ লাখ ৩০ হাজার টাকা দিই।

বিপুল টাকা নেয়ার আগে আমাকে বলেন, চাকরি না হলে টাকা ফেরত দেয়া হবে। কিন্তু আমার ছেলের চাকরি দিতে পারেনি। এখন টাকাও ফেরত দিচ্ছে না। আমি তার বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেছি।

ওই এলাকার মদন চন্দ্র রায় বলেন, বিপুল কুমার রায়ের নাকি বাংলাদেশের সব মন্ত্রণালয়েই চাকরি দেয়ার লোক আছে। এই জন্য তিনি আমার ছেলেকে রেলওয়েতে চাকরি দেয়ার নাম করে ৫ লাখ টাকা নেন। এখন অনেক চেষ্টা করেও টাকা আদায় করতে পারছি না।

একই এলাকার অখিল বন্ধু নামে এক তরুণ বলেন, পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর (এসআই) পদে চাকরি দেয়ার কথা বলে ১৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা নিয়েছে বিপুল। আমি বিপুল কুমারকে বিশ্বাস করেই টাকা দিয়েছিলাম। তিনি আমাকে শতভাগ চাকরির নিশ্চয়তা দিয়েছিলেন। এখন চাকরিও নেই, টাকাও ফেরত দিচ্ছে না।

তার ফাঁদে ফেঁসেছেন বিপুল কুমার রায়ের সহকর্মী কৃষ্ণকুমার রায়ও। কৃষ্ণকুমার রায় ছেলের রেলওয়েতে চাকরির জন্য ১২ লাখ টাকা দিয়েছেন। এছাড়াও সেনাবাহিনীতে চাকরি দেয়ার নাম করে কৈলাশ চন্দ্র রায়ের কাছে টাকা নিয়েছেন ৬ লাখ।

দেবীগঞ্জ উপজেলার সুন্দরদিঘী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পরেশ চন্দ্র সরকার বলেন, আমার কাছে বিপুলের বিরুদ্ধে চাকরি দেয়ার নাম করে টাকা আত্মসাতের মৌখিক এবং লিখিত একাধিক অভিযোগ এসেছে। আমি বিপুলকে এ বিষয়ে বার বার নোটিশ করেছি; কিন্তু সে আসে না।

দেবীগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক মহিউদ্দিন সরকার বলেন, বিশ্বনাথ নামের এক ব্যক্তি বিপুলের বিরুদ্ধে সম্প্রতি টাকা আত্মসাতের মামলা করেন। মামলার প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে।

এ বিষয়ে বিপুল কুমার রায়ের কাছে জানতে চাইলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার নামে এসব মিথ্যে অভিযোগ করা হচ্ছে। এর বেশি তিনি কিছু মন্তব্য করতে রাজি হননি।

 

 

Bootstrap Image Preview