Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৬ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

আজকে জামিন পেলে কালকেই বিদেশ যাবেন খালেদা জিয়া: বিএনপির এমপি হারুনুর

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০১ অক্টোবর ২০১৯, ০৮:২০ PM
আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০১৯, ০৮:২০ PM

bdmorning Image Preview


বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া জামিনে মুক্তি পেলে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাবেন বলে জানিয়েছেন দলটির যুগ্ম মহাসচিব ও সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে (বিএসএমএমইউ) বিএনপি চেয়ারপারসনের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে তিনি এসব কথা বলেন।

এর আগে বিকাল ৪টার দিকে খালেদা জিয়ার সঙ্গে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের উকিল আব্দুস সাত্তার, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের হারুনুর রশীদ এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনের আমিনুল ইসলাম সাক্ষাৎ করেন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৬ জন নির্বাচিত হওয়ার পর তাদের এই প্রথম সাক্ষাৎ। তারা বেগম জিয়ার জন্য ফুলের তোড়া ও ফলমূলের একটি ঝুড়ি নিয়ে যান। সাক্ষাৎ শেষে হারুনুর রশীদ সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন।

অশ্রু সজল কন্ঠে হারুন বলেন, খালেদা জিয়ার অবস্থা খুব বেদনাদায়ক, খ্বুই পীড়াদায়ক এবং কষ্টদায়ক-এটি ভাষায় বর্ণনা করা যায় না। তার প্রতি সরকারের চরম জুলুমের বহিঃপ্রকাশ যা দেখেছেন তা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না।

তিনি বলেন, খালেদা জিয়া চরম অসুস্থ এবং হাত দিয়ে নিজের খাওয়া নিজে খেতে পারেন না, তার হাত কাঁপে। নিজের কাপড় নিজে পড়তে পারেন না। এই অবস্থায় তাকে বন্দি রাখা-এটা কত বড় অমানবিক। খালেদা জিয়া শুধু দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন।

এসময়ে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার বর্ণনা দিতে গিয়ে কাঁদেন দলীয় তিন এমপি। খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে চান কিনা প্রশ্ন করা হলে হারুন বলেন, খালেদা জিয়া চিকিৎসার সুযোগ পেলে তো অবশ্যই বিদেশ যাবেন। তিনি আজকে জামিন পেলে কালকেই বিদেশ যাবেন এবং যদি আজকে জামিন পায় তাহলে তার প্রথম অগ্রাধিকার হবে চিকিৎসা। তাহলে কালকেই দেখা যাবে যে, তিনি ভিসার জন্য আবেদন করবেন। যেরকম তার শারীরিক অবস্থা তাতে তার চিকিৎসা বাংলাদেশে বিশেষায়িত হাসপাতালে নেই। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তিন বারের সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে কেনো এই চিকিৎসার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে? এটা সারাদেশের মানুষ জানতে চায়।

সাংগঠনিক বিষয়ে কোনো আলাপ হয়েছে কিনা প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, তিনি দলের খোঁজ-খবর নিয়েছেন। গত একমাসে সারাদেশে বিভিন্ন বিভাগীয় সমাবেশের বিষয়ে তাকে বলা হয়েছে। সরকারের বাঁধা-বিপত্তির পরেও লক্ষ লক্ষ লোক ওইসব সমাবেশে যোগদান করেছে। তিনি শুধু বললেন, তোমরা সবাইকে নিয়ে দেখে-শুনে এক সঙ্গে থাকো। দেশে গণতান্ত্রিক অবস্থা ফিরে আসলে মানুষ যেন মুক্তভাবে চলাফেরা করতে পারে, তাদের ভোটাধিকার ফিরে পায় সেজন্য কাজ করো।

সংসদে যোগদান নিয়ে দলের ভেতরে বিভক্তি থাকলেও আপনারা আপনাদের নেত্রীর মুক্তির বিষয়টি সামনে রেখেই সংসদে গেছেন- এব্যাপারে সরকারের সঙ্গে কোনো কথা হয়েছে কি না বা কোনো বার্তা নিয়ে আপনারা এসেছেন কিনা প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, তারা সংসদে যোগদান করার পরে সংসদে যে ক’জন কথা বলার চেষ্টা করেছেন- তার মধ্যে নেত্রীর মুক্তির বিষয়টি অন্যতম ছিলো। দল নেতা হিসেবে ইতিমধ্যে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে দুই-এক জায়গায় কথাও বলেছেন, তার মুক্তির দাবিও জানিয়েছেন। এই ব্যাপারে আইনি ব্যাপার বলে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন তারা।

তিনি বলেন, দেশবাসীর উদ্দেশ্যে জানাচ্ছি, খালেদা জিয়ার জামিনের যে অধিকার, সেই অধিকার থেকে তাকে বঞ্চিত করা হয়েছে। যত দ্রুত সরকার জামিন দেবে আইনের শাসনের ক্ষেত্রে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।

সরকারের তরফ থেকে প্যারেলের কোনো প্রস্লাবনা আছে কিনা প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এই ধরনের কোনো প্রস্লাবনা নেই। প্যারেলের বিষয়টা আসবে কেনো?

প্রসঙ্গত, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় যথাক্রমে ১০ ও সাত বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছেন খালেদা জিয়া। গত দেড় বছর ধরে কারাগারে রয়েছেন তিনি। খালেদা জিয়াকে গত ১ এপ্রিল বিএসএমএমইউয়ে ভর্তি করা হয়।

Bootstrap Image Preview