‘স্যার, ধরা যখন পড়েছি, তখন আর চুপ থেকে ফায়দা কী। আমি সব বলব। কিন্তু আমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার কইরেন না। আমি একাই দোষী নই। সম্রাট ছাড়া কিভাবে ক্যাসিনো ব্যবসা হয়? কাউসার ও সাঈদও আমার সহযোগী। জি কে শামীমও এই কারবারে জড়িত। ক্যাসিনো মানে জুয়া খেলা। এখানে কাঁচা টাকা। শত শত কোটি টাকার খেলা। কাঁচা টাকা পেলে তহন সবাই হাত পাইতা দেয়। এই টাকার ভাগ পুলিশকে দিছি। পুলিশের বড় বড় স্যাররা নিছে। আমি যুবলীগের নেতা ছিলাম। সবার সঙ্গেই আমার সম্পর্ক ছিল। তাঁদের ধরেন। দেখবেন দেশে আর কেউ ক্যাসিনো কারবার করতে পারবে না…।’
গ্রেপ্তারের পর জেরার মুখে যুবলীগ নেতা খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া গড়গড় করে গোয়েন্দা পুলিশকে বলেছেন এই কথা। গ্রেফতারের পর এভাবেই চাঞ্চল্যকর সব তথ্য দিতে শুরু করেছেন যুবলীগের নেতা জি কে শামীম ও খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া।
এই ঘটনার পর তাদের দুজনকে দলীয় ভাবে বহিষ্কার করা হয়। তাদের ক্যাসিনো ব্যবসা, টেন্ডার ও চাঁদাবাজিসহ সেসব চাঁদার ভাগ কে কে পেতেন, তা নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন। গ্রেপ্তারকৃতরা রিমান্ডে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিতে শুরু করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। তাদের অপকর্মের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছে পুলিশ।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগ থেকে বহিষ্কৃত সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া র্যাবের হাতে গ্রেপ্তারের পর এখন ‘ক্যাসিনো খালেদ’ নামেই বেশি আলোচিত হচ্ছেন। ক্ষমতাসীন দলের সহযোগি সংগঠনের দায়িত্বশীল পদে থেকে, অপকর্মের মাধ্যমে শত কোটি টাকার মালিক খালেদের রাজনীতির হাতেখড়ি, ‘ফ্রিডম পার্টি’র হাত ধরে। ক্ষমতার পালাবদলে খোলনলচে পাল্টে যোগ দেন যুবলীগে এসে। গ্রেপ্তারের পর এখন একে একে বেরিয়ে আসছে তার অপকর্মের ফিরিস্তি।
র্যাবের লিগ্যাল এন্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক সারোয়ার বিন কাশেম বলেন, রাজধানীর কমলাপুরের অফিসে টর্চার সেলের সহযোগিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
‘টেন্ডার শামীম’ নামে পরিচিত জি কে শামীম গ্রেপ্তারের পর জানা যায়, তিনি নিজেই ১৪টি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের প্রায় তিন হাজার কোটি টাকার ঠিকাদারি করছেন।
ক্ষমতার পটপরিবর্তনে যুবদল থেকে আওয়ামী লীগে যোগ দেয়া শামীম নিজেকে পরিচয় দিতেন যুবলীগের সমবায় সম্পাদক হিসেবে।