নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের চরকাঁকড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইউপি কার্যালয়ে বিচারপ্রার্থী এক নারীকে আটকে রেখে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে। এ সময় নির্যাতিত ওই নারী বাম চোখে প্রচন্ড আঘাত পেয়েছেন।
পরে এ ঘটনায় নির্যাতনের শিকার সাবিনা ইয়াসমিন রিমি, কোম্পানীগঞ্জ থানায় ওই দিন রাতে চেয়ারম্যানসহ ৩জন অভিযুক্ত করে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
কিন্ত অভিযোগের চব্বিশ ঘন্টা অতিবাহিত হলেও নির্যাতিতার করা অভিযোগ মামলা হিসেবে নথিভুক্ত না করে উল্টো অভিযুক্ত চেয়ারম্যানের জিডি গ্রহণ করেছে পুলিশ।
ভুক্তভোগীর সাথে প্রতিবেদকের কথা হলে তিনি বলেন, আমরা গরীব বলে কি বিচার পাবো না ? তিনি আরো বলেন, তার দায়ের করা অভিযোগের প্রকৃত অর্থে কোন কার্যকারিতা নেই, বরং ওসি তার বিরুদ্ধে চেয়ারম্যানের জিডি গ্রহণ করেছেন।
নির্যাতিতা যে অভিযোগ করেছেন থানায় তার কোন লিখিত অনুলিপি পর্যন্ত তাকে দেয়নি পুলিশ। কারণ সে গণমাধ্যম কর্মীদের যেন কোন লিখিত অভিযোগ পত্র দেখাতে না পারে।
কিন্তু এত কিছুর পরও বিধিরাম, আজ দুপুরে খোদ ওসি নির্যাতিতার নারীর বাড়িতে গিয়ে চেয়ারম্যানের পক্ষে সাফাই গেয়ে নির্যাতিতাকে বলেন চেয়ারম্যানের বয়স হয়েছে তাকে ক্ষমা করে দেয়ার জন্য। তবে পুলিশ অন্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবে।
ওই নির্যাতিত রিমি জানান, চরকাঁকড়া ইউনিয়ন পরিষদের তথ্য সেবা কেন্দ্রের রিয়াদ, আমাদেরকে এলাকাছাড়া এবং মেরে লাশ ঘুম করে ফেলার হুমকি-ধামকি দিচ্ছে।
নির্যাতিতার অভিযোগ মামলা হিসেবে নথিভুক্ত না করার কারণ জানতে চাইলে কোম্পানীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আরিফুর রহমান বলেন, অভিযোগটির তদন্ত করতে এক এসআইকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে । তদন্ত শেষে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
একই সাথে চেয়ারম্যানের জিডি করার সত্যতাও নিশ্চিত করেছেন তিনি। তবে ওসি নির্যাতিত নারীকে অভিযোগ পত্র থেকে চেয়ারম্যানের নাম বাদ দেয়ার বিষয়ে তাঁর সাফাইয়ের অভিযোগ পুরোপুরি নাকচ করে দেন। তিনি বলেন আইন সকলের জন্য সমান তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পেলে মামলা হবে।
উল্লেখ্য, নির্যাতনের শিকার সাবিনা ইয়াসমিন রিমি জানান, গত আগস্ট মাসে বোর্ড অফিসের তথ্য সেবা কর্মকর্তা রিয়াদ তার ওপর হামলা চালায়। এ হামলার বিচারের দাবি করে, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করে।
গত রোববার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকালে ওই অভিযোগ পত্রে হামলার সত্যতার পক্ষে স্বাক্ষর নিতে ইউপি চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে গেলে চেয়ারম্যান তার স্বামী রিয়াদের পক্ষ নিয়ে প্রথমে তাকে এবং তার মাকে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করে, পরে মোটা একটি লাঠি দিয়ে তার চোখে আঘাত করে।
এরপর চৌকিদার আবদুরবসহ অজ্ঞাত এক যুবককে তার ওপর লেলিয়ে দেয়। চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে চৌকিদার আবদুরব ও অজ্ঞাত এক যুবক ওই নারীকে বেধড়ক মারধর করে।এখানেই শেষ নয়, নির্যাতনের শিকার ওই নারী এবং তার মাকে পরবর্তিতে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে প্রায় ৪ ঘন্টা আটকে রাখা হয়।