Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৬ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

ফেসবুকে স্কুলছাত্রীর সঙ্গে বন্ধুত্ব, ফ্ল্যাটে নিয়ে গণধর্ষণ

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০৭:৩২ PM
আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০৭:৩২ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত


আরিয়ান আহমেদের সঙ্গেও সেভাবে পরিচয় হয়েছিল এক স্কুলছাত্রীর। মেসেঞ্জারে কথোপকথনে খানিকটা ঘনিষ্ঠতাও গড়ে উঠেছিল। এরপর তাকে বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার জন্য সাধাসাধি শুরু করে আরিয়ান। রাজি হন স্কুলছাত্রীও। তাকে নিয়ে যাওয়া হয় ঢাকার উপকণ্ঠ আশুলিয়ার একটি ফাঁকা বাসায়। সেখানে কোমলপানীয়ের সঙ্গে নেশাজাতীয় দ্রব্য মিশিয়ে খাইয়ে তাকে অচেতন করা হয়। দু'দিন আটকে রেখে ধর্ষণ করা হয় কয়েকবার। ভিডিও ধারণ করে রাখা হয় পুরো ঘটনার।

পরে তা ছড়িয়ে দেওয়া হয় ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। কিশোরী এবং তার পরিচিতজনের কাছেও পাঠানো হয় আপত্তিকর ভিডিওটি। দুর্বিষহ হয়ে ওঠে তার জীবন।

এ ঘটনায় মামলা হলে সম্প্রতি পুলিশ ধর্ষক ও তার দুই সহযোগীকে গ্রেফতার করে। পরে আরিয়ান নিজের অপরাধ স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়। একটি মাদ্রাসা থেকে হাফেজি পাস করেছে সে। গ্রেফতারের আগে তার কর্মস্থল ছিল আশুলিয়ার একটি চীনা খাবারের রেস্তোরাঁ। ধর্ষণের শিকার কিশোরী সেগুনবাগিচার একটি স্কুলে দশম শ্রেণিতে পড়ে। তার বোন একজন পুলিশ সদস্য। তিনিই বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় মামলা করেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহবাগ থানার এসআই মনজুর হোসেন বলেন, গত ২৮ জুলাই রাতে স্কুলছাত্রীটি কাউকে কিছু না বলে তাদের সেগুনবাগিচার বাসা থেকে বের হয়। তাকে আশুলিয়ার আদর্শগ্রাম এলাকার একটি বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। বাসাটি আরিয়ানের বন্ধু মেহেদীর। সেখানেই ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। পুরো ঘটনা ভিডিও করে রাখা হয়। ধর্ষকের দুই বন্ধু বিপ্লব ও রিফাত এ কাজে সহায়তা করে। তাদেরও গ্রেফতার করা হয়েছে।

ধর্ষণের ফলে অসুস্থ হয়ে পড়া স্কুলছাত্রীকে ৩০ জুলাই বিকেল ৪টার দিকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে বাসার সামনে নামিয়ে দেওয়া হয়। লোকলজ্জার ভয়ে এ ঘটনা গোপন রাখেন পরিবারের সদস্যরা। আরিয়ানের সঙ্গেও যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় কিশোরী। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে আরিয়ান ও তার বন্ধুরা ফেসবুকে ভুয়া অ্যাকাউন্ট খুলে ২৫ আগস্ট বিকেল থেকে ধর্ষণের ভিডিও ছড়িয়ে দিতে থাকে। কিশোরীর ইনবক্সেও সেটি পাঠানো হয়। মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে সে। তার পরিবারও সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন হয়। সর্বশেষ আসামিরা তাদের হত্যার হুমকিও দেয়।

তদন্ত কর্মকর্তা জানান, আরিয়ান, বিপ্লব ও রিফাতকে গত শুক্রবার রাতে আশুলিয়া থেকে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা ওই কিশোরীকে ফাঁদে ফেলে ধর্ষণ ও ভিডিও ধারণের বিষয়টি পরিকল্পিত ছিল বলে স্বীকার করেছে। এ ভিডিও ধারণ দক্ষতার সঙ্গে করা হয়েছে। বিভিন্ন কোণ থেকে ক্যামেরা ব্যবহার করা হয়েছে। সবকিছু ছিল সাজানো গোছানো। ছিল পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা। আশঙ্কা করা হচ্ছে, এই ভিডিও হয়তো কোনো পর্নো সাইটে বিক্রির মতলব ছিল তাদের। এর আগেও তারা এমন কোনো ঘটনা ঘটিয়েছে কি-না, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

গ্রেফতারের পরদিন আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে আরিয়ান এত কিছু না বললেও মূল অপরাধের কথা স্বীকার করেছে। তার দুই সহযোগীর বয়স ১৮ বছর হলেও তারা স্কুলছাত্র- এ কারণে তাদের জবানবন্দি নেওয়া হয়নি। তবে তিনজনকেই কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।

মামলা হওয়ার পর ধর্ষণের শিকার কিশোরীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) নেওয়া হয়েছে। সেখানে তার ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে।

Bootstrap Image Preview