Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৬ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

‘কাশ্মীরের স্বাধীনতা ফিরিয়ে আনতে রক্তের শেষবিন্দু দিয়ে হলেও লড়াই চালিয়ে যাবে মুসলিম বিশ্ব’

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৮ আগস্ট ২০১৯, ০১:১৫ PM
আপডেট: ০৮ আগস্ট ২০১৯, ০১:১৫ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত


উগ্র হিন্দুত্ববাদী বিজেপি সরকার কর্তৃক ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলুপ্তির মাধ্যমে কাশ্মীরের বিশেষ স্বাতন্ত্র্য ও মর্যাদা কেড়ে নেয়ার তীব্র নিন্দা ও কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব ও হাটহাজারী মাদরাসার সহযোগী পরিচালক আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী।

মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) সংবাদ মাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে আল্লামা বাবুনগরী বলেন, ১৯৪৭ সালে জম্মু-কাশ্মীরকে ভারত সরকার কর্তৃক প্রদত্ত সনদ এবং সংবিধানের ৩৭০ ধারা; যার মাধ্যমে তাদের একটা স্বতন্ত্র এবং স্বায়ত্তশাসন ছিল;হিন্দুত্ববাদি বিজেপি সরকার গায়ের জোরে অস্ত্রেরমুখে এই সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে কাশ্মীরী মুসলমানের সে অধিকার কেড়ে নিয়েছে।

১৯৪৮ সালে জাতিসংঘের প্রস্তাবনায় স্পষ্ট বলা হয়েছে যে, কাশ্মীরের জনগণের মতামতের ভিত্তিতেই সেখানকার সমস্যার সমাধান করতে হবে। অথচ ভারত জাতিসংঘের এই প্রস্তাবকে লঙ্ঘন করে অস্ত্রের বলে পুরো কাশ্মীরকে জুলুমের রাজ্যে পরিণত করেছে।

অধিকৃত জম্মু-কাশ্মীরকে সাংবিধানিক বিশেষ মর্যাদাদান সম্বলিত ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলোপ এবং প্রশাসনিক বিভক্তিকরণের মাধ্যমে মোদি সরকার কাশ্মীরি জনগণের সাথে রাষ্ট্রীয় বিশ্বাসঘাতকতা ও প্রতারণা করেছে। মিখাইল গর্ভাচেভের আমলে যেভাবে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙ্গে খানখান হয়েছিল, মোদি সরকারের আমলে ভারতের সেই পরিণতি হতে যাচ্ছে। মোদি ভারতকে সোভিয়েত ইউনিয়নের পরিণতির দিকেই ঠেলে দিচ্ছে।

আল্লামা বাবুনগরী বলেন, অনতিবিলম্বে কাশ্মীরের মুসলমানদেরকে ঘিরে সকল অন্যায় ও দমনপীড়নমূলক পদক্ষেপ থেকে বিরত হয়ে কাশ্মীরী জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে।

স্বাধীনতা একটি ন্যায্য অধিকার। প্রতিষ্ঠিত যে কেহ স্বাধীনতা চাইতে পারে। এটা অন্যায়ের কিছু নয়।পৃথিবীর ইতিহাসে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জাতি গোষ্ঠীকে স্বাধীনতা দেয়া হয়েছে। কিন্তু ব্যতিক্রম শুধু কাশ্মীর। স্বাধীনতা চাওয়ার দরুন কাশ্মীরীদের উপর সূচনালগ্ন থেকেই অমানবিক নির্যাতন চালানো হয়েছে। বিশেষ করে মুসলমানের উপর।

১৯৪৮ সালের জাতিসংঘের প্রস্তাবকে লঙ্ঘন ও বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে অস্ত্রের বলে লাখ লাখ কাশ্মীরীকে হত্যা করা হয়েছে। কাশ্মীরী মুসলমানদের মানবাধিকার বলতে কিছুই বাকি নেই।ভারতীয় সেনা ও আধাসামরিক বাহিনী কাশ্মীরী মুসলমানদের উপর যে দমন-পীড়ন ও নির্দয় নিষ্ঠুরতা চালাচ্ছে বর্ণনা দেয়ার কোন ভাষা নেই।

কাশ্মীরী মুসলমানদের বুকফাটা কান্না আর আহাজারিতে আকাশ,বাতাশ ভারী হয়ে উঠেছে।কাশ্মীরী মুসলমানরা আজ মজলুম। মজলুমের বদ দুআ বড় শক্ত। এভাবে মুসলমানের উপর নির্যাতন চলতে থাকলে নির্যাতিত মুজলুম মুসলমানদের বদ দুআয় মোদি সরকারের রাজত্ব ভেঙে ছারখার হয়ে যাবে।

যখন তখন যাকে তাকে হত্যা, গ্রেফতার ও নির্যাতন করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে আমরা খবর পেয়েছি যে,বর্তমানে মোবাইল, ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ এবং সাংবাদিকদেরকে বের করে দিয়ে পুরো কাশ্মীরকে বিশ্ব থেকে আলাদা করে বর্বরতা চালাচ্ছে এই জালেম মোদি সরকার।

হুশিয়ারি উচ্চারণ করে আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, বিশ্বনবী (সাঃ)বলেছেন সকল মুসলিম একদেহ একপ্রাণের ন্যায়। শরীরের কোন অঙ্গ আঘাতপ্রাপ্ত হলে যেমন পুরো শরীরে ব্যথা অনুভব হয় ঠিক তদ্রুপ বিশ্বের কোন এক প্রান্তে একজন মুসলমানও যদি আঘাতপ্রাপ্ত হয় তাহলে বিশ্বমুসলিম এর ব্যথা অনুভব করে। কাশ্মীরের মুসলমানরা আমাদের ভাই। তাদের উপর অমানবিক নির্যাতন চালানো হবে আর বিশ্ব মুসলিম ঘরে বসে থাকবে তা কখনো হতে পারে না।

অনতিবিলম্বে যদি তাদের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিয়ে, তাদের উপর সকল প্রকারের নির্যাতন বন্ধ করে তাদের সকল অধিকার নিশ্চিত করা না হয় তাহলে রক্তের শেষবিন্দু দিয়ে হলেও কাশ্মীরী মুসলমানদের অধীকার আদায়ের জন্য বিশ্ব মুসলিম ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করে যাবে।বিশ্ব মুসলিম ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলনে নামলে এই উগ্র হিন্দুত্ববাদী বিজেপি সরকার মোদি খড়কুটোর ন্যায় ভেসে যাবে।

হেফাজত মহাসচিব বলেন, জুলুম নির্যাতনের স্টীম রোলার চালিয়ে কাশ্মীরী জনগণের ‘আজাদী’ আন্দোলনকে ভারত দীর্ঘ ৭০ বছরেও স্তিমিত করতে পারেনি, পারবেও না। বরং ভারতের নতুন এই হঠকারী সিদ্ধান্ত কাশ্মীরী জনগণের স্বাধীনতাধীকার আদায়ের আন্দোলনকে আরো বেগবান করবে, ইনশাআল্লাহ।

Bootstrap Image Preview