টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার মহেলা গ্রামের মোস্তফার বাড়িতে এখন অনেক মানুষের ভিড়। সকাল-বিকেলে অনেকেই আসছেন তার বাড়িতে। তিন বছর ধরে আদর-যত্নে বড় করা একটি গরু দেখতেই মোস্তফার বাড়িতে আসছেন তারা।
প্রায় ৩৫০ কেজি ওজনের এই গরু লম্বায় ৯ ফুট ১০ ইঞ্চি, উচ্চতায় ৫ ফুট ৯ ইঞ্চি। গরুটির রং কুচকুচে কালো। তাই নাম হয়েছে ‘কালা মানিক’।
রং মিস্ত্রি মোস্তফা তিন বছর আগে পাশের গ্রামের ওয়াশিমের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকায় ‘শাহীয়াল’ জাতের ওই গরুর বাছুরটি কিনে আনেন। অনেক কষ্ট করে স্ত্রী রাশিদাকে নিয়ে বাছুরটিকে বড় করেছেন।
মোস্তফা-রাশিদা দম্পতি ‘কালা মানিক’-এর মতো এত বড় গরু আশপাশের এলাকায় না থাকায় মানুষের আগ্রহের যেন শেষ নেই।
রাশিদা বেগম বলেন, ‘অনেক কষ্ট কইরা বাছুরটিকে বড় করছি। বুট, মাশ কলাই ও মসুরের ছোলা, কুড়া, খৈল, মোটা ভূসি, আলু, ভুট্রা, কাঁচা ঘাস নিয়মিত খায়। এ ছাড়া কলা, আপেল ও মালটা ট্যাহা অইলেই খাওয়াই। দিন-রাইতে পাঁচ-ছয়বার খাবার খাওয়ান লাগে।’
রাশিদা বেগম আরও বলেন, ‘গত চার মাস ধইরা প্রতিদিন ৬০০ টাকার খাবার লাগতাছে। দিনে দুই-তিনবার গরুটিকে গোসল করাইতে হয়। গরুর পানির জন্য মোটর ও বাতাসের জন্য ফ্যান গোয়াল ঘরে লাগাইছি। ঘরে-বাইরে আনা-নেওয়ার জন্য কয়েকজন মানুষ লাগে।’
গরু দেখতে আসা অনেকেই বলেন, বিশাল আকৃতির গরুটি লালন-পালন করতে তাদের অনেক কষ্ট হয়েছে। উপযুক্ত দাম পাওয়া উচিত।
গরুর দাম সম্পর্কে মালিক মোস্তফা বলেন, ‘বাড়িতে এসে অনেকেই দেখতাছে এবং দাম করতাছে। বাড়িতে বেচা না অইলে ঈদের দুই-তিন দিন আগে গরুটি নারায়ণগঞ্জে হাটে উডাবো। আশা করি, ১১-১২ লাখ ট্যাহায় বেচতো পারমু।’
মোস্তফা আরও বলেন, ‘আমার সন্তানের ল্যাহান গরুটিকে বড় করছি। বেচার ট্যাহা দিয়া আমার দুটি ছেলেরে ভালোভাবে পড়ামু, একটি ঘর দিমু এবং আরও কয়েকটি গরু কিনমু।’