Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৬ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

‘জমি দখলের জেরে স্থানীয় হিন্দু-মুসলমানদের হয়রানি করেন প্রিয়া’

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২০ জুলাই ২০১৯, ০৮:৫৫ PM
আপডেট: ২০ জুলাই ২০১৯, ০৮:৫৫ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত


মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে প্রিয়া সাহা যে অভিযোগ করেছেন তা তার নিজ স্বার্থ হাসিলের জন্য এবং উসকানিমূলক বলে মন্তব্য করেছেন পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অমূল্য রঞ্জন হালদার।

স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের কয়েকজনের ভাষ্য, প্রিয়া তার ভাইয়ের জমি নিয়ে বিরোধের জেরে স্থানীয় কয়েকজন হিন্দু ও মুসলমানকে হয়রানি করে আসছেন।

আজ শনিবার দুপুরে নাজিরপুর উপজেলা চেয়ারম্যান বলেন, ‘নাজিরপুরে কোনো সংখ্যালঘু নির্যাতন বা গুমের ঘটনা নেই। প্রিয়া সাহার বক্তব্য নিজ স্বার্থ হাসিলের জন্য ও উসকানিমূলক।’

প্রিয়া সাহা ওরফে প্রিয় বালা বিশ্বাস (৫৪) ‘শারি’ নামে বাংলাদেশের দলিত সম্প্রদায় নিয়ে একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার পরিচালক। তিনি বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক এবং ঢাকা থেকে প্রকাশিত ‘দলিত কণ্ঠ’ নামক একটি পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক।

প্রিয়া সাহা পিরোজপুর জেলার নাজিরপুর উপজেলার মাটিভাঙ্গা ইউনিয়নের চরবানিয়ারী গ্রামের মৃত নগেন্দ্র নাথ বিশ্বাসের মেয়ে। তার শ্বশুর বাড়ি যশোর জেলায়। তার স্বামী মলয় কুমার সাহা দুদকের সদর দপ্তরে সহকারি উপ-পরিচালক পদে কমর্রত রয়েছেন। তাদের বর্তমান ঠিকানা ঢাকার ধানমন্ডিতে। তার দুই মেয়ে প্রজ্ঞা পারমিতা সাহা ও ঐশ্বর্য লক্ষ্মী সাহা যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশুনা করেন।

উপজেলার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের কয়েকজন জানান, চলতি বছরের শুরুতে চরবানিয়ারিতে প্রিয়ার ভাই জগদীশ চন্দ্র বিশ্বাসের একটি অব্যবহৃত ঘরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।

প্রিয়া তার নিজ স্বার্থ হাসিলের জন্য তার ভাইয়ের জমি নিয়ে বিরোধের জেরে স্থানীয় কয়েকজন হিন্দু-মুসলমান সম্প্রদায়ের লোককে হয়রানি করে আসছেন। এই ঘটনাকে মিথ্যাভাবে সাজিয়ে তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সামনে উপস্থাপন করেছেন, তা মিথ্যা ও বানোয়াট।

প্রকৃতপক্ষে এ ঘটনায় স্থানীয় কয়েকজন নিরীহ হিন্দু সম্প্রদায়ের লোককে আসামি করে তিনি হয়রানি করছেন বলেও অভিযোগ তাদের। স্থানীয়রা আরও জানান, প্রিয়া সাহার দুই মেয়ে যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশুনা করার কারণে তাদের গ্রিনকার্ড পাইয়ে দেওয়া ও নিজে ওই দেশে রাজনৈতিক আশ্রয় পাওয়ার আশায় তিনি ট্রাম্পের কাছে এসব ভিত্তিহীন অভিযোগ করেছেন।

স্থানীয় মুসলমান-হিন্দুদের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানকে নষ্ট করার জন্যই উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে প্রিয়া সাহা এসব মিথ্যা কথা বলেছেন বলেও অভিযোগ করেন স্থানীয়রা।

এ ব্যাপারে পিরোজপুরের ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার মোল্লা আজাদ হোসেন বলেন, প্রিয়ার অভিযোগের বিষয়ে কোনো ঘটনা পিরোজপুর জেলার কোথাও ঘটেনি। পিরোজপুরের পুলিশ প্রশাসন সাম্প্রদায়িক যেকোনো বিষয়ে সবসময়ই গুরুত্বের সঙ্গে পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।

তিনি আরও বলেন, নাজিরপুর উপজেলায় বা পিরোজপুর জেলা কোথাও কোনো সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট হওয়ার ঘটনা ঘটেনি। ভবিষ্যতে কেউ চেষ্টা করলে পুলিশ প্রশাসন কঠোর হস্তে তা দমন করবে। দেশের বাহিরে গিয়ে যেকোনো নাগরিককের উচিত দেশের বিষয়ে ভেবে-চিন্তে কথা বলা।

বর্তমানে পিরোজপুরে অবস্থানরত গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী ও স্থানীয় সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট শ ম রেজাউল করিম বলেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। এখানে কেউ ধর্মীয় বিবেচনায় নির্যাতনের শিকার হন না। পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার মুসলাম-হিন্দুদের শান্তিপূর্ণ সহবস্থান একটি অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

নাজিরপুরে হিন্দু বা অন্য কোনো সম্প্রদায়ের লোক গুম বা নিখোঁজ হয়নি। প্রিয়া বালার বক্তব্য অসৎ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং সাম্প্রদায়িক সম্পর্ক নষ্টের উসকানিমূলক অপচেষ্টা ছাড়া আর কিছুই নয়, বলেন গণপূর্তমন্ত্রী।

Bootstrap Image Preview