Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৬ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

উদ্বোধনের আগেই দেবে যাচ্ছে চার লেনের ঢাকা-টাঙ্গাইল বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়ক

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৫ জুলাই ২০১৯, ০৯:২৪ PM
আপডেট: ১৫ জুলাই ২০১৯, ০৯:৪০ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত ছবি


ঢাকা-টাঙ্গাইল বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কের ৭০ কিলোমিটার চার লেনের সড়কটি উদ্বোধনের আগেই কিছু কিছু জায়গায় দেবে যেতে শুরু করেছে। আবার কোথাও কোথাও সড়কের মাঝখানে সৃষ্টিও হয়েছে বড় বড় গর্তের। উদ্বোধনের আগেই মহাসড়কের এমন বেহাল দশায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় জনগণসহ মহাসড়কে চলাচলকারী যানবাহনের চালকরা। এছাড়া মহাসড়কের দেবে যাওয়া অংশের সাথে বাকি অংশ মেলাতে গিয়ে উচু স্থান কেটে ফেলছে কর্তৃপক্ষ।

টাঙ্গাইল সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে জয়দেবপুর-চন্দ্রা-টাঙ্গাইল-এলেঙ্গা নির্মাণাধীন চার লেনের মহাসড়কটি আগামী বছরের জুনের মধ্যে উদ্বোধন হওয়ার কথা। ৭০ কিলোমিটার দীর্ঘ মহাসড়কটি নির্মাণ করছে সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তর। যার প্রতি কিলোমিটারের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৮ কোটি টাকারও বেশি।

সরেজমিন মহাসড়কে গিয়ে দেখা যায়, কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ডের পর থেকে ঢাকার দিকে (ডান পাশে) প্রায় পাঁচ কিলোমিটার সড়গ দেবে গেছে। এছাড়া সদর উপজেলার রসুলপুর সিএনজি পাম্পের সামনে কোথাও কোথাও গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। আবার উত্তর বঙ্গের দিকে (ডান পাশে) এলেঙ্গা বাস স্ট্যান্ড পর্যন্ত চার লেনের মহাসদক দেবে গেছে। এর মধ্যে কোথাও একটু বেশি আবার কোথাও একটু কম। এদিকে দেবে যাওয়া কয়েকটি স্থানে নতুন করে কার্পেটিং করে মেরামতও করা হয়েছে। তার চিহৃ এখনো রয়েছে।

সড়ক দেবে যাওয়ার এ সমস্যাকে প্রকৌশলীদের ভাষায় বলা হয় ‘রাটিং’। সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের আওতাধীন প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় সড়ক গবেষণাগারের প্রকৌশলীরা বলছেন, পিচের জন্য পাথর-বিটুমিনের যে মিশ্রণ তৈরি করা হয়, সেটি ঠিকমতো না হলে রাটিং বা সড়ক দেবে যেতে পারে। সড়ক দেবে যাওয়ার আরেকটি কারণ যানবাহনের ‘ওভারলোড’। এর বাইরে দুর্বল নকশা বা দুর্বল নির্মাণকাজের কারণেও সড়ক দেবে যেতে পারে বলে জানিয়েছেন তারা। এছাড়া মাটির ধাপগুলোতে ঠিকমতো রোলিংয়ের কাজ না করা হলেও ‘রাটিং’ দেখা দিতে পারে।

উত্তরবঙ্গগামী নাবিল পরিবহনের চালক মোঃ উজ্জল মিয়া জানান, বিভিন্ন স্থানে মহামড়ক এক পাশে দেবে যাচ্ছে। নিম্নমানের কাজের কারনেই দেবে যাচ্ছে বলে তিনি মনে করেন।

ঢাকাগামী বিনিময় পরিবহনের চালক আকবর হোসেন জানান, উদ্বোধনের আগেই মহাসড়ক এক পাশে দেবে যাওয়া খুবই দুঃখ্যজনক। ঠিকমত ভিটুমিন দিয়ে কাজ করলে হয়তো মহাসড়কটি আরো ভাল হতো। অল্পদিনেই এভাবে দেবে যাবে এটি তাদের ধারনার বাইরে।

এ মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করার প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদিত হয় ২০১৩ সালে। কাজ শুরু হয় ২০১৬ সালে। চার প্যাকেজে কাজ হচ্ছে। এর মধ্যে প্যাকেজ-৪-এ পড়েছে এলেঙ্গা-টাঙ্গাইলের ১০ কিলোমিটার। দক্ষিণ কোরিয়ার জিডিসিএলের এ অংশের নির্মাণকাজ করছে ঢাকার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ডিয়েনকো লিমিটেড। কাজের চুক্তিমূল্য ৩৫৬ কোটি টাকা।

দ্বিতীয় প্যাকেজে টাঙ্গাইল থেকে কালিয়াকৈর বাইপাস ইন্টারসেকশন পর্যন্ত আরো ১৯ কিলোমিটার নির্মাণ করছে বাংলাদেশের আব্দুল মোমেন লিমিটেড ও মালয়েশিয়ার এইচসিএম ইঞ্জিনিয়ারিং। তৃতীয় প্যাকেজে দুল্লামারী রোড থেকে টাঙ্গাইল পর্যন্ত ২২ দশমিক ৪০ কিলোমিটার মহাসড়ক চার লেনে উন্নয়ন করছে দক্ষিণ কোরিয়ার সামহোয়ান ও বাংলাদেশের মীর আখতার।

চার লেন প্রকল্পের ব্যবস্থাপক অমিত দেবনাথ জানান, মহাসড়কে যেসব স্থানে দেবে গেছে সে স্থানগুলো থেকে কার্পেটিং উঠিয়ে আবার নতুন করে করা হবে। আর মহাড়কে কোন নিম্নমানের কাজ হয়নি। দেবে যাওয়াটা অভারলোড় গাড়ি এবং গাড়িগুলো একপাশ দিয়ে চলাচলের কারনেই হয়েছে।

Bootstrap Image Preview