Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৭ শনিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

যৌতুক না পেয়ে স্ত্রীকে পিটিয়ে হত্যা করে ফাঁসিতে ঝুলালো স্বামী!

আবুল কালাম আজাদ, কুমিল্লা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ২৯ মে ২০১৯, ০৭:৩৯ PM
আপডেট: ২৯ মে ২০১৯, ০৭:৩৯ PM

bdmorning Image Preview
প্রতীকী


কুমিল্লার হোমনা উপজেলায় নাজমা আক্তার (২৮) নামে এক গৃহবধূকে হাত-পা বেঁধে পিটিয়ে শ্বাসরোধে করে হত্যা করেছে স্বামীসহ শশুরবাড়ির লোকজন।

মঙ্গলবার (২৮ মে) দিবাগত রাতে উপজেলার ঘাগুটিয়া ইউনিয়নের দূর্গাপুর গ্রামের মৃত মো. হোসেন মোল্লার বাড়িতে ঘটনাটি ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ আজ বুধবার সকালে নিহত গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমেক হাসপাতালে প্রেরণ করেছেন।

এ ঘটনা নিহতের বাবা বাদী হয়ে ৬ জনকে আসামি করে হোমনা থানায় মামলা করেন। মামলা নং ১২ তারিখ ২৯মে/১৯। এদিকে পুলিশ ১ জনকে গ্রেফতার করেছে।

মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ৬ বছর পূর্বে তিতাস উপজেলার কড়িকান্দি গ্রামের হাজী আব্দুস সালামের ছোট মেয়ে নাজমা আক্তারকে হোমনা উপজেলার ঘাগুটিয়া ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামের মৃত হোসেন মোল্লার ছেলে কথিত ডাক্তার মো. মাঈন উদ্দিনের সাথে বিয়ে দেওয়া হয়। সেসময় তাকে নগদ যৌতুকবাবদ প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা দেয়া হয়।

৬ বছরের সংসারে মাহিনুর আক্তার (৪) ও নোমান হাসান (৮ মাস) বয়সের দুটি সন্তান আছে। তবে দীর্ঘ ৬ বছরে যৌতুকলোভী স্বামী ও তার পরিবারের লোকজনের নির্যাতনের খড়গ থেকে কখনোই রেহাই পায়নি মা-হারা এতিম নাজমা আক্তার।

এরই মধ্যে মাইন উদ্দিন গোপনে পার্শবর্তী বাঞ্ছারামপুর উপজেলার বুধাইরকান্দি গ্রামের ছালমা আক্তার (২৯) নামে এক মেয়েকে বিয়ে করে। সেখানেও তার একটি ছেলে সন্তান জন্ম হয়। তবে ছালমা ও মাইন উদ্দিনের সংসার যৌতুকের জন্য ডিভোর্স হলেও ফের গত কয়েকমাস ধরে সেই দ্বিতীয়া স্ত্রী ছালমা ও মাইন উদ্দিনের অনৈতিক মেলামেশা গোপনে জমে উঠে এবং উভয়েই প্রকাশ্যে নাজমাকে পরিকল্পিতভাবে নির্যাতন করা শুরু করে।

পরে নাজমা ও তার পরিবারের কাছে মাইন উদ্দিন ১৬ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে। এত টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করাতেই গত ২৮ মে রাতে হাত-পা বেঁধে পিটিয়ে হত্যা করে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রাখে এবং মাইন উদ্দিন নিজেই নাজমার বাপের বাড়িতে ফোন দিয়ে জানায় সে আত্মহত্যা করেছে।

নিহত নাজমার বাবা ও মামলার বাদী হাজী আব্দুস সালাম বলেন, 'আমার মেয়েটি এতিম দেইখা জামাই যখন যা চাইছে তাই দিছি। গত কয়েকমাস ধরে আমার কাছে ১৬ লাখ টাকা দাবি করতেছে। আমি টাকা না দেয়ায় আমার মেয়েটারে এভাবে খুন করবো আমি ভাবতে পারি নাই। আমি আমার মেয়ে হত্যার খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।'

হোমনা থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সৈয়দ মো. ফজলে রাব্বি বলেন, নিহত গৃহবধূর পিতা বাদী হয়ে ৬ জনকে আসামি করে মামলা করেছে। গৃহবধূর সুরতহাল রিপোর্ট তৈরীর সময় শরীরের একাধিক স্থানে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। আমরা ১ জনকে গ্রেফতার করেছি। অন্য আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।

Bootstrap Image Preview