Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৬ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে দেশ দুর্নীতিতে ৫ বার চ্যাম্পিয়ান হয়েছে: তথ্যমন্ত্রী

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৮ মে ২০১৯, ০৭:৫৬ PM
আপডেট: ২৮ মে ২০১৯, ০৭:৫৬ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত ছবি


তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে দেশ দুর্নীতিতে পরপর ৫ বার চ্যাম্পিয়ান হয়েছে, তিনি কোনো পরীক্ষায় পাশ না করলেও দুর্নীতিতে ছিল ফার্স্ট। 

মঙ্গলবার (২৮ মে) দুপুরে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন সেমিনার হলে হাসুমণি’র পাঠশালা আয়োজিত শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন, বাংলাদেশের পুনর্জাগরণ গোলটেবিল আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বিএনপি’র সাম্প্রতিক একটি মন্তব্যের জবাবে তিনি একথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি নেতারা বলেছেন, অন্যায়ের সাথে আপোষ করলে বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে থাকতেন না। কিন্তু প্রকৃত সত্য হলো, তিনি যদি ন্যায়নিষ্ঠ থাকতেন, যদি অন্যায় না করতেন, তাহলে কারাগারে যেতেন না। ন্যায়নিষ্ঠ ছিলেন না বিধায়, বেগম খালেদা জিয়া আজকে কারাগারে। তিনি এতিমের টাকা আত্মসাৎ না করলে তো তার বিরুদ্ধে মামলাই হতো না।

১৯৮১ সালের ১৭ মে শেখ হাসিনার প্রত্যাবর্তনকে এদেশের পুনর্জন্মস্বরূপ উলে­খ করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যুগান্তকারী নেতৃত্বে বাংলাদেশের যে অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে, পাকিস্তান সেজন্য আফসোস করে আর ভারতের নেতৃবৃন্দ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জাতিসংঘের মহাসচিব, বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ও প্রধান অর্থনীতিবিদ তার প্রশংসা করে বলেন, বাংলাদেশ যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে এটি একটি উদাহরণ। বিশ্ব গণমাধ্যমে বাংলাদেশকে নিয়ে নিবন্ধ লেখা হয়।

শুধু বিএনপি’র নেতৃবৃন্দ এবং জ্ঞানী বলে পরিচিত কয়েকজন এগুলোর কিছুই দেখতে পায়না’ উলে­খ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘মির্জা ফখরুল ইসলাম, রিজভী আহম্মেদের বক্তব্য শুনতে পান যে দেশের কিছুই হয়নি। সমস্ত পৃথিবী প্রশংসা করছে, কিন্তু তারা প্রশংসা করতে পারছেন না।

আজকে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু তারা যখন মতা ছিলেন তারা করতে পারেনি কেন? দেশের অগ্রগতিকে তারা পরিণত করেছিল ঘুর্ণায়মান চাকায় আর জননেত্রী শেখ হাসিনা সেই চাকাকে নেতৃত্ব ও কর্মনিষ্ঠা দিয়ে ধাবমান চাকায় রূপান্তরিত করেছেন। দেশের উন্নয়ন আজ ধাবমান গতিতে এগিয়ে চলেছে।

খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে দেশ দুর্নীতিতে পরপর ৫ বার চ্যাম্পিয়ান হয়েছে, কোনো পরীক্ষায় পাশ না করলেও দুর্নীতিতে ছিল ফার্স্ট’ উলে­খ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘তাদের সময় দেশ দুর্নীতিতে ৪ বার এককভাবে চ্যাম্পিয়ান, ১ একবার যুগ্মচ্যাম্পিয়ান আফ্রিকার একটি দেশের সাথে। শুধুমাত্র দুর্নীতি নয়, দুঃশাসন ও সমান্তরাল সরকার ব্যবস্থা চালু করেছিল তারা।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে একটি সরকার পরিচালিত হতো, আর একটি হাওয়া ভবন থেকে পরিচালিত হতো। হাওয়া ভবন ছিল দুর্নীতি আর কমিশনের জন্য, আর একটি ছিল খোয়াব ভবন ফুর্তি করার জন্য। এই কারণে তারা দেশকে এগিয়ে নিতে পারে নাই।

গাধা জল ঘোলা করে খায়-এমন উদাহরণ টেনে ড. হাছান বলেন, ‘বিএনপি সবসময় দাবি দেয়। গত নির্বাচনের আগে প্রথমে দাবি দিয়েছিল, নির্বাচন পেছাতে হবে, তারপর নির্বাচন কমিশন বদলাতে হবে, তার নির্বাচনে তারা অংশগ্রহণ করবেন না। তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলেন এবং জোটগতভাবে বিএনপি ৬ ও ঐক্যফ্রন্ট ২, মোট ৮ জন জয়যুক্ত হন।

তারা বললেন শপথ গ্রহণ করবেন না। এখন দেখা গেল তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করল, জয়যুক্ত হবার পর শপথও গ্রহণ করল। একটি কথা আছে গাধা জল ঘোলা করে খায়। বিএনপির ক্ষেত্রে নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করা, শপথ না নেবার বাহনা এগুলো সবই সেই জল ঘোলা করে খাবার মতো।

মন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি এখনকার দাবি মধ্যবর্তী নির্বাচন। আমি বিএনপিকে অনুরোধ করে বলবো বাংলাদেশের নির্বাচন হয় সংবিধান অনুযায়ী ৫ বছর পর। আজ থেকে সাড়ে চার বছর পর বাংলাদেশে যথাসময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

গত দু’টি নির্বাচন আপনাদের ভুল সিদ্ধান্তের কারণে আপনারা জনগণ থেকে যোজন যোজন দূরে চলে গেছেন। আমি আপনাদের অনুরোধ জানাবো আগামী সাড়ে চার বছর ধরে আপনাদের দলকে সংগঠিত করুন। যারা দুর্নীতির দায়ে, সন্ত্রাসের দায়ে শাস্তিপ্রাপ্ত তাদেরকে আপনাদের নেতৃত্ব থেকে অপসারণ করে দলের নেতৃত্বে তৈরি করুন আর অপরাজনীতি পরিহার করুন।

তাহলে বিএনপি আবার ঘুরে দাঁড়াতে পারবে বলে আমি আশা করি। দেশের স্বার্থে, দেশের উন্নয়ন অগ্রগতির স্বার্থে একসাথে কাজ করুন। অবশ্যই আপনারা সমালোচনা করবেন। আমরা চাই আমাদের সমালোচনা করুন। সমালোচনা কাজকে পরিশীলিত করে।

গত ৩৮ বছরে শেখ হাসিনাকে ১৯ বার হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছে’ স্মরণ করে ড. হাছান বলেন, তিনি বারবার মৃত্যুর কোল থেকে, মৃত্যু উপত্যকা থেকে আলোর দীপ্ত পথধারীর মতো ভয়কে জয় করে বাংলাদেশের মানুষের অধিকার আদায়ে ফিরে এসেছেন। জননেত্রী শেখ হাসিনা একটি প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত হয়েছেন। তিনি শুধুমাত্র বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি কিংবা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীই নন, তিনি বিশ্বসভায় একজন অতুলনীয় প্রধানমন্ত্রী।

তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা: মো: মুরাদ হাসান বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যাবর্তন ছিল মুক্তিযুদ্ধের ও গণতন্ত্রের চেতনার প্রত্যাবর্তন। তার এ প্রত্যাবর্তনই এদেশকে গণতন্ত্র আর উন্নয়নের পথ দেখিয়েছে। এই পথে অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে চলতে সকল ষড়যন্ত্র ও অন্যায়কে রুখে দিতে হবে।

হাসুমণি’র পাঠশালা’র সভাপতি মারুফা আক্তার পপি’র সভাপতিত্বে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান ও দৈনিক সমকালের সহযোগী সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধ অজয় দাশগুপ্ত, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের চলচ্চিত্র ও টিভি বিভাগের অধ্যাপক জুনায়েদ হালিম ও প্রগতিশীল শিক্ষার্থীরা সভায় বক্তব্য দেন।

Bootstrap Image Preview