Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৭ শনিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় র‌্যাংকিং ২০১৯ : সেরা যে ২০ বিশ্ববিদ্যালয়

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৫ মে ২০১৯, ০৫:৪৫ PM
আপডেট: ২৫ মে ২০১৯, ০৫:৪৫ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত


দেশের প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিগুলোর র‌্যাংকিং নির্ধারণ করে ফল প্রকাশ হয়েছে। বাংলা ট্রিবিউন ও ঢাকা ট্রিবিউনের যৌথ উদ্যোগে প্রকাশিত এই র‌্যাংকিং গবেষণাটি পরিচালনা করেছে গবেষণা প্রতিষ্ঠান ওআরজি কোয়েস্ট রিসার্চ লিমিটেড। ২০১৯ সালে করা র‍্যাংকিংয়ে শীর্ষস্থানে রয়েছে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি। দ্বিতীয় স্থানে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি ও তৃতীয় স্থানে রয়েছে ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি।

প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি র‍্যাংকিং ২০১৯-এ শীর্ষ ২০ টি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি- 

১. নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি (স্কোর: ৭৭.১১)

১৯৯২ সালে প্রতিষ্ঠিত নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের প্রথম বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। অধ্যাপক আতিক ইসলাম বর্তমান উপাচার্য। ২০০৯ সালে বিশ্ববিদ্যালয়টি  বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ১২ লাখ বর্গফুট আয়তনের স্থায়ী ক্যাম্পাসে স্থানান্তরিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়টির মোট শিক্ষার্থী  সংখ্যা ২০ হাজার ২৫  জন এবং ফ্যাকাল্টি সংখ্যা ৭৩৭ জন।

২. ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি (স্কোর: ৭৫.৬৩)

বিশ্বের সবচেয়ে বড় এনজিও ব্র্যাক, তারাই এই ইউনিভার্সিটি প্রতিষ্ঠা করে ২০০১ সালে। অধ্যাপক ড. ভিনসেন্ট চ্যাং  ব্র্যাক  বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপাচার্য। ব্র্যাক  বিশ্ববিদ্যালয় মহাখালীর বীর উত্তম এ কে খন্দকার সড়কে কয়েকটি ভবনে শিক্ষা কার্যক্রম চালায়। বিশ্ববিদ্যালয়টির স্থায়ী ক্যাম্পাস ঢাকার মেরুল বাড্ডায় ৫ একর জমিতে নির্মিত হচ্ছে এবং এটি চালুর সম্ভাব্য সাল ২০২০। ১৬টি বিষয়ে স্নাতক , ১৮টি বিষয়ে   স্নাতকোত্তর  ও চারটি বিষয়ে ডিপ্লোমাসহ মোট ৩৮টি অ্যাকাডেমিক প্রোগ্রাম রয়েছে এখানে। বিশ্ববিদ্যালয়টির মোট শিক্ষার্থী  সংখ্যা ৮ হাজার ৩০৩  জন এবং শিক্ষক সংখ্যা ৭৫৭ জন। শিক্ষার্থীদেরকে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সাভার আবাসিক ক্যাম্পাসে বাধ্যতামূলক একটি সেমিস্টার সম্পন্ন করতে হয়।  

৩. ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি (স্কোর: ৭১.১৭)

১৯৯৬ সালে প্রতিষ্ঠিত এই বিশ্ববিদ্যালয়টি বাংলাদেশের সবচেয়ে পুরনো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে অন্যতম। ড. এমএম শহীদুল হাসান ইস্ট ওয়েস্টের বর্তমান উপাচার্য। শুরুর দিকে ভাড়া করা ভবনে শিক্ষা কার্যক্রম চালু করে ইস্ট ওয়েস্ট। ২০১২ সালে ৪ লাখ ৬০ হাজার বর্গফুটের স্থায়ী ক্যাম্পাসে কার্যক্রম চালু হয়। ক্যাম্পাসটি আফতাবনগরে অবস্থিত। ১৫টি ডিপার্টমেন্টের অধীনে ১৪টি বিষয়ে স্নাতক  ও ১৩টি বিষয়ে স্নাতকোত্তর  কোর্স অফার করে থাকে   ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি। এখানে শিক্ষার্থী  সংখ্য ১১ হাজার ৯৩৫  জন এবং শিক্ষক সংখ্যা ৪০১ জন।

৪. ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ  (স্কোর: ৭০.২১)

ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি স্থাপিত হয় ১৯৯৩ সালে। অধ্যাপক মিলান পেগান বিশ্ববিদ্যালয়টির বর্তমান ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য। ১৯ টি বিভাগে ২৯ টি বিষয়ে স্নাতক  ও ১৫টি বিষয়ে  স্নাতকোত্তর কোর্স অফার করে থাকে  আইইউবি। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় তিন একর জায়গার ওপর। স্থায়ী ক্যাম্পাস চালু হয় ২০১০  সালে। বিশ্ববিদ্যালয়টির মোট শিক্ষার্থী  সংখ্যা ৬ হাজার ৯৩৫  জন এবং ফ্যাকাল্টি সংখ্যা ৪৬৬ জন ।

৫. আহসানউল্লাহ ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (স্কোর: ৬৮.০০)

অলাভজনক প্রতিষ্ঠান ঢাকা আহসানিয়া মিশন এই ইউনিভার্সিটি প্রতিষ্ঠা করে ১৯৯৫ সালে। ইউনিভার্সিটির শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হয় তেজগাঁওয়ের ১.৬ একরের স্থায়ী ক্যাম্পাসে। ড. এএমএম সাফিউল্লাহ বর্তমান উপাচার্য। আহসানউল্লাহ ইউনিভার্সিটি আটটি স্নাতক  কোর্স অফার করে থাকে।  ইউনিভার্সিটির একটি কারিগরি শিক্ষা ইনস্টিটিউটও আছে যেখানে সাতটি ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপ্লোমা ডিগ্রি দেওয়া হয়। তাদের শিক্ষার্থী  সংখ্যা ৭ হাজার ৬৯  জন এবং শিক্ষক সংখ্যা ৪৮২  জন।

৬. আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ (স্কোর: ৬৫.১৫)

বিশ্ববিদ্যালয়টি স্থাপিত হয় ১৯৯৪ সালে। ড. কারমেন জেড লামাগনা বর্তমান উপাচার্য। ১৮টি বিভাগের অধীনে প্রতিষ্ঠানটি ২৩টি বিষয়ে স্নাতক  ও ১৪টি বিষয়ে স্নাতকোত্তর প্রোগ্রাম চালু আছে।  কুড়িলের কুড়াতলি রোডে ১৩ লাখ বর্গ ফুট অবকাঠামোগত জায়গা নিয়ে  স্থায়ী ক্যাম্পাস অবস্থিত। শিক্ষার্থী  সংখ্যা ৯ হাজার ৭৬২  জন ও ফ্যাকাল্টি সংখ্যা ৩৬৩ জন।

৭. ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (স্কোর: ৬৫.১৪)

ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি কার্যক্রম শুরু করে ২০০২ সালে। ইউনিভার্সিটি হিসেবে আত্মপ্রকাশের পূর্বে প্রতিষ্ঠাতাদের ড্যাফোডিল ইন্সটিটিউট অব ইনফরমেশন টেকনলজি নামে একটি প্রতিষ্ঠান ছিল। বর্তমান উপাচার্য ড. ইউসুফ মাহবুবুল ইসলাম। বিশ্ববিদ্যালয়টি শুরু থেকেই তথ্য প্রযুক্তি ভিত্তিক শিক্ষা প্রদান করে। ১০ লাখ ৮৫ হাজার বর্গফুট জায়গা নিয়ে সাভারের আশুলিয়ায় এই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস অবস্থিত। ধানমন্ডির মিরপুর রোডে ড্যাফোডিল টাওয়ারে ক্লাস হয়। ২৩টি বিভাগের অধীনে ২০টি বিষয়ে স্নাতক  ও আটটি বিষয়ে স্নাতকোত্তর কোর্স অফার করে থাকে  ড্যাফোডিল।  এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী  সংখ্যা ১৮ হাজার ২৯০  জন এবং মোট শিক্ষক সংখ্যা ৭৫৮  জন।

৮. ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (স্কোর: ৬৫.১২)

ইউআইইউ প্রতিষ্ঠিত হয় ২০০৩ সালে। বর্তমান উপাচার্য ড. চৌধুরী মফিজুর রহমান । ১০টি বিষয়ের ওপর ১৩টি অ্যাকাডেমিক প্রোগ্রাম পরিচালনা করে থাকে ইউআইইউ। যার মধ্যে সাতটি স্নাতক  ও ছয়ট স্নাতকোত্তর । ধানমন্ডিতে তাদের দুটি ক্যাম্পাস রয়েছে। সাত মসজিদ রোডে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ক্যাম্পাস অবস্থিত। যার আয়তন ৮০ হাজার বর্গফুট। বাড্ডার সাতারকুলের ইউনাইটেড সিটিতে ইতোমধ্যে একটি স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মিত হয়েছে এবং এই বিশ্ববিদ্যালয় স্থায়ী ক্যাম্পাস এখানে শিফট করেছে ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ।  মোট শিক্ষার্থী  সংখ্যা ৬৫৮৬  জন ও শিক্ষক সংখ্যা ২৯৪  জন।

৯. ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ (স্কোর: ৬৩.৬৮)

ইউল্যাবের যাত্রা শুরু ২০০৪ সালের অক্টোবর মাসে। এই র‍্যাংকিংয়ের শীর্ষ দশে অবস্থানকারী ইউনিভার্সিটির মধ্যে এটির বয়স সবচেয়ে কম। অধ্যাপক এইচ এম জহিরুল হক বর্তমান উপাচার্য। ২০০৬ সালে ধানমন্ডিতে নিজেদের ভবনে কার্যক্রম শুরু করে ইউল্যাব। ২০০৮ সালে একই এলাকায় আরেকটি নিজস্ব ভবন যুক্ত হয় দ্বিতীয় ক্যাম্পাস হিসেবে। মোহম্মাদপুরের রামচন্দ্রপূরে ৩ লাখ ৮১ হাজার ৮২৯ বর্গফুট অবকাঠামোগত স্পেসসহ কয়েক একর জায়গার ওপর একটি স্থায়ী ক্যাম্পাসে তাদের কার্যক্রম শিফট করেছে ইউল্যাব। ইউল্যাব ছয়টি বিষয়ে স্নাতক  ও চারটি বিষয়ে স্নাতকোত্তর কোর্স অফার করে থাকে । তাদের শিক্ষার্থী  সংখ্যা ৪ হাজার ৫৬৪  জন এবং ফ্যাকাল্টি সংখ্যা ২৮৩ জন  ।

১০. দ্য ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক (স্কোর: ৬০.২৮)

ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৯৬ সালে। ফার্মগেটে ৩০০২১৯ বর্গফুট অবকাঠামোগত স্পেস নিয়ে  নিজস্ব ক্যাম্পাসে এটি শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য জামিলুর রেজা চৌধুরী। তারা আটটি স্নাতক  ও নয়টি বিষয়ে স্নাতকোত্তর কোর্স অফার করে  থাকে। এখানে মোট শিক্ষার্থী  সংখ্যা ৫ হাজার ৪৫৬  জন ও ফ্যাকাল্টি সংখ্যা ২৭৫ জন।

১১. ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটি চট্টগ্রাম (আইআইইউসি) (স্কোর: ৫৯.০৩)

অলাভজনক সংস্থা ইসলামিক ইউনিভার্সিটি চট্টগ্রাম ট্রাস্ট (আইইউসিটি) ১৯৯৫ সালে  বিশ্ববিদ্যালয়টি স্থাপন করে। প্রতিষ্ঠার সময় এর নামকরণ করা হয় ইসলামিক ইউনিভার্সিটি চট্টগ্রাম হিসেবে এরপর ২০০০ সালে নাম পরিবর্তন করে ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটি চট্টগ্রাম  (আইআইইউসি) করা হয়। প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান উপাচার্য হলেন অধ্যাপক কে এম গোলাম মহিউদ্দিন। চট্টগ্রামের কুমিরায় অবস্থিত ৬ লাখ  ১৩ হাজার ৯১৫  বর্গফুটের অবকাঠামো নিয়ে গড়ে ওঠা এই  বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ৩৯২ জন শিক্ষক কর্মরত এবং দেশ-বিদেশের ৯ হাজার ৫৯০ জন শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত রয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়টি বর্তমানে ১০ টি স্নাতকোত্তর, ১২ টি স্নাতক এবং ২ টি ডিপ্লোমা কোর্স অফার করে থাকে।

১২. সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটি (স্কোর: ৫৬.৯৬)

২০০২ সালে প্রতিষ্ঠিত সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটির বর্তমান উপাচার্য হলেন অধ্যাপক ড. এএনএম মেশকাত উদ্দিন। তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলে বিশ্ববিদ্যালয়টির স্থায়ী ক্যাম্পাস অবস্থিত। প্রতিষ্ঠানটি বেশ কিছু সংখ্যক স্নাতক, স্নাতকোত্তর ও ডিপ্লোমা কার্যক্রম প্রদান করে থাকে। বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদ, ব্যবসায়িক শিক্ষা অনুষদ এবং কলা ও সমাজবিজ্ঞান অনুষদে বিভাজিত এই বিশ্ববিদ্যালয়টিতে বর্তমানে ১০ হাজার ২৭৯ জন শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত আছেন যাদের শিক্ষাদান করছেন ৪৮৩ জন শিক্ষক।

১৩. স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটি (স্কোর: ৫৬.৫৫)

২০০২ সালে স্থাপিত এই প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশের প্রথম আইএসও সনদপ্রাপ্ত বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়টির বর্তমান উপাচার্য হচ্ছেন অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী নকি। ঢাকায় একাধিক ভবনবিশিষ্ট এই বিশ্ববিদ্যালয়টি ইংরেজি, কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশলবিদ্যা, ব্যবসায় প্রশাসন, আইন, ফার্মেসি, মাইক্রোবায়োলজি, পরিবেশ বিজ্ঞান, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, ইলেকট্রিকাল এন্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং, স্থাপত্যবিদ্যা, ফিল্ম এন্ড মিডিয়া স্টাডিস, অর্থনীতি, জার্নালিজম এন্ড মিডিয়া স্টাডিস, লোকপ্রশাসন বিদ্যার মতো শিক্ষা কার্যক্রমগুলো প্রদান করে থাকে। স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটি খুব শিগগিরই মুগদা’র গ্রিন মডেল টাউনে অবস্থিত স্থায়ী ক্যাম্পাসে স্থানান্তরিত হবে। প্রতিষ্ঠানটিতে ৭ হাজার ৬৫৪ জন শিক্ষার্থী এবং ৩৯৩ জন শিক্ষক রয়েছেন।

১৪. বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এন্ড টেকনোলজি (বিইউবিটি) (স্কোর: ৫৪.৪২)

২০০৩ সালে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এন্ড টেকনোলজি’র বর্তমান উপাচার্য হলেন অধ্যাপক মোহাম্মদ আবু সালেহ। ব্যবসা, প্রকৌশল, ফলিত বিজ্ঞান, কলা ও মানবিক, সামাজিক বিজ্ঞান এবং আইন – এই পাঁচ অনুষদে বিভক্ত বিশ্ববিদ্যালয়টির স্থায়ী ক্যাম্পাস তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলে অবস্থিত। প্রতিষ্ঠানটিতে ৮ হাজার ৫৪৩ জন শিক্ষার্থী এবং ৩০০ জন শিক্ষক রয়েছেন।

১৫. ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি (স্কোর: ৫৩.৪৪)

ঢাকার ধানমন্ডিতে অবস্থিত ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি ২০০৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ উপাচার্য অধ্যাপক ড. শহীদ আক্তার হোসেন বিশ্ববিদ্যালয়টির বর্তমান উপাচার্য হিসেবে কর্মরত আছেন। এটি চারটি অনুষদে বিভাজিত – কলা অনুষদ, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ, প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদ এবং আইন অনুষদ। উল্লেখ্য, এ বিশ্ববিদ্যালয়টির নতুন বিভাগ হিসেবে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং ইউজিসির অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট শিক্ষার্থী সংখ্যা ৩ হাজার ৫১৮ জন এবং শিক্ষক সংখ্যা ১৯৭ জন।

১৬. নর্দার্ন ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ (স্কোর: ৫২.৩৮)

ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস এগ্রিকালচার এন্ড টেকনোলজি (আইবিএটি) ট্রাস্ট কর্তৃক ২০০২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় নর্দার্ন ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ। অধ্যাপক  ড. আনোয়ার হোসেন প্রতিষ্ঠানটিতে বর্তমানে উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করছেন। উত্তরায় অবস্থিত এই বিশ্ববিদ্যালয়টি ব্যবসা, বিজ্ঞান ও প্রকৌশল, কলা ও মানবিক, আইন এবং স্বাস্থ্য বিজ্ঞান – এই ৫টি অনুষদে বিভক্ত। শিক্ষা কার্যক্রমের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটি নানাবিধ পাঠ সহায়ক কার্যক্রমের আয়োজন করে থাকে। এতে ৬ হাজার ১৬০ জন শিক্ষার্থী এবং ২৬৭ জন শিক্ষক রয়েছেন।

১৭. ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অফ বিজনেস এগ্রিকালচার এন্ড টেকনোলজি (আইইউব্যাট) (স্কোর: ৫১.৮০)

এটি বাংলাদেশের প্রথম বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। ১৯৮৯ সালে প্রথম পরিকল্পনা শুরু হওয়ার দু’বছর পর ১৯৯১ সালে এই বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। অধ্যাপক মো.আলিমুল্লাহ মিয়া এ বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠাতা করেন এবং তিনিই বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রথম উপাচার্য। ২০১৭ সালের ১০ মে তার মৃত্যু হয়। বর্তমানে অধ্যাপক ড. আব্দুর রব উপ-উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। উত্তরা মডেল টাউনে স্থায়ী ক্যাম্পাস গড়ে তোলা এই বিশ্ববিদ্যালয়টি’র ৭টি কলেজ এবং ৯টি কেন্দ্র রয়েছে। এখানে ৮ হাজার ৬৬০ জন শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত এবং ৩০৬ জন শিক্ষক কর্মরত রয়েছেন।

১৮. ইউনিভার্সিটি অফ ডেভেলপমেন্ট অলটারনেটিভ (ইউডা) (স্কোর: ৪৯.৯৪)

২০০২ সালে প্রতিষ্ঠিত ইউডা’র উপাচার্য হলেন অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম শরীফ। এই বিশ্ববিদ্যালটির ক্যাম্পাস ধানমন্ডিতে অবস্থিত এবং এতে ছয়টি অনুষদ রয়েছে – কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ, আইন ও মানবাধিকার অনুষদ, যোগাযোগ ও মিডিয়া স্টাডিজ অনুষদ, বিজ্ঞান ও বিজ্ঞান অনুষদ এবং লাইফ সাইন্স অনুষদ। এখানে বর্তমানে ৩ হাজার ৫৩৫ জন শিক্ষার্থী এবং ২৫৫ জন শিক্ষক রয়েছেন।

১৯. গ্রিন ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ (জিইউবি) (স্কোর: ৪৯.৫৯)

একটি বিশ্বমানের উচ্চশিক্ষার পীঠস্থান প্রতিষ্ঠার লক্ষে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বিধি ১৯৯২ এর অধীনে ২০০৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় গ্রিন ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ। অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ গোলাম সামদানী ফকির এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিতে বর্তমানে ভাইস-চ্যান্সেলরের দায়িত্ব পালন করছেন। বিজ্ঞান, কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এবং আইন অনুষদ ও আরও ৫টি কেন্দ্র নিয়ে এই বিশ্ববিদ্যালয়টি গড়ে উঠেছে। এর বর্তমান শিক্ষার্থী সংখ্যা ৩ হাজার ৮৫ এবং শিক্ষক সংখ্যা ২১৪ জন।

২০. মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (এম.আই.ইউ.) (স্কোর: ৪৯.৫১)

২০০১ সালে প্রতিষ্ঠিত মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে হাফিজুল ইসলাম মিয়া ভারপ্রাপ্ত ভাইস-চ্যান্সেলর হিসেবে বর্তমানে কর্মরত আছেন। এই বিদ্যাপীঠটি সাতটি বিভাগের অধীনে ২টি স্নাতকোত্তরসহ সর্বমোট ৯টি কার্যক্রম প্রদান করে থাকে। এছাড়া প্রতিষ্ঠানটির ২টি কেন্দ্রও রয়েছে। এখানে ২ হাজার ৮৩৬ জন শিক্ষার্থী ও ১০৪ জন শিক্ষক রয়েছেন।

বাংলাদেশে বর্তমানে ১০১টি প্রাইভ্টে ইউনিভার্সিটি রয়েছে। এই গবেষণার মূল লক্ষ্য হলো এই ইউনিভার্সিটিগুলোকে একটি র‍্যাংকিংয়ের আওতায় আনা। ৬৫টি ইউনিভার্সিটিকে এই গবেষণার আওতাভুক্ত করা হয়নি। এরমধ্যে ৪১টি ইউনিভার্সিটিতে এখনও কোনও সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়নি, ১২টি ইউনিভার্সিটিতে ছাত্রভর্তি-প্রক্রিয়ায় ইউজিসির নিষেধাজ্ঞা রয়েছে, ৮টি  ইউনিভার্সিটিতে এখনও শিক্ষা-কার্যক্রম শুরু হয়নি, ৩টি ইউনিভার্সিটি বিশেষায়িত ইউনিভার্সিটি  হিসেবে পরিচিত এবং একটিতে শিক্ষার্থী সংখ্যা ১ হাজারের নিচে থাকায় এসব ইউনিভার্সিটিকে বাদ দিয়ে বাকি ৩৬টির মধ্যে র‍্যাংকিংয়ের গবেষণাটি পরিচালিত হয়। ফ্যাকচুয়াল, পারসেপচুয়াল ও এই দু’টির স্কোরের সমন্বয়ে চূড়ান্ত র‍্যাংকিং নির্ধারণ করা হয়েছে।

পুরো প্রক্রিয়াটি আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে সম্পন্ন করা হয়। এই গবেষণার সমন্বিত ফলে দেখা গেছে, প্রথম স্থানে রয়েছে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি, দ্বিতীয় স্থানে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি, তৃতীয় স্থানে ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি, চতুর্থ স্থানে ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি, পঞ্চম স্থানে আহসানউল্লাহ ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি, ষষ্ঠ স্থানে আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ, সপ্তম স্থানে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, অষ্টম স্থানে ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, নবম স্থানে ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ ও দশম স্থানে দ্য ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক রয়েছে।

ফ্যাকচুয়াল স্কোর নির্ণয়ে বিবেচ্য হয়েছে, শিক্ষার্থী সংখ্যা, শিক্ষক, পিএইচডি ডিগ্রিধারীদের সংখ্যা, গবেষণায় খরচ ইত্যাদি। এই তথ্যগুলো নেওয়া হয়েছে সরাসরি ইউনিভার্সিটিগুলোর কাছ থেকে। যেসব ইউনিভার্সিটি তথ্য সরবরাহ করেনি, কেবল সেসব ইউনিভার্সিটির ক্ষেত্রে ইউনিভার্সিটি গ্র্যান্ড কমিশনের ২০১৭ সালের প্রতিবেদন থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। ফ্যাকচুয়াল তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি ফ্যাকচুয়াল র‍্যাংকে সবার শীর্ষে অবস্থান করছে, দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, তৃতীয় স্থানে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি, চতুর্থ স্থানে ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস ও পঞ্চম স্থানে আছে ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি-বাংলাদেশ।

পারসেপচুয়াল স্কোরগুলো নেওয়া হয়েছে অ্যাকাডেমিক (ডিন, বিভাগীয় প্রধান, অধ্যাপক, রেজিস্ট্রার) ও চাকরিদাতাদের কাছ থেকে। তারা বিভিন্ন সূচকে নিজেদের স্কোর দিয়েছেন। যেমন, শিক্ষার পরিবেশ, বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামো, শিক্ষকদের মান, চাকরিক্ষেত্রে পাস করা শিক্ষার্থীদের কর্মদক্ষতা, নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা, যোগাযোগ দক্ষতা ইত্যাদি। পারসেপচুয়াল র‍্যাংকে দেখা যায়, নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি সবার শীর্ষে অবস্থান করছে। এছাড়া দ্বিতীয় স্থানে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি, তৃতীয় স্থানে ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি, চতুর্থ স্থানে আহসানউল্লাহ ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি ও পঞ্চম স্থানে রয়েছে ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ।

‘ফ্যাকচুয়াল স্কোর’ করা হয়েছে কয়েকটি ক্যাটাগরির ওপর। যেমন­ মোট শিক্ষার্থী সংখ্যা, লাইব্রেরিতে বইয়ের সংখ্যা, গবেষণা ব্যয়, পিএইচডি ডিগ্রিধারীদের সংখ্যা, ক্যাম্পাসের আয়তন, শিক্ষার্থী-শিক্ষক অনুপাত, পূর্ণকালীন শিক্ষকের হার, গবেষণাপত্রের সংখ্যা।

এসব ক্যাটাগরিতে দেখা যায়, গবেষণা ব্যয়ে সবাইকে ছাড়িয়ে গেছে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি। তাদের বাৎসরিক গবেষণায় ব্যয় ৪৮.২৩ কোটি টাকা। যেখানে দ্বিতীয় স্থানে থাকা ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ ব্যয় করেছে ৭.৬৬ কোটি টাকা। এছাড়া ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি ব্যয় করেছে ৫.০৪ কোটি টাকা, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ব্যয় ৪.৩৪ কোটি টাকা। শীর্ষ পাঁচের পাঁচ নম্বরে থাকা নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির গবেষণা ব্যয় ৩.৯৮ কোটি টাকা।

গবেষণাপত্র প্রকাশের ক্ষেত্রে শীর্ষে আছে  ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশন্যাল ইউনিভার্সিটি। বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রকাশিত গবেষণাপত্রের সংখ্যা  ৫৩৪টি। দ্বিতীয় স্থানে থাকা  ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির প্রকাশনার সংখ্যা  ৩২৩টি। তৃতীয় স্থানে থাকা  নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাপত্রের সংখ্যা  ২৯৩টি। এই তালিকায় চতুর্থ ও পঞ্চম স্থানে আছে যথাক্রমে  ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস ও  সাউথ ইস্ট ইউনিভার্সিটি, যাদের গবেষণাপত্রের সংখ্যা যথাক্রমে  ২৭৫ ও  ২৪৯টি।

শিক্ষার্থী সংখ্যায় এগিয়ে রয়েছে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি। তাদের শিক্ষার্থী সংখ্যা ২০ হাজার ২৫ জন। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, তাদের রয়েছে ১৮ হাজার ২৯০ জন শিক্ষার্থী। এছাড়া শিক্ষার্থী সংখ্যায় তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম স্থানে যথাক্রমে রয়েছে সাউথ ইস্ট ইউনিভার্সিটি, শিক্ষার্থীসংখ্যা-১১ হাজার ৯৩৫ জন, স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটি, শিক্ষার্থীসংখ্যা-১০ হাজার ২৭৯ জন ও আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি-বাংলাদেশ, শিক্ষার্থীসংখ্যা-৯ হাজার ৭৬২ জন।

লাইব্রেরিতে বইয়ের সংখ্যার দিক থেকে এবার শীর্ষে আছে ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটি চট্টগ্রাম। তাদের লাইব্রেরিতে বইয়ের সংখ্যা ৮০ হাজার ৬১০টি। আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের লাইব্রেরিতে আছে ৬০ হাজার ৬৭৮টি। নর্দার্ন ইউনিভার্সিটির লাইব্রেরিতে বইয়ের সংখ্যা ৫৫ হাজার ৯৯০টি। স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটির লাইব্রেরিতে বইয়ের সংখ্যা ৫৩ হাজার ৯৯৮টি এবং নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির লাইব্রেরিতে বইয়ের সংখ্যা ৫২ হাজার ৭৬৯টি।

শিক্ষার মান ও গবেষণার মান নিশ্চিত করার জন্য পিএইচডিপ্রাপ্ত শিক্ষকের গুরুত্ব রয়েছে ইউনিভার্সিটিতে। নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে পিএইচডি ডিগ্রিধারী শিক্ষকের সংখ্যা  ৪০৩ জন, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটিতে রয়েছে ১৯৫ জন, ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটিতে ১৭০ জন, ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটিতে রয়েছেন ১৫৩ জন, এবং ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে পিএইচডিপ্রাপ্ত শিক্ষকের সংখ্যা ১৩৪ জন।

মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিতকরণে শিক্ষার্থী-শিক্ষক অনুপাত একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এই সূচকে শীর্ষে আছে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি। এই বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ছাত্র-শিক্ষকের অনুপাত ১০.৯৭ : ১। ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অলটারনেটিভ (ইউডা) এই তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে আছে। তাদের ছাত্র-শিক্ষকের অনুপাত ১৩.৮৬: ১। এই তালিকায় তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম স্থানে আছে যথাক্রমে গ্রিন ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ, আহসানউল্লাহ ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি এবং ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ। এই তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ে  প্রত্যেক শিক্ষকের বিপরীতে ছাত্রসংখ্যা ১৪ জনেরও বেশি।

অন্যদিকে উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, পূর্ণকালীন শিক্ষকের হারে সেরা পাঁচের মধ্যে থাকতে পারেনি কয়েকটি শীর্ষ ইউনিভার্সিটি। এই তালিকায় শীর্ষে আছে ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজি। এই প্রতিষ্ঠানে পূর্ণকালীন শিক্ষকের হার ৯৬.৪১% (পূর্ণকালীন ৩০৬ জন, খণ্ডকালীন ১১ জন)। দ্বিতীয় স্থানে আছে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজি। এই প্রতিষ্ঠানে পূর্ণকালীন শিক্ষকের হার ৯০.৩৩% (পূর্ণকালীন ৩০০ জন, খণ্ডকালীন ২৯ জন)। তৃতীয় স্থানে থাকা আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে এই হার ৮৯.২৬% (পূর্ণকালীন ৩৬৩ জন, খণ্ডকালীন ৩৯ জন)। ৮২.৭৫% পূর্ণকালীন শিক্ষক নিয়ে চতুর্থ স্থানে আছে ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অলটারনেটিভ, যাদের পূর্ণকালীন শিক্ষকের সংখ্যা ২৫৫ জন ও খণ্ডকালীন শিক্ষকের সংখ্যা ৪৪ জন। এই তালিকায় পঞ্চম স্থানে আছে আহসানউল্লাহ ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি। যেখানে পূর্ণকালীন শিক্ষকের হার ৮১.১২% (পূর্ণকালীন ৪৮২ জন, খণ্ডকালীন ৯১ জন)।

পারসেপচুয়াল ডাটা দু’টি উৎস থেকে নেওয়া হয়েছে। প্রথমত, অ্যাকাডেমিক; দ্বিতীয়ত চাকরিদাতা।

ক. শিক্ষকদের ধারণা জরিপ: এই জরিপে অংশগ্রহণ করেন ইউনিভার্সিটির ডিন, বিভাগীয় প্রধান, রেজিস্ট্রার ও সিনিয়র শিক্ষকরা। শিক্ষকদের কাছে জানতে চাওয়া হয়, তাদের ধারণামতে ‘শিক্ষা ও কাজের পরিবেশ, অবকাঠামো–শ্রেণিকক্ষ, লাইব্রেরি, ল্যাব ও অন্যান্য সুবিধা, শিক্ষকদের দক্ষতা, শিক্ষার্থীদের মান ও পাসকৃত শিক্ষার্থীদের মান’ এসব মানদণ্ডে কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কোর কেমন। তাদের দেওয়া স্কোর অনুযায়ী, এসব ক্ষেত্রে শীর্ষ পাঁচ ইউনিভার্সিটি হচ্ছে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি, আহসানউল্লাহ ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি, ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি ও ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি।

শিক্ষকরা ছয়টি মানদণ্ডেই ঘুরেফিরে এই পাঁচটি ইউনিভার্সিটিকেই সেরা পাঁচে রেখেছেন।

এরমধ্যে শিক্ষা ও কাজের পরিবেশের মাণদণ্ডে শীর্ষ পাঁচের ক্রম হচ্ছে—১. নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি, ২. আহসানউল্লাহ ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি, ৩. ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি, ৪. ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি ৫. ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি।

সার্বিক সুখ্যাতির মানদণ্ডের বিচারে পাঁচটি ইউনিভার্সিটি হচ্ছে যথাক্রমে, নর্থ সাউথ, ব্র্যাক, আহসানউল্লাহ, ইস্ট-ওয়েস্ট ও ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি।

শিক্ষকদের দক্ষতার মানদণ্ডে দেশের সেরা পাঁচটি প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি হচ্ছে যথাক্রমে নর্থ সাউথ, ব্র্যাক, আহসানউল্লাহ ইউনিভার্সিটি, ইন্ডিপেনডেন্ট ও ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি।

অবকাঠামোর বিচারেও নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি সেরা। দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ  ইউনিভার্সিটি  হচ্ছে যথাক্রমে আহসানউল্লাহ, ইস্ট ওয়েস্ট ও ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি। এই মানদণ্ডে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান পাঁচ।

পাস করা মানের দিক থেকে দেশের সেরা পাঁচটি প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি হচ্ছে যথাক্রমে নর্থ সাউথ, ব্র্যাক, আহসানউল্লাহ, ইস্ট ওয়েস্ট, ইন্ডিপেনডেন্ট এবং আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ। অন্যদিকে, কেমন ছাত্রভর্তি করা হচ্ছে এই মানদণ্ডে শীর্ষ পাঁচ ইউনিভার্সিটি হচ্ছে নর্থ সাউথ, আহসানউল্লাহ, ব্র্যাক, ইস্ট ওয়েস্ট, ইন্ডিপেনডেন্ট ও আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ।

খ. চাকরিদাতাদের ধারণা জরিপ: ইউনিভার্সিটি থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের চাকরি দেয় এমন প্রতিষ্ঠানগুলোর মানবসম্পদ বিভাগের ব্যবস্থাপকরা। ছয়টি মানদণ্ডে তাদের প্রতিষ্ঠানগুলোকে স্কোর দিতে বলা হয়। এই ছয়টি মানদণ্ড হচ্ছে, শিক্ষাদানে ইউনিভার্সিটির  খ্যাতি, চাকরিক্ষেত্রে পাস ব্যক্তিদের পারফরম্যান্স, উত্তীর্ণদের  উদ্যোগ নেওয়ার ক্ষমতা, যোগাযোগ ক্ষমতা, টিমওয়ার্ক ক্ষমতা, সমস্যা সমাধানের ক্ষমতা। প্রাপ্ত স্কোর থেকে দেখা যায়, চাকরিদাতারা সবক’টি মানদণ্ডে যথাক্রমে নর্থ সাউথ, ব্র্যাক, ইস্ট ওয়েস্ট, আহসানউল্লাহ ও ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটিকে শীর্ষ পাঁচে রেখেছেন।

২০১৭ সালের র‍্যাংকিংয়ের তুলনায় যা যা পরিবর্তন হয়েছে

২০১৭ সালের র‍্যাংকিংয়ের সঙ্গে এ বছরের র‍্যাংকিংয়ের তুলনা করলে দেখা যায়, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটিকে পেছনে ফেলে এক নম্বরে উঠে এসেছে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি। ফ্যাকচুয়াল স্কোরে বিশ্ববিদ্যালয়টি শীর্ষস্থানে না থাকলেও পারসেপচুয়াল স্কোরে নর্থ সাউথ শীর্ষে রয়েছে। নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় গত বছরও পারসেপচুয়াল স্কোরে প্রথম হয়েছিল।

এ বছরে নর্থ সাউথ ও ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির চূড়ান্ত স্কোরে পার্থক্য খুব কম। ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি ফ্যাকচুয়াল স্কোরে সামান্য ব্যবধানে এবারও প্রথম হয়েছে; যেখানে গত বছরের র‍্যাংকিংয়ে ব্র্যাক উল্লেখযোগ্য স্কোর পার্থক্যে প্রথম হয়েছিল। ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি গত বছরের সপ্তম অবস্থান থেকে এ বছর তিন নম্বর অবস্থানে চলে এসেছে। এটা সম্ভব হয়েছে ফ্যাকচুয়াল স্কোরে উন্নতির কারণে। এরপরের অবস্থানগুলোতে আছে ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ, আহসানউল্লাহ ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি, আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি লিবারেল আর্টস অব বাংলাদেশ ও এশিয়া প্যাসিফিক ইউনিভার্সিটি । এই ইউনিভার্সিটিগুলো গত বছরের র‍্যাংকিংয়েও প্রথম দশের মধ্যেই ছিল।

প্রথম দশের সবক’টি ইউনিভার্সিটিই ৬০-এর বেশি স্কোর (মোট স্কোর ১০০) পেয়েছে, যেখানে ২০১৭ সালের র‍্যাংকিংয়ে সেরা দশে থাকতে ৫৬.৪৭ স্কোর-ই যথেষ্ট ছিল। সেরা বিশের বাকি দশটি অবস্থানে থাকা (১১ থেকে ২০) ইউনিভার্সিটিগুলো স্কোর পেয়েছে ৫০ থেকে ৫৯-এর মধ্যে। ড্যাফোডিল গত বছরের তুলনায় তিন ধাপ এগিয়েছে আর ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল এগিয়েছে এক ধাপ। এ বছরই র‍্যাংকিংয়ে প্রথম যুক্ত হওয়া চট্টগ্রামের ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটি তালিকায় ১১ নম্বর অবস্থানে এসেছে।

মূলত ফ্যাকচুয়াল স্কোরে ভালো করার কারণে গ্রিন ইউনিভার্সিটি গত বছরের র‍্যাংকিংয়ের তুলনায় আট ধাপ সামনে এসেছে; অন্যদিকে সাউথ ইস্ট ইউনিভার্সিটি ও বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজি এগিয়েছে যথাক্রমে সাত ও ছয় ধাপ। অন্যান্য ইউনিভার্সিটির মধ্যে স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটি ও মানারাত ইউনিভার্সিটি সামান্য কয়েক ধাপ সামনে এগিয়েছে। অন্যদিকে ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলভমেন্ট অলটারনেটিভ ও নর্দান ইউনিভার্সিটি কয়েক ধাপ পিছিয়েছে।

ইউনিভার্সিটি র‍্যাংকিং প্রকল্প পরিচালিত হয়েছে উপদেষ্টা কমিটির তত্ত্বাবধানে। কমিটির সদস্যরা হলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. আহমেদ আবদুল্লাহ জামাল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব স্ট্যাটিসটিক্যাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিংয়ের অধ্যাপক ড. আজমেরি খান, ওআরজি কোয়েস্টের চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর মনজুরুল হক, বাংলা ট্রিবিউনের সম্পাদক জুলফিকার রাসেল, ঢাকা ট্রিবিউনের সম্পাদক জাফর সোবহান, প্রথম আলোর হেড অব রিপোর্টার শরিফুজ্জামান পিন্টু, ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেটিক্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের প্রধান নির্বাহী সাঈদ আহমেদ।

Bootstrap Image Preview