বেশ কিছুদিন ধরেই রাস্তায় ফিটনেসবিহীন গাড়ি না চালানোর নির্দেশ দিয়ে যাচ্ছেন আইন শৃঙ্খলা-বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সদস্যরা। প্রতিবছর ফিটনেসবিহীন গাড়ি আর অপেশাদার চালকের কারণে সড়কে প্রাণহানি বেড়ে যায় এ আশঙ্কা থেকেই মূলত এই সতর্কতা দেওয়া হয়।
কিন্তু কে শুনে কার কথা। ঈদ সামনে রেখে অনুমোদন ও ফিটনেসবিহীন গাড়ি, অদক্ষ ও অপেশাদার চালক দ্বারা গাড়ি চালানোর পরিমাণ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঈদে গাড়ির সংকট কাজে লাগিয়ে রাস্তায় নামে এসব ফিটনেসবিহীন গাড়ি। রাস্তায় দুর্ভোগসহ শত শত প্রাণহাণি ঘটলেও আক্ষেপ নেই গাড়ির মালিকদের।
গাড়ির সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় ফিটনেসবিহীন গাড়ি সড়কে চলছে দেদারছে। তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে চলেন। একারণে মাঠ পর্যায়ে যারা আছেন তাদের পক্ষে লক্কর ঝক্কর গাড়ি ধরা সম্ভব হয় না। ব্যবস্থা নিতে পারে না লাইসেন্সবিহীন চালকদের বিরুদ্ধে। এসব গাড়ি এবং ড্রাইভারদের ধরলে উল্টো সমস্যা হয় দায়িত্বে থাকা ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের।
উল্লেখ্য, নরসিংদীতে মনিটরিংয়ের অভাবে ঈদে কতগুলো আনফিট গাড়ি পুনরায় মেরামত করে আবারো রটে নামানো হয় তার কোন হিসেব নাই কারো কাছে। ফলে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা, অকালে ঝড়ে যাচ্ছে মানুষের প্রাণ, পঙ্গু হয়ে জীবনযাপন করছে অনেকেই। এরপরও থেমে নেই অতি মুনাফালোভী বাস মালিকরা। এরা ঈদের সময় অতিরিক্ত যাত্রী বহন করে, বাড়তি আয় করতে দীর্ঘদিনের পুরানো অকেজো পড়ে থাকা বাসগুলো মেরামত ও রং-চোঙ করে রাস্তায় নামাচ্ছে। এসব বাস ঘন ঘন রাস্তায় বিকল হয়ে পড়ায় ভোগান্তিতে পড়ছে যাত্রীরা।
খোঁজ নিতে গিয়ে দেখা গেছে, ঈদকে সামনে রেখে নরসিংদী সাহেবপ্রতাপে হঠাৎ কিছু রঙ মাখানো বাসের দেখা মিলে। এসব গাড়ির বেশিরভাগই লক্কর-ঝক্কর মার্কা ফিটনেস বিহীন। রঙ মাখলেও এসব বাসের কোনটির গ্লাস ভাঙ্গা, কোনটির লুকিং গ্লাস নাই, কোনটির সামনের পিছনের বাম্পার খোলা, কোনটির জানলার কাঁচ অর্ধভাঙ্গা হয়ে ঝুলে আছে, কোনটির বডি দুমড়ানো-মুচরানো। বৃষ্টি এলেই পানি পড়ে যাত্রীদের শরীর ভীজে যায়।
গাড়ির মালিক ও পরিবহন নেতারা বলেন, গাড়ির জালানী এবং যন্ত্রাংশের দাম বেড়ে যাওয়ায় এ ব্যবসায় বেশি লাভ হচ্ছে না। দুই ঈদ এবং পুজার সময় যাত্রীদের চাপ বেড়ে গাড়ির সংকট দেখা দেয়। এসময় একটু বাড়তি আয় করতে পুরাতন গাড়িগুলো ঠিক করে রাস্তায় নামানো হয়। এতে যাত্রী সেবাও হলো আমাদের ইনকামও হলো। এছাড়া গাড়ির ফিটনেস থাকলেও রোডে পুলিশকে টাকা দিতে হয়। টাকা না দিলে পুলিশ নানা ধরনের হয়রানি করতে থাকে। ফলে গাড়িগুলো কোন রকম জোড়া তালি দিয়ে চালানো ছাড়া কোন উপায় নেই।