Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৬ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

১৫ টাকার ওষুধ ৬০০, কান্নায় ভেঙে পড়লেন রিকশাচালক

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৯ মে ২০১৯, ১০:৩৩ PM
আপডেট: ১৯ মে ২০১৯, ১০:৩৩ PM

bdmorning Image Preview


ঝিনাইদহ সদর হাসপাতাল এলাকায় ইচ্ছেমতো দাম রাখা হচ্ছে সকল প্রকার ওষুধের। ২৫ টাকার ইফিডিন ইনজেকশন তিনশ টাকা থেকে পনেরশ' টাকা বিক্রি হচ্ছে। বিশেষ করে সিজারিয়ান ওষুধগুলোর গলাকাটা হারে দাম নেয়া হচ্ছে। তিন ফার্মেসিকে পঞ্চাশ হাজার টাকা জরিমানাও করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।

এভিডিল নামের একটি ওষুধের দাম মাত্র ২৫ টাকা। অথচ এই ওষুধের দাম রাখা হয় ৩০০ থেকে ৫৭০ টাকা পর্যন্ত। কখনো ৬০০ টাকাও রাখা হয়। সোলাস নামের বিদেশি একটি ওষুধের দাম রাখা হয় ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। অথচ সোলাস ওষুধের দাম মাত্র ১৫ টাকা।

রবিবার (১৯ মে) দুপুরে সদর হাসপাতাল সংলগ্ন শহরের হামদহ এলাকার মাতৃছায়া ফার্মেসি, পান্না ফার্মেসি ও সিদ্দিক ফার্মেসি থেকে নাড়ু গোপাল, সিরাজ উদ্দিন ও নাসির বিশ্বাস নামের তিন ব্যক্তি এভিডিল ও সোলাস ওষুধ কিনতে যান।

এ সময় তাদের কাছ থেকে ২৫ টাকার এভিডিল ওষুধের দাম ৩০০ টাকা এবং ১৫ টাকার সোলাস ওষুধের দাম ৬০০ টাকা রাখে তিন ফার্মেসি। ওষুধের দাম অতিরিক্ত রাখায় কান্নায় ভেঙে পড়েন নাড়ু গোপাল ও নাসির বিশ্বাস।

ঠিক ওই মুহূর্তে ওসব ফার্মেসিতে গিয়ে হঠাৎ হাজির হন ভ্রাম্যমাণ আদালত। ওষুধের দাম অতিরিক্ত রাখার প্রমাণ হাতেনাতে পান ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাত্রাতিরিক্ত দাম রাখার দায়ে তিন ফার্মেসিকে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে এক মাস করে কারাদণ্ড দেয়া হয়। তবে ফার্মেসি মালিকরা অপরাধ স্বীকার করে জরিমানা দিয়েছেন।

দুপুরে ঝিনাইদহ র‌্যাব-৬ (সিপিসি-২) এর সহযোগিতায় ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবু সালেহ মোহাম্মদ হাসনাতের নেতৃত্বে পরিচালিত হয় এ ভ্র্যাম্যমাণ আদালত।

ফার্মেসিতে চড়া মূল্যে ওষুধ কেনার বিষয়ে রিকশাচালক সিরাজ উদ্দিন বলেন, আমার সিজারিয়ান রোগীর জন্য রিকশা বিক্রি করে ওষুধ কিনতে ফার্মেসিতে যাই। কিন্তু কত কি দাম ওষুধের তা সঠিক জানি না। তারা যে টাকা বলেছেন সেটাই দিয়েছি। বুঝতে পারিনি ১৫ টাকার ওষুধের দাম ৬০০ টাকা রাখবে তারা।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবু সালেহ মো. হাসনাত বলেন, ফার্মেসিগুলোতে ভোক্তা অধিকার আইনের ৪০ ধারা লঙ্ঘন করে চড়া দামে ওষুধ বিক্রি করা হচ্ছে এমন খবর পেয়ে অভিযান চালানো হয়। কয়েকটি ফার্মেসিতে গিয়ে সত্যতা ও হাতেনাতে প্রমাণ পাওয়ায় জেল-জরিমানা করা হয়।

এ দিকে একই সময়ে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে অভিযান চালিয়ে ৫ দালালকে আটক করে তাদের বিভিন্ন মেয়াদে জেল জরিমানা করা হয়।

দণ্ডিত দালালরা হচ্ছে- সদর উপজেলার আড়পাড়া গ্রামের জলিল মালিতার ছেলে সজল মালিতা (৩০), পূর্ব নারায়ণপুর গ্রামের তাসেম আলীর ছেলে জামিরুল ইসলাম (৩৫), দুর্গাপুর গ্রামের আইয়ুব হোসেনের ছেলে রানা (২৫), কালীগঞ্জ উপজেলার কোলা গ্রামের ভোলার ছেলে সুজন হোসেন (২৮) ও সদর উপজেলার ধোপাবিলা গ্রামের ছবেদ আলীর ছেলে সানাউল্লাহ (৪৫)।

র‌্যাব-৬’র কোম্পানী কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম জানান, ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে সেবা নিতে আসা রোগিরা দালালদের খপ্পরে পড়ে প্রতারিত হচ্ছে- এমন অভিযোগে দুপুরে র‌্যাবের একটি দল সেখানে অভিযান চালায়। এ সময় এসময় ৫ জনকে আটক করা হয়।

পরে আদালত বসিয়ে অভিযোগ স্বীকার করলে সজল, জামিরুল, রানা ও সুজন হোসেনকে ৫ দিন করে কারাদণ্ড ও ২শ' টাকা করে জমিনারা এবং সানাউল্লাহকে ২শ' টাকা জরিমানা করা হয়।

Bootstrap Image Preview