টাঙ্গাইলে সেলিম মিয়া (৩৫) নামের এক রোজাদার রিকশাচালককে জনতার সামনে পেটানোর ঘটনায় পুলিশের সেই ড্রাইভারকে (কনস্টেবল) ক্লোজ করা হয়েছে।
গত সোমবার (১৩ মে ) রাতে গাড়ি চালক আবুল খায়েরকে ক্লোজ করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়। এছাড়া ঘটনায় ১ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। অপরদিকে আহত রিকশাচালক সেলিম মিয়ার (৩৫) চিকিৎসার ব্যয়ভারের দায়িত্ব নিয়েছেন পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায়।
মঙ্গলবার দুপুরে পুলিশ সুপারের সভাকক্ষে ওই রিকশাচালককে নগদ ১০ হাজার টাকা তুলে দেন পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায়। আহত ওই রিকশা চালক টাঙ্গাইল সদর উপজেলার রসুলপুর গ্রামের মোখছেদ আলীর ছেলে।
জানা যায়, সোমবার (১৩ মে ) সকালে রোজাদার রিকশাচালক সেলিম মিয়াকে শহরের টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবে সামনে বেধড়ক মারপিট করেন পুলিশের ওই ড্রাইভার। পরে মুহুর্তের মধ্যেই ফেসবুকে মারপিটের ভিডিওটি ভাইরাল হয়ে যায়। পরে বিষয়টি পুলিশের উর্ব্ধতন কর্তৃপক্ষের নজরে আসে।
রিক্সা চালক সেলিম মিয়া বলেন, আমি টাঙ্গাইল শহরের স্টেডিয়াম মার্কেট থেকে এক যাত্রীকে নিয়ে নিরালা মোড়ের দিকে যাচ্ছিলাম। পথে টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের সামনের রাস্তায় পৌঁছলে মোড় ঘুরাচ্ছিলাম। তখন নিরালামোড়গামী পুলিশের একটি গাড়ি আমাকে ওভারটেক করে আমার সামনে এসে থামে। ওই গাড়ি থেকে পুলিশের পোশাক পড়া এক লোক এসে আমাকে বলে তর গাড়ি চালানো ‘রং’ হয়েছে। তুই মোড় ঘুরাইচ্ছোস, সিগলান মানস নাই, তুই মোড় ঘুরানোর সময় বাম হাত দেস নাই কেন। তখন আমি বলি স্যার আমার ভুল হয়েছে। পরে পুলিশের গাড়ি থেকে নেমে গাড়ি চালক আমাকে লাঠি দিয়ে মারে। এতে আমার হাতে প্রচন্ড আঘাত পেয়েছি। বর্তমানে আমার হাত ফুলে গেছে। কোন কারণ ছাড়াই আমাকে এভাবে মারলো।
তিনি আরো বলেন, আমাকে এসপি স্যার নগদ টাকা দিয়েছেন। আমি এতে খুশি হয়েছি। আমি এ ঘটনায় সুষ্ঠু বিচার চাই।
মঙ্গলবার দুপুরে প্রেস ব্রিফিং এ পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায় বলেন, এ ঘটনায় রাতেই ওই পুলিশ সদস্যকে ক্লোজ করা হয়েছে। এছাড়া ওই রিকশাচালককে দেখভালের জন্য একজন ডাক্তার সার্বক্ষণিক দেওয়া হয়েছে। সেইসাথে যে ক দিন রিকশা চালক কাজ না করতে পারবেন সে ক দিন তার পরিবারের খরচ আমরা দিবো।
এ সময় পুলিশর অন্যান্য ঊদ্ধর্তন কর্মকর্তা সহ ওই রিকশাচালকের ভাই এবং স্থানীয় সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ মুনীরকে প্রধান করে এক সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) শফিকুল ইসলাম জানান, তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর পুলিশের গাড়ি চালকের বিষয়ে স্থায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, আশা করছি দুই একদিনের মধ্যেই তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া যাবে। পুলিশ লাইন্সের ওই ড্রাইভাকে সব ধরনের কাজ থেকে বিরত রাখা হয়েছে।