Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৬ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

গৃহকর্মীকে নিয়মিত ধর্ষণ, গর্ভবতী করে অন্যত্র বিয়ে দিলেন শিক্ষা অফিসার

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২ মে ২০১৯, ০৪:৫৫ PM
আপডেট: ১২ মে ২০১৯, ০৪:৫৫ PM

bdmorning Image Preview


জামালপুর সদর উপজেলার শরীফপুর ইউপির রঘুনাথপুর গ্রামে গৃহকর্মীকে গর্ভাবতী করে বিয়ে দেয়ার অভিযোগে এক সহকারী শিক্ষা অফিসারের বাড়ি ঘেরাও করেছেন এলাকাবাসী। 

ন্যক্কারজনক এই ঘটনাটি ঘটেছে জামালপুর সদর উপজেলার রঘুনাথপুর এলাকায়। এ ঘটনায় ধর্ষণের শিকার ওই গৃহকর্মী বাদী হয়ে জামালপুর সদর থানায় মামলা করেছে।

কিছু দিন বাসায় কাজ করার পর থেকেই শুরু হয় যৌন হয়রানি। এরপর সুযোগ বুঝে স্ত্রীর অনুপস্থিতিতে বাসার কাজের মেয়েকে নিয়মিত ধর্ষণ করেন। এতে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন ওই গৃহকর্মী। পরে অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় তাকে অন্যত্র বিয়ে দেন সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মাজেদুল ইসলাম। কিন্তু বিয়ের দুই মাসের মাথায় সাত মাসের সন্তান প্রসব হলে ঘটনাটি ফাঁস হয়ে যায়।

ধর্ষক মাজেদুল ইসলাম সদর উপজেলার শরিফপুর ইউনিয়নের রঘুনাথপুর গ্রামের আব্দুল মোতালেব মাস্টারের ছেলে। তিনি মেলান্দহ উপজেলা শিক্ষা অফিসের সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।

ধর্ষণের শিকার ওই কিশোরী জানায়, এক বছর আগে মাজেদুল ইসলামের বাসায় গৃহকর্মীর কাজ নেন তিনি। তার স্ত্রী নাজমা আক্তার স্কুল শিক্ষিকা। তাদের বাসায় কিছুদিন কাজ করার পর থেকে গৃহকর্তা মাজেদুল ইসলাম স্ত্রীর অনুপস্থিতিতে প্রতি শনিবার তাকে নানাভাবে যৌন হয়রানি করতেন। একপর্যায়ে তাকে ধর্ষণ করেন। এ ঘটনা ফাঁস না করার জন্য তাকে প্রাণনাশের হুমকি দেন মাজেদুল। এরপর থেকে প্রতি শনিবার স্ত্রী স্কুলে চলে যাওয়ার পর নিয়মিত তাকে ধর্ষণ করে আসছিলেন তিনি।

গৃহকর্মী আরও জানায়, কয়েক মাস পর তার শারীরিক অবস্থার পরিবর্তন দেখা দেয়। বিষয়টি দেখে সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মাজেদুল ইসলাম দুই মাস আগে পিঙ্গলহাটি গ্রামের এক যুবকের সঙ্গে তার বিয়ে দেন। কিন্তু বিয়ের দুই মাস পার হলেও পিরিয়ড না হওয়ায় শাশুড়ি তাকে ওষুধ খাওয়ান। পরে তিনি একটি মৃত ছেলে সন্তান প্রসব করেন।

কিন্তু বিয়ের দুই মাসের মাথায় সাত মাসের সন্তান প্রসব হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে সমালোচনা শুরু হয়। পরে সবাই বিষয়টি জেনে যায়। এ নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। এ অবস্থায় মৃত সন্তানসহ তাকে বাবার বাড়িতে রেখে যায় স্বামী ও শাশুড়ি।

এরপর বিষয়টি সবাইকে খুলে বলেন ওই গৃহকর্মী। তিনি জানান, তার সন্তানের বাবা বাস্তবে সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মাজেদুল ইসলাম।

এদিকে বিষয়টি গৃহকর্মীর পরিবার ও স্থানীয়দের জানালে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন সবাই। গতকাল দুপুরে সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মাজেদুল ইসলামের বাড়ি ঘেরাও করেন এলাকাবাসী। সেই সঙ্গে গৃহকর্মীকে ধর্ষণের বিচার চেয়ে বিক্ষোভের পাশাপাশি মাজেদুলের শাস্তির দাবি জানান তারা। তবে ঘটনাটি ফাঁস হওয়ার পরই পালিয়ে যান মাজেদুল ইসলাম।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জামালপুর সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সালেমুজ্জামান বলেন, গৃহকর্মীর ওপর পাশবিক যৌন নির্যাতনের ঘটনায় সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মাজেদুল ইসলামকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা হয়েছে। গৃহকর্মীর গর্ভের মৃত সন্তানের ময়নাতদন্ত ও শিশুটির ডিএনএ পরীক্ষার জন্য জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মাজেদুল পলাতক রয়েছেন। তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানান পুলিশের ওই কর্মকর্তা।

এদিকে এমন ন্যক্কারজনক ঘটনার জন্য ওই সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন জামালপুর জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম।

Bootstrap Image Preview