Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৬ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

স্ত্রীকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসাতে গিয়ে ফেঁসে গেলেন স্বামী

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৬ মে ২০১৯, ১০:১৪ PM
আপডেট: ০৬ মে ২০১৯, ১০:১৪ PM

bdmorning Image Preview
প্রতীকী


স্ত্রী রুমাকে ইয়াবাসহ ডিবির হাতে ধরিয়ে দিয়ে নিজের ফেসে গেলেন মাদক ব্যবসায়ী জামিনুর রহমান জীবন।

রবিবার (৫ মে) দুপুরে নীলফামারী আদালতের সামনে পুলিশ ক্যান্টিনের এ ঘটনায় অবশেষে মাদক ব্যবসায়ী জীবন ও তার সঙ্গী মারিফুল ইসলামকে আসামি করে রাতে নীলফামারী সদর থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

স্ত্রী রুমা বাদী হয়ে নীলফামারী সদর থানায় মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রন আইনের ৩৬ (১) টেবিলের ১০ (ক)/ ৪১ ধারায় মামলা নং- ৯ দায়ের করেন।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, স্ত্রী রুমার সাথে স্বামী জীবনের ৫টি মামলা আদালতে চলমান। রবিবার সকালে জীবন ফোন দিয়ে আপোষ মিমাংসার কথা বলে ছোট মেয়েকে নিয়ে নীলফামারী আদালতে যেতে বলেন। আদালতে যাওয়ার পর দুপুর ১২টায় পুলিশ ক্যান্টিনে স্ত্রী রুমাকে ঔষধের প্যাকেট হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলে ঘটনাস্থল থেকে সড়ে গিয়ে ডিবির এসআই মোকছেদুল ইসলামকে ফোন করে বলে রুমা নামে ক্যান্টিনে একজন মাদক ব্যবসায়ী ইয়াবা নিয়ে বসে আসে। এ সংবাদ পেয়ে ডিবির এসআই মোকছেদুল ইসলাম মহিলা পুলিশসহ রুমাকে আটক করেন।

এ সময় নীলফামারীর ডিমলার নাউতরা মালিপাড়া গ্রামের রমজান আলীর পুত্র জামিনুর রহমান জীবন (২৮) ও তার বন্ধু একই এলাকার মৃত্যু রফিকুল ইসলামের পুত্র মারিফুল ইসলাম (২৫) গা ঢাকা দেয়। জীবন মোবাইলে প্রেম করে ৩টি বাল্যবিবাহ করেন। সে পেশায় একজন মাংশ বিক্রেতা হলেও ইয়াবাসহ মাদক ও ক্রিকেট জুয়াড়ি। দীর্ঘদিন একটি প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় এসব ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন সে।

২০০৮ সালের নাউতরা মালিপাড়া গ্রামের রমজান আলীর পুত্র জামিনুর রহমান জীবনের সাথে পাশ্ববর্তী ডোমার উপজেলার মেলাপাঙ্গা গ্রামের ইউপি সদস্য আব্দুল কাদেরের কন্যা সাবরিনা আক্তার রুমার বিয়ে হয়। জীবনের স্ত্রী সাবরিনা আক্তার রুমার প্রতিবন্ধি কন্যা জান্নাতুল আক্তার জেমি (৮) ও ছোট কন্যা মিনহা বেগম (১) রয়েছে।

রুমা বলেন, বিয়ের পর সংসার ভালই চলছিল। গত ৮ মাস থেকে আমাদের সংসারে বিভিন্ন ভাবে অশান্তি চলে আসছিল। আমার স্বামী জীবন লম্পট চরিত্রের। জয়পুরহাট জেলার সদরের ১ম স্ত্রী শোভা বেগম থাকার পর আমার সাথে মোবাইলে সম্পর্ক করে তোলেন। বিয়ের আগে ১ম স্ত্রীকে তালাক দিয়ে আমাকে বিয়ে করেন। বিয়ের ১০ বছর পর ২০১৮ সালে আবার স্ত্রী ও দুই সন্তান গোপন রেখে রোকসানা পারভীন নামে এক জেডিসি পরীক্ষার্থীকে বিয়ে করেন।

আদালতে এফিডেভিট করে নাউতরা ইউনিয়নের নাউতরা গ্রামের জামিনুর রহমান জীবন (২৮) স্ত্রী সন্তান থাকার পরও বিয়ে করেন জেডিসি পরীক্ষার্থী রোকসানা পারভীনকে। রোকসানা পারভীন টেপাখড়িবাড়ী ইউনিয়নের দক্ষিণ খড়িবাড়ী গ্রামের রশিদুল ইসলামের কন্যা ও দক্ষিণ খড়িবাড়ী মুন্সিপাড়া দাখিল মাদ্রাসা থেকে ২০১৮ সালের জেডিসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিল।

রোকসানা পারভীন বলেন, ৬ মাস আগে একদিন ফোনে মিসকল আসল রিং দিলাম বলল রং নাম্বার আপনার বাড়ি কোথায় কি করেন। এভাবে ৬ মাস প্রেমের পর গত বছরের ২৫ অক্টোবর নীলফামারীর আদালতে গিয়ে এফিডেভিট করে জীবনকে বিয়ে করি। বিয়ের পর আমি জেডিসি পরীক্ষা দেই। জানতাম না জীবন বিবাহিত। আকস্মিকভাবে জীবনের স্ত্রী ও দুই কন্যাসহ আমাদের বাড়িতে আসে। সকলে হকবাক এটা কি করে সম্ভব স্ত্রী সন্তান থাকার পরও মিসকলে প্রেম করে প্রতারক আমাকে বিয়ে করল।

জামিনুর রহমান জীবন বলেন, আমাকে বিরক্ত না করে আপনারা যা পারেন লিখেন আমি দেখে নিব। আমি তো আদালতে মাধ্যমে বিয়ে করেছি প্রতারণা করিনি। ইয়াবা তো চিনি না তাহলে ব্যবসায়ী হব কিভাবে।

নীলফামারী সদর থানার ওসি আব্দুল মোমেন ঘটনার স্যততা নিশ্চিত করে বলেন, মাদক মামলায় জীবনসহ তার বন্ধুকে গ্রেফতারের চেষ্টা করা হচ্ছে।

নীলফামারীর পুলিশ সুপার মুহাঃ আশরাফ হোসেন বলেন, স্ত্রীকে মাদক দিয়ে কৌশলে ফাসানো চেষ্টা করা অভিযোগ এসেছিল। ঘটনাটি তদন্তে সত্যতা না পাওয়ায় স্ত্রীকে বাদী করে থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

Bootstrap Image Preview