নন্দীত সংগীতশিল্পী সুবীর নন্দী অবশেষে চোখ মেলেছেন। টানা ১৮ দিন বিছিনায় চোখ-বুজে নিথর পড়ে ছিলেন, মেয়ে ফাল্গুনীকে দেখে চোখের কোনে নেমেছে তার অশ্রুজল।
সুবীর নন্দীর এই অশ্রু আশার আলো জ্বালিয়েছে, এমনটাই আশাবাদ ব্যক্ত করলেন শিল্পীর স্বজনরা। শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন জানান, সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের এমআইসিইউ’তে চিকিৎসাধীন সুবীর নন্দী চোখ মেলেছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য ৩০ এপ্রিল ঢাকার সিএমএইচ থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় একুশে পদকপ্রাপ্ত এই সংগীতশিল্পীকে।
ঢাকা থেকেই সুবীর নন্দীর চিকিৎসার নিয়মিত খোঁজ রাখছেন ডা. সামন্ত লাল সেন। সুবীর নন্দী (৩ মে) চোখ মেলেছেন।
সামন্ত লাল বলেন, ‘ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মস্তিষ্কের কাজ করা নিয়ে খুব দুশ্চিন্তায় ছিলাম আমরা। চোখ মেলে মেয়ে ফাল্গুনীকে চিনতে পেরেছেন, কেঁদেছেন। তার মানে সুবীরের মস্তিষ্ক কাজ করছে। চিকিৎসকদের বিবেচনায় এটা খুবই আশার খবর। এটা আমাদের জন্য বড় স্বস্থির খবর।‘
চিকিৎসার জন্য ৩০ এপ্রিল তাকে নিয়ে যাওয়া হয় সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে। এর আগে ১৬ দিন রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) লাইফ সাপোর্টে ছিলেন সুবীর নন্দী। সিলেট থেকে ঢাকায় ফেরার পথে ট্রেনে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন সুবীর নন্দী। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী ও কন্যা। রাতেই তাকে রাজধানীর সিএমএইচে নেওয়া হয়। হাসপাতালটির জরুরি বিভাগে হার্ট অ্যাটাক করেন এই নন্দিত শিল্পী।
এরপর তাকে দ্রুত লাইফ সাপোর্ট দেওয়া হয়। দীর্ঘদিন ধরে কিডনির অসুখে ভুগছিলেন সুবীর নন্দী। তার হার্টেও সমস্যা রয়েছে। ৪০ বছরের দীর্ঘ ক্যারিয়ারে আড়াই হাজারেরও বেশি গান গেয়েছেন সুবীর নন্দী। রেডিও, টেলিভিশন, চলচ্চিত্রে নিয়মিত গাইছেন এখনও। ১৯৮১ সালে তার প্রথম একক অ্যালবাম ‘সুবীর নন্দীর গান’ প্রকাশিত হয়। চলচ্চিত্রে তিনি প্রথম গান করেন ১৯৭৬ সালে। ছবির নাম ‘সূর্যগ্রহণ’।
সুবীর নন্দী জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন চারবার। সংগীতে অবদানের জন্য এ বছর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদক পান তিনি।