ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলায় উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও মাদ্রাসা কমিটির সহ-সভাপতি রুহুল আমিনকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছেন আদালত।
শনিবার (২০ এপ্রিল) বিকেলে তাকে ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শরাফ উদ্দিন আহমেদের আদালতে তুলে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক শাহ আলম। আদালত তার পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
রাত ৮টার দিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন পিবিআইয়ের এএসপি মনীরুজ্জামান।
এর আগে রুহুল আমিনকে শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) সোনাগাজীর তাকিয়া রোড থেকে গ্রেফতার করা হয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও ফেনী পিবিআইয়ের পরিদর্শক শাহ আলম বলেন, শনিবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে রুহুল আমিনকে আদালতে নিয়ে সাতদিনের রিমান্ড চাইলে পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। এর আগে শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৪টায় সোনাগাজীর তাকিয়া রোডের নিজ বাসভবন থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
নুসরাতকে অগ্নিদগ্ধের ঘটনার পর থেকে সন্দেহের তীর ছিল রুহুল আমিনের দিকে। গত কয়েকদিন তাকে নজরবন্দিতে রাখা হলেও শুক্রবার গ্রেফতার করে পিবিআই।
৬ এপ্রিল শনিবার সকালে আলিম পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসায় যান নুসরাত জাহান রাফি। মাদরাসার এক ছাত্রী সহপাঠী নিশাতকে ছাদের ওপর কেউ মারধর করছে এমন সংবাদ দিলে ওই বিল্ডিংয়ের তিনতলায় যান। সেখানে মুখোশ পরা চার-পাঁচজন ছাত্রী তাকে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে মামলা ও অভিযোগ তুলে নিতে চাপ দেয়। সে অস্বীকৃতি জানালে তারা গায়ে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায়।
এ ঘটনায় সোমবার রাতে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা ও পৌর কাউন্সিলর মাকসুদ আলমসহ আটজনের নাম উল্লেখ করে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করেন অগ্নিদগ্ধ রাফির বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান।
টানা পাঁচদিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে ১০ এপ্রিল বুধবার রাত ৯টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা যান অগ্নিদগ্ধ নুসরাত জাহান রাফি। পরদিন সকালে ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ স্বজনদের বুঝিয়ে দিলে সোনাগাজী পৌরসভার উত্তর চরচান্দিয়া গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
নুসরাত হত্যার ঘটনায় এ পর্যন্ত মামলার এজাহারভুক্ত আটজনসহ মোট ২১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন পাঁচজন। ১৫ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ড দেয়া হয়েছে।