কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলায় যৌতুকের দাবিতে ৫ মাসের এক অন্তঃসত্ত্বাকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তার স্বামী ও পরিবারের বিরুদ্ধে।
আজ শুক্রবার দুপুরে উপজেলার বক্সগঞ্জ ইউপির মদনপুর গ্রামের পালোয়ান বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
বাড়ির টয়লেটের কমোডের উপরে শোয়ানো অবস্থায় মোমেনা আক্তার টুম্পা (২৩) নামে ওই গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত নারী উপজেলার ঢালুয়া ইউপির উরকুটি গ্রামের আনোয়ার উল্লা মজুমদারের (হারুন) মেয়ে। মৃত্যুর পর থেকে তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন পলাতক রয়েছে।
নিহতের ভাই নিজাম উদ্দিন ও মহিন উদ্দিন জানান, ৭ মাস আগে উপজেলার বক্সগঞ্জ ইউনিয়নের মদনপুর গ্রামের পালোয়ান বাড়ীর দুলাল মিয়ার সঙ্গে পারিবারিকভাবে টুম্পার বিয়ে হয়। গত ৪ এপ্রিল টুম্পাকে তার স্বামী দুলাল ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন আনুষ্ঠানিকভাবে বাবার বাড়ি থেকে শ্বশুর বাড়ীতে তুলে আনেন।
গত ৭ এপ্রিল টুম্পা একদিনের জন্য বাবার বাড়িতে বেড়াতে এসে পরদিন শ্বশুরবাড়িতে ফিরে যান। এর পর থেকেই তার স্বামী দুলাল, শ্বাশুড়ি- শ্যামলা বেগম, ননদ- ফেরদাউস, ভুলু বেগম, ভুলুর স্বামী- লিটন, দেবর- হামিদ, জা- পলি ও ননদের স্বামী- বাচ্চু মিয়া যৌতুকের জন্য নির্যাতন করতে শুরু করেন।
শ্বশুরবাড়ির কোনো কিছু ব্যবহার করলে তাকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করা হতো। বাপের বাড়ি থেকে প্রয়োজনীয় জিনিস এনে ব্যবহার করতে বলা হতো। তাদের বোনকে বাবার বাড়ির কারো সঙ্গে যোগযোগ করতে মুঠোফোন পর্যন্ত ব্যবহার করতে দেওয়া হতো না।
তারা আরও জানান, গতকাল বৃহস্পতিবার টুম্পার মোবাইলে কল করা হলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। তার স্বামী দুলালকে কল করা হলেও তিনি তা ধরছিলেন না। আজ শুক্রবার দুপুরে নিজেদের ফুপাতো বোন নাছিমার মাধ্যমে টুম্পার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হন তারা। পরে পুলিশে খবর দিয়ে বোনের শ্বশুরবাড়ি যান তারা। পুলিশ সেখানে গিয়ে টয়লেটের কমোডে শোয়ানো অবস্থায় টুম্পার লাশ উদ্ধার করে।
স্থানীয় এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, টুম্পার পরিবারের কাছে দুলালের যৌতুক দাবি এবং অন্য নারীর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িত থাকায় তাকে হত্যা করা হতে পারে।
নাঙ্গলকোট থানার উপপরিদর্শক (এস আই) ফরিদ আহম্মেদ এ ব্যাপারে জানান, টুম্পার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়া গেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ঘটনার পর থেকে তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন পলাতক রয়েছে।