মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানে দলবদ্ধ ধর্ষণের অপমান সইতে না পেরে সেতু মন্ডল (১৪) নামে এক স্কুলছাত্রী আত্মহত্যা করেছে। অপহরণের দুদিন পর উদ্ধার হয় ওই স্কুলছাত্রী। এর পাঁচ দিন পর নিজ বাড়িতে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার করে সে।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার পুলিশ সোহেল মিয়া (২৪) নামে একজনকে গ্রেফতার করেছে। তাকে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ।
বুধবার রাতে সিরাজদিখান থানায় স্কুলছাত্রীর মা রেখা মন্ডল বাদী হয়ে সোহেল মিয়াসহ অজ্ঞাত আরো দুজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।
নিহত সেতু মন্ডল সিরাজদিখান উপজেলার গোয়ালখালী গ্রামের কুয়েত প্রবাসী গোপাল মন্ডলের মেয়ে। সে নিজ গ্রামের পার্শ্ববর্তী ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার দৌলতপুর কবি নজরুল উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী ছিল।
সেতু মন্ডলের জ্যাঠা পবিত্র মন্ডল জানান, বুধবার সকালে ঘরের আড়ার সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ফাঁস দেয় সে। তাৎক্ষণিক পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মিটফোর্ড হাসপাতালে ভর্তি করলে ওই দিন বিকেলে মারা যায়। মিটফোর্ড হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে বৃহস্পতিবার রাতে মরদেহ বাড়িতে আনা হয়। পরে দাহ হয়।
তিনি আরো জানান, গত ৯ এপ্রিল সেতু মন্ডল স্কুলের যাওয়ার উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হয়। এরপর সে আর বাসায় ফেরেনি। ওই দিন সোহেল মিয়াসহ আরো অজ্ঞাত দুজন তাকে অপহরণ করে বলে সেতু জানায়। পরে তাকে ধর্ষণ করে। দুই দিন পর ১১ এপ্রিল ঢাকার কেরানীগঞ্জ উপজেলার গোলামবাজার পুলিশ ফাঁড়ি সেতু মন্ডলকে উদ্ধার করে। পরে পরিবারের লোকজন গোলামবাজার ফাঁড়ি থেকে তাকে বাড়িতে নিয়ে আসে। বুধবার সে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়।
ঢাকার কেরানীগঞ্জ উপজেলার গোলামবাজার পুলিশ ফাঁড়ির এসআই কবিরুল ইসলাম জানান, ১১ এপ্রিল গোলামবাজার এলাকায় এক যুবকের সঙ্গে ওই স্কুলছাত্রীকে ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়। সন্দেহ হলে পুলিশ যুবক ও স্কুলছাত্রীকে ফাঁড়িতে নিয়ে আসে। পরে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে যুবককে ছেড়ে দেওয়া হয় ও স্কুলছাত্রীকে তার পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
সিরাজদিখান থানার ওসি ফরিদ উদ্দিন জানান, বুধবার দিবাগত রাতে ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার দৌলতপুর গ্রামে অভিযান চালিয়ে সোহেল মিয়া (২৪) নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে পুলিশের হেফাজতে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
'শুক্রবার সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। সোহেল দৌলতপুর গ্রামের বাসিন্দা'।