নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার পাঁচুপুর আলিম মাদ্রাসার প্রায় ৩০টি ইউক্যালিপটাস গাছ কোন প্রকার অনুমতি ছাড়াই প্রকাশ্য দিবালোকে কর্তনের অভিযোগ উঠেছে। যার বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ২ লক্ষ টাকা।
মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির যোগসাজসে কেটে ফেলা গাছগুলোর মধ্যে কিছু গাছ বিক্রয়ের জন্য নিয়ে যাওয়া শুরু করলে বিষয়টি স্থানীয়রা জানতে পারে এবং অবশিষ্ট কাটা গাছগুলো নিতে বাঁধা দেয়।
এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আমিনুল ইসলাম ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আব্দুল মালেকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য রবিবার (৭ এপ্রিল) উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন পাঁচুপুর আলিম মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি আব্দুল হামিদ।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার পাঁচুপুর আলিম মাদ্রাসার প্রায় ৩০টি ইউক্যালিপটাস গাছ মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির কোন প্রকার সিদ্ধান্ত ও রেজুলেশান ছাড়াই শুক্রবার (৫ এপ্রিল) মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আমিনুল ইসলাম ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আব্দুল মালেক জোগসাজসে জোরপূর্বক গাছগুলো কর্তনের মাধ্যমে বিক্রি করে। কর্তনকৃত কিছু গাছ নিয়ে গেলেও অবশিষ্ট গাছ নেওয়ার সময় স্থানীয়দের তোপের মুখে রেখে চলে যায়।
অভিযোগে বলা হয়েছে, অধ্যক্ষ ও সভাপতি মাদ্রাসার আরও প্রায় শতাধিক গাছ কর্তন করার ষড়যন্ত্র করছেন। আরও গাছ কাটার গোপন পরিকল্পনা ফাঁস হওয়ায় মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ও সভাপতির বিরুদ্ধে এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য রবিবার পাঁচুপুর গ্রামবাসীর পক্ষে অত্র মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি আব্দুল হামিদ রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আল মামুনের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
পাঁচুপুর আলিম মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি আব্দুল হামিদ বলেন, প্রায় ৩০টি ইউক্যালিপটাস গাছ মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আমিনুল ইসলাম ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আব্দুল মালেক জোগসাজসে গাছ বিক্রয়ের টাকা আত্মসাতের লক্ষ্যে কাটা শুরু করে। কাটা গাছগুলোর বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ২ লক্ষ টাকা। কোন প্রকার সিদ্ধান্ত বা রেজুলেশান ছাড়াই গাছ কর্তনের বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
এ ব্যাপারে পাঁচুপুর আলিম মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আব্দুল মালেক বলেন, আমরা সরকারি কোন গাছ কর্তন করিনি। কর্তনকৃত গাছগুলো মাদ্রাসার সীমানার মধ্যে না। এই জন্য কারো অনুমতি নেওয়ার প্রায়োজন মনে করিনি। এসব গাছ ১৯৯৬ সালে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ মাদ্রাসার টাকা ব্যয়ে রোপণ করলে পরবর্তীতে জায়গা মাপযোগ করে দেখা যায় গাছগুলো ব্যক্তি মালিকানার জায়গায় রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের এর প্রেক্ষিতে আজ (মঙ্গলবার) উপজেলা নির্বাহী অফিসার আমাদের ডেকেছেন।
রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আল মামুন বলেন, এ ঘটনায় একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগের প্রেক্ষিতে জড়িতদের মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) ডাকা হয়েছে। সুষ্ঠভাবে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।