Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৭ শনিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

প্রধানমন্ত্রীকে ১০০ কেজির ছাগল উপহার দিতে চাওয়া সেই ব্যক্তি গ্রেফতার

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ১৪ মার্চ ২০১৯, ০৫:২৮ PM
আপডেট: ১৪ মার্চ ২০১৯, ০৫:৩৫ PM

bdmorning Image Preview


প্রধানমন্ত্রীকে ১০০ কেজি ওজনের ছাগল উপহার দিতে চাওয়া কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের সেই ইসমাইল হোসেনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

উপজেলার গ্রাগপুর ইউনিয়নের মহিষকুন্ডি গ্রামের মৃত সামছুদ্দিন মন্ডলের ছেলে ইসমাইল হোসেন তার মাকে সঙ্গে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে ১০০ কেজি ওজনের ছাগল উপহার দিতে চান। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি খবর ছড়িয়ে পড়ে। পরে এ খবর ভাইরাল হয় বিভিন্ন মিডিয়ায়। তবে এতে কৌতুহলও জাগে অনেকের মনে। ছাগলটি দেখার জন্য বিভিন্ন এলাকার মানুষ তার বাড়িতে ভিড় করতে থাকে।

এ ঘটনার মধ্যেই মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ১০টার দিকে মহিষকুন্ডি বাজার থেকে মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকায় ইসমাইলকে আটক করা হয়। বুধবার তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। এ নিয়ে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

এলাকাবাসী জানায়, বাচ্চা থেকেই লালন-পালন করা হলেও প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দেয়ার কথাটি আগে কখনও শোনা যায়নি। হঠাৎ করে কথাটি শোনা যাচ্ছে। ইসমাইল ও তার মা কেন হঠাৎ করে প্রধানমন্ত্রীকে ছাগল উপহার দিতে চান তা নিয়েও তাদের মনে প্রশ্ন ওঠে।

ইসমাইলের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ছাগলটি আমার বাড়িতে জন্ম হয়েছে। আমার মা ছাগলটি লালন-পালন করেন। আমি ও আমার মা ১০০ কেজি ওজনের এই ছাগলটি প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দিতে চাই।

মাদক ব্যবসা সম্পর্কে ইসমাইল বলেন, আমি মাদক ব্যবসা করি না। আমার চা একটু ভালো হয়, তাই বিভিন্ন জেলা বা থানা থেকে লোক আসেন।

মাদক ব্যবসায় অভিযোগ উঠলে দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম থানার উপ-পরিদর্শক সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিমকে বিষয়টি তদন্তের জন্য দায়িত্ব দেন। গত ২ মার্চ রাতে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ছেড়ে দেয় পুলিশ। প্রায় ১০ দিন তদন্তের পর বিষয়টির সত্যতা পাওয়ায় মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে উপ-পরিদর্শক সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশের ওই টিম মহিষকুন্ডি বাজারে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করেন।

এ ধরনের কৌশল অবলম্বন করায় অনেকে হতবাক হয়েছেন। দেরিতে হলেও আসল ঘটনা উদঘাটন হওয়ায় তারা স্বস্তি প্রকাশ করেছেন।

অনুসন্ধানে জানা যায়, ছাগল উপহারের উদ্যোক্তা ইসমাইল একজন চা বিক্রেতা। স্থানীয় বাজারে তিনি চা বিক্রি করেন। মা লতিফুননেছা ও স্ত্রী সন্তান নিয়ে ইসমাইল একই বাড়িতে থাকেন। চা বিক্রি করে তিনি জীবিকা নির্বাহ করেন। কিন্তু ইসমাইল একজন মাদক ব্যবসায়ী। তিনি চায়ের ব্যবসার আড়ালে দীর্ঘদিন ধরে মাদকের ব্যবসা করে আসছেন। প্রতিদিন দূর দূরান্ত থেকে মোটরসাইকেলে মাদকসেবীরা তার দোকানে এসে মাদক ক্রয় ও সেবন করে। এর আগে ইসমাইল ফেনসিডিলসহ পুলিশের হাতে আটকও হয়েছিলেন। তার নামে দৌলতপুর থানায় মাদকের মামলা আছে।

প্রাগপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আশরাফুল ইসলাম মুকুল জানান, ইসমাইলের নামে মাদকের মামলা ও ওয়ারেন্ট রয়েছে বলে জেনেছি। এখন প্রমাণ হলো ইসমাইল মাদকের সঙ্গে জড়িত ছিল।

দৌলতপুর থানার উপ-পরিদর্শক সাইফুল ইসলাম বলেন, তার নামে মাদকের একটি মামলা রয়েছে। মামলায় ওয়ারেন্টভুক্ত হওয়ায় তাকে আটক করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছেন। তাই কোনো কৌশল করেই মাদক ব্যবসায়ীরা বাঁচতে পারবে না।

দৌলতপুর থানা পুলিশের ওসি নজরুল ইসলাম বলেন, সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আরও তদন্ত চলছে। সে মোতাবেক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Bootstrap Image Preview