Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৬ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

নারী নির্যাতন প্রতিরোধে আইন আছে প্রয়োজন শুধু বাস্তবায়ন

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ০৬:৪২ PM
আপডেট: ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ০৬:৪৯ PM

bdmorning Image Preview


সুমি আক্তার। বিয়ে হয়েছে তিন বছর। কারণে-অকারণে স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়ি প্রায়ই তার ওপর নির্যাতন করত। সর্বশেষ তাকে শ্বশুরবাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হলো। তার অপরাধ, বাবা বিয়েতে ফার্নিচার, টিভি-ফ্রিজ ও নগদ দুই লাখ টাকা দেবেন এ শর্তে মেয়ে বিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু ফার্নিচার ও টিভি-ফ্রিজ দিলেও নগদ টাকা এখনও জোগাতে পারেননি। যৌতুকের টাকায় স্বামী নাকি ব্যবসা করে বৌকে খাওয়াত। যেহেতু টাকা দেয়নি, তাই খাওয়াতেও পারবে না। এ বলে স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়ি মেয়েটিকে ঘর থেকে বের করে দেয়। এ ব্যাপারে মেয়েটি মামলা করলে স্বামী তাদের বাচ্চার কথা বলে মামলা উঠিয়ে নিতে বলে। আরও বলে, মামলা উঠিয়ে নিলে তাকে ঘরে ফিরিয়ে নেবে।

জামিলা। গ্রামের প্রভাবশালী চেয়ারম্যানের ছেলেকে ভালোবেসে বিয়ে করে। বিয়ের সময় যৌতুক দেওয়ার কোনো কথা ছিল না। কিন্তু যত দিন যায়, জামিলার স্বামীর স্বরূপ পরিবর্তন হতে থাকে। যৌতুক নিয়ে আসার জন্য জামিলার ওপর নির্যাতনের মাত্রা বাড়তে থাকে। অসচ্ছল পরিবারে বড় হওয়া বৃদ্ধ বাবার অসহায় মেয়েটি যা পারে, প্রতিদিন একটু একটু করে আনতে থাকে। কিন্তু তাতে শ্বশুরবাড়ির চাহিদা তো মেটেই না বরং দিন দিন তাদের পৈশাচিকতা বাড়তে থাকে। খুন্তি গরম করে জামিলার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছ্যাঁকা দেওয়া হয়। মেরে ফেলারও হুমকি দেওয়া হয়। বৃদ্ধ বাবার নিরাপত্তার কথা ভেবে মুখ খোলার কোনো উপায় নেই জামিলার। বাবার বাড়িও যেতে দেওয়া হয় না জামিলাকে। অর্ধাহারে-অনাহারে দরজা বন্ধ করে রাখা হতো দিনের পর দিন। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে জামিলা এক সময় বেছে নেয় আত্মহননের পথ। জামিলার বাবা মামলা করেন। প্রভাবশালী চেয়ারম্যান ও তার ছেলের গায়ে এতটুকু আঁচড়ও পড়ল না। কারণ, সাক্ষ্য-প্রমাণ সব চেয়ারম্যানের পক্ষে। আদালতে প্রমাণ হলো, বিয়ের আগে থেকেই জামিলার চরিত্র খারাপ ছিল। তারা প্রমাণ করল অতীতের কথা জানাজানি হওয়ায় লোকলজ্জার ভয়ে জামিলা আত্মহত্যা করেছে।

সজীব ১৬ বছরের সুলতানাকে ভালোবাসার ফাঁদে ফেলে ঢাকার একটি হোটেলে এনে তুলেছিল। মেয়েটিকে ধর্ষণ করে প্রলোভন দিয়ে আনা স্বর্ণালংকার ও টাকা-পয়সা নিয়ে পালিয়ে যায় সজীব। মেয়েটিকে হোটেলে একা পেয়ে তার অসহায়ত্বের সুযোগে সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়ে খাবারের সঙ্গে নেশা-জাতীয় দ্রব্য খাইয়ে পুনরায় ধর্ষণ করে আরেক নরপিশাচ। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়। কিন্তু আসামি পলাতক। দিনের পর দিন মামলার তারিখ পড়ছে। কিন্তু আসামি ধরা পড়ছে না। এদিকে উকিল, আদালত করে নিঃস্ব মেয়েটির বাবা। আর কত দিন?

নারীর অধিকার রক্ষায় ও নারী নির্যাতন প্রতিরোধে প্রণীত হয়েছে একের পর এক আইন। তবুও প্রতিনিয়ত বেড়ে চলেছে নারী নির্যাতনের ঘটনা। অনেক আইন থাকলেও এর কঠোর বাস্তবায়ন নেই। আবার অনেক আইনের প্রয়োগ-পদ্ধতিতেই রয়েছে ত্রুটি। অনেক আইনের বাস্তবায়ন থাকলেও নারীদের অনেকের আইনবিমুখতার কারণে এবং সবকিছু মুখ বুজে সহ্য করায় এসব আইনের সুফল ভোগ করা যায় না। বাংলাদেশে মোট জনসংখ্যার অর্ধেক নারী হলেও এদেশের আর্থসামাজিক পরিবেশ এখনও নারীদের প্রতিকূলে।

শুধু স্বামীই নয়, অনেক সময় শ্বশুর-শাশুড়ি, দেবর-ননদ, এমনকি নিকটাত্মীয়র হাতেও নারীরা নির্যাতিত হচ্ছে। স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীরা যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। নারী ঘরে-বাইরে, কর্মক্ষেত্রে-শিক্ষাক্ষেত্রে সর্বত্রই চরম নিরাপত্তাহীনতার শিকার।

২০১২ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৫ সালের অক্টোবর পর্যন্ত বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির লিগ্যাল সেলের তত্ত্বাবধানে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধনী ২০০৩)-এর আওতায় ২০২৬টি মামলা করা হয়েছে, যার মধ্যে ৩৫৯টির নিষ্পত্তি হয়েছে। নিষ্পত্তিকৃত মামলায় আসামির সংখ্যা ৩৯৩। শাস্তিপ্রাপ্তের সংখ্যা ২৭। তথ্য-উপাত্ত, সাক্ষ্য-প্রমাণ না থাকায় খালাস পেয়েছে ৩৬৬ জন। একই সময় যৌতুক নিরোধ আইন ১৯৮০-এর আওতায় ১২টি মামলা করা হয়েছে। এতে অভিযুক্তের সংখ্যা ৩৩, যার মধ্যে চারটি মামলার নিষ্পত্তি হয়। একজনের সাজা হয়।

পাশাপাশি বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি পিএইচআর কর্মসূচির তত্ত্বাবধানে ৬৯টি মামলা করা হয়েছে, যার মধ্যে ১৫টির নিষ্পত্তি হয়। নিষ্পত্তিকৃত মামলায় আসামির সংখ্যা ১৭। শাস্তিপ্রাপ্তের সংখ্যা শূন্য। তথ্য-উপাত্তের মাধ্যমে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় খালাস পেয়েছে ১৪ জন। মামলা প্রত্যাহার তিনটি। পিএইচআর কর্মসূচির তত্ত্বাবধানে যৌতুক নিরোধ আইন ১৯৮০-এর আওতায় ১১৩টি মামলা করা হয়। এর মধ্যে ৭৪টি নিষ্পত্তি হয়। এসব মামলায় অভিযুক্তের সংখ্যা ৯৭। মামলায় কারও সাজা হয়নি। খালাস পেয়েছে ৩৪ জন। আপসের মাধ্যমে নিষ্পত্তি হয় ৬৩টি মামলা।

১৯৮৬ সালে নির্যাতিত নারীদের আইনগত পরামর্শ ও সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে একজন আইন কর্মকর্তার সমন্বয়ে নারী নির্যাতন প্রতিরোধ সেলের কার্যক্রম শুরু হয়। এ প্রকল্পের আওতায় ছয়টি বিভাগীয় শহরে নারী নির্যাতন প্রতিরোধকল্পে ছয়টি সহায়তা কেন্দ্র স্থাপন করা হয়। তারপরও বিচার চাইতে এসে নারীদের বিভিন্ন সামাজিক বা অর্থনৈতিক নানাবিধ প্রতিবন্ধকতামূলক পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে। এ কারণে বিচারকালীন তাদের নিরাপত্তা বা হেফাজত নিশ্চিত করা প্রয়োজন।

আমাদের দেশে যৌতুক এক সামাজিক ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে। যখন যৌতুক প্রদান করতে অসমর্থ হয়, তখন থেকে শুরু হয় নির্যাতন। যৌতুক বন্ধের জন্য ১৯৮০ সালে ৯টি ধারা নিয়ে প্রণীত হয় যৌতুক নিরোধ আইন। এরপর ১৯৯৫ সালে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ বিধান আইন; সর্বশেষ ২০০০ সালে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন (সংশোধন ২০০৩) প্রণীত হয়। নারী নির্যাতন প্রতিরোধে আমাদের পর্যাপ্ত আইন থাকলেও নি¤œবিত্ত থেকে মধ্যবিত্ত, এমনকি উচ্চবিত্তেও যৌতুক প্রবণতা বেড়েই চলেছে। যৌতুক বন্ধ না হওয়ার প্রধান কারণ বিচার না হওয়া। যতদিন পর্যন্ত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা না যায়, ততদিন যৌতুক প্রথা চলতেই থাকবে।

নারী নির্যাতনের আরেক রূপ বাল্যবিয়ে। আমাদের দেশে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নারীরা বাল্যবিয়ের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বাল্যবিয়ে নিরোধ আইন থাকা সত্ত্বেও এখনও প্রায় ৩০ শতাংশ নারী এর শিকার। বয়স ১৮ হওয়ার আগে কোনো মেয়ের বিয়ে হওয়াকেই বাল্যবিয়ে বলে। এর প্রধান কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে: দারিদ্র্য, যৌতুক, সামাজিক প্রথা ও সামাজিক চাপ, অঞ্চলভিত্তিক রীতি, অবিবাহিত থাকার শঙ্কা, নিরক্ষরতা এবং মেয়েদের উপার্জনে অক্ষম ভাবা প্রভৃতি। বাংলাদেশের আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে বাল্যবিয়ে ভয়াবহ এক সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশে অজ্ঞানতা ও কুসংস্কারের কারণে যে কয়টি ক্ষতের সৃষ্টি হচ্ছে, তার মধ্যে অন্যতম হলো বাল্যবিয়ে। এর ফলে শুধু শিশু, অল্প বয়সী নারী বা তার পরিবারই শুধু ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তা নয়, এতে সমগ্র দেশ অপুষ্টি ও দুর্বল ভবিষ্যৎ প্রজন্মের উত্তরাধিকারী হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে বেসরকারি সংস্থা ম্যাস লাইন মিডিয়ার এক জরিপে ২০০৭ সালের হিসেবে সারা দেশে ২০৩টি বাল্যবিয়ের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ১১২টি শিশু বাল্যবিয়ের শিকার হয়েছে। কিন্তু এর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে মাত্র সাতটি এবং সাতটি বাল্যবিয়ে বন্ধ করা হয়েছে। ইউনিসেফের ওয়ার্ল্ড চিলড্রেনের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বাংলাদেশের ৬৪ শতাংশ নারীর বিয়ে হয়ে যায় ১৮ বছর হওয়ার আগেই। অন্যদিকে ১৫ থেকে ১৯ বছরেই মা হয় এক-তৃতীয়াংশ। বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে নারীদেরই সচেতন হতে হবে। গণমাধ্যমের এ বিষয়ে আরও সচেতনতাধর্মী সংবাদ প্রকাশ করতে হবে। অপ্রাপ্ত বয়সে বিয়ে হলে কী কী সমস্যা হতে পারে, তা জানতে হবে। বাল্যবিয়ে নিরোধ আইন বাস্তবায়নে আরও কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। তবেই এটি বন্ধ করা সম্ভব।

আইন থাকার পরও সমাজে ইভটিজিং প্রকট আকার ধারণ করেছে। এটি এক ধরনের যৌন নির্যাতন; কিন্তু যারা এ অপরাধের সঙ্গে জড়িত, তারা বেশিরভাগ সময়ই ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যায়। কারণ এই অপরাধ সুনির্দিষ্টভাবে প্রমাণ করা কষ্টসাধ্য। তাই ইভটিজাররা কৌশলে তাদের অপরাধকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। যত দিন যাচ্ছে, ইভটিজিং বিপজ্জনক হারে বাড়ছে। রাস্তাঘাট, স্কুল-কলেজ, কর্মস্থল, এমনকি বাসার বারান্দায়ও নারীরা নিরাপদ নয়। সব বয়সের নারীকে উত্ত্যক্ত করা হলেও কিশোরীরা সবচেয়ে বেশি ইভটিজিংয়ের শিকার। স্কুল-কলেজে যাওয়ার পথে এসব মেয়েকে উত্ত্যক্ত করা হয় সবচেয়ে বেশি। নিরাপত্তার কথা ভেবে দিনের পর দিন চলতে থাকা এ নির্যাতনের জন্য স্কুল-কলেজে পড়াই বন্ধ হয়ে যায় অনেক মেয়ের। তথ্যপ্রযুক্তির অপব্যবহারের কারণে নারীদের ওপর নির্যাতন বেড়েছে ভয়াবহ আকারে। এখানে এসএমএম বা ফোনের মাধ্যমে চলে যৌন নির্যাতন। কখনও সামাজিক মাধ্যমগুলোয় বাজে দৃশ্য দিয়ে বিব্রত করা হয় মেয়েদের। এসব ক্ষেত্রে অপরাধীরা বেশিরভাগ সময় থেকে যায় অধরা। ছোট একটি ভুলকে ঢাকতে গিয়ে কুচক্রের চাপে পড়ে অনেক সময় ক্ষমাহীন অপরাধে জড়িয়ে পড়ে এসব মেয়ে। ফলে সংসার ভাঙা থেকে শুরু করে অনেক বড় মূল্য দিতে হয় তাদের। অনেক সময় এসব মেয়ের শেষ পরিণতি হয় আত্মহনন, নয়তো স্থান হয় পতিতালয়ে।

ধর্ষণ তদন্তে ডাক্তারি পরীক্ষা, ভিকটিমের জবানবন্দি ও সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। তবে এক্ষেত্রে ডাক্তারি পরীক্ষার প্রক্রিয়া একজন নারীর জন্য খুবই অসম্মানের। ধর্ষণের ঘটনা ঘটার পরপরই আমাদের সমাজ অনেক ক্ষেত্রেই ভিকটিম বা নারীটিকেই দোষারোপ করে। তারপর শুরু হয় বিচারিক ঝামেলা। প্রতিপক্ষ শক্তিশালী হলে তো কথাই নেই। পদে পদে ধাক্কা খেয়েও বিচার না পেয়ে যখন খালি হতে বাড়ি ফিরতে হয়, তখন শুরু হয় সমাজের কুকথা। বেঁচে থাকাই যেন ওই নারীর জন্য অভিশাপ হয়ে ওঠে তখন।

ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনাও বেড়েছে ইদানীং। সামাজিক সম্মানের ভয়ে অনেকেই মামলা বা থানা-পুলিশ করতে চান না। উপযুক্ত সাক্ষ্য-প্রমাণের অভাবে জড়িতরা অনেক ক্ষেত্রে পার পেয়ে যায়। অপরাধ বিশেষজ্ঞ ও মানবাধিকারকর্মীদের মতে, দেশে বিচারের দীর্ঘসূত্রতাসহ আরও অন্যান্য কারণে শতকরা ১০ ভাগ ধর্ষণ ঘটনার বিচার হয়ে থাকে।

ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) সারা দেশ থেকে প্রতিদিনই গড়ে চার-পাঁচজন নারী ধর্ষণের শিকার হয়ে চিকিৎসা নিতে আসছেন। আর প্রতি মাসে দেড় থেকে দু’শতাধিক ধর্ষিতাকে চিকিৎসা দিচ্ছেন তারা। এই হিসাব ওসিসিতে চিকিৎসা নিতে আসা নারীরা ছাড়াও দেশের অন্যান্য হাসপাতাল ও চিকিৎসা কেন্দ্রে চিকিৎসা নেওয়া নারীদের নিয়ে ওসিসির মতে, সাধারণত ধর্ষণের শিকার হয় ১৮-১৯ বছর বয়সী মেয়েরা।

পুলিশের হিসাব থেকে ঢাকা মহানগর পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত নারী-শিশু নির্যাতনের ঘটনায় রাজধানীর বিভিন্ন থানায় ৫৫৪টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে রাস্তা থেকে অপহরণ করে গাড়ির মধ্যে নারী নির্যাতন ও ধর্ষণের মামলা রয়েছে অন্তত ৫০ ভাগ।

জাতীয় মহিলা পরিষদের হিসাব অনুযায়ী চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ছয় মাসে সারা দেশে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ৪৩১টি এবং এর মধ্যে গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৮২ জন। এ সময়কালে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে ৪৫ জনকে। ধর্ষণ চেষ্টার শিকার হয়েছেন আরও ৫১ জন।

আর জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির হিসাব অনুযায়ী ২০১১ সালে সারা দেশে ৬২০ জন, ২০১২ সালে ৮৩৬ জন, ২০১৩ সালে ৭১৯ জন ধর্ষণের শিকার হয়েছে। তবে অপহরণ করে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনা সাম্প্রতিক সময়ে অনেক বেড়েছে। এসব অপরাধ কেবল তখনই দমন করা সম্ভব, যখন দেশের নারী নির্যাতন-সংশ্লিষ্ট সব আইনের কঠোর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।

Bootstrap Image Preview