তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা পুত্র বধু আঁখি বোসকে লালসার শিকার বানাতে চেয়েছিলেন শ্বশুর। এ নিয়ে প্রতিবাদও করেছিলেন আঁখি। এরই প্রেক্ষিতে গত মঙ্গলবার(১২ ফেব্রুয়ারি) আঁখিকে হত্যার পর মরদেহ ঝুলিয়ে দিয়ে আত্মহত্যা বলে প্রচার করতে শুরু করে শ্বশুর-শাশুড়ি।
আজ বুধবার(১৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এসব কথা জানান আঁখি বোসের মা জোছনা বসু। সংবাদ সন্মেলনে জোছনা বসু বলেন, প্রতিবেশী বখাটেদের অত্যাচারের কারণে মেয়েকে কম বয়সে বিয়ে দিয়েছিলাম, এভাবে মেয়েটার প্রাণ চলে যাবে ভাবতে পারিনি। এজন্য শাস্তি চাই আঁখির শ্বশুর সন্তোষ বোস, শাশুড়ি অশোকা রানী বোস ও ছেলে অরুপ কুমার বোসের।
সংবাদ সম্মেলনে গৃহবধূ আঁখি বোসের বাবা যশোরের কেশবপুর উপজেলার স্কুলশিক্ষক গোবিন্দ চন্দ্র বসু বলেন, ২০১৭ সালে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ব্রহ্মরাজপুর এলাকার সন্তোষ বোসের ছেলে অরুপ বোসের সঙ্গে মেয়ে আঁখি বোসকে বিয়ে দেই। বিয়ের সময় স্বর্ণ ও নগদ টাকা দেয়ার পরও অরুপ যৌতুকের টাকা দাবি করে। টাকা দিতে না পারায় মেয়ের ওপর নির্যাতন শুরু করে অরুপ।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, এমনকি অরুপের বাবা সন্তোষ বোস ছেলের বউ আঁখিকে কুপ্রস্তাব দিতো। এতে আপত্তি করায় সোমবার রাতের কোনো এক সময় আঁখিকে হত্যা করে মরদেহ ঘরের ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে দেয়। বাড়ির লোকজন ঘরে তালা ঝুলিয়ে নিজেদের পাসপোর্ট ও লাগেজ নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। পরে গ্রামবাসী তাদের অবরুদ্ধ করে পুলিশে খবর দেয়। তখন আঁখির শ্বশুর সন্তোষ বোস, শাশুড়ি অশোকা রানী বোস ও স্বামী অরুপ বোসকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের নামে আমি হত্যা মামলা দিয়েছি। আমি আমার মেয়েকে হত্যার বিচার চাই।
সংবাদ সম্মেলনে আঁখি বোসের স্বজন প্রতিমা হালদার, অর্চনা বিশ্বাস, পার্থ বিশ্বাস, প্রতিবেশী গোপাল চন্দ্রসহ আরও অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।
সাতক্ষীরা সদর থানা পুলিশের ওসি মোস্তাফিজুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, মেয়েটির পরিবারের অভিযোগে মামলা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করা হচ্ছে। এটি হত্যা না আত্মহত্যা এখনো নিশ্চিত নয়। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর বিস্তারিত জানা যাবে।
এর আগে বুধবার বেলা ১১টার দিকে সদরের ব্রহ্মরাজপুর এলাকার ঘরের মধ্যে সিলিং ফ্যানে ঝুলন্ত অবস্থায় আঁখি বোসের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় আঁখির শ্বশুর-শাশুড়ি স্বামীকে গ্রেফতার করে পুলিশ।